১.
কেমন গেরস্থ বউ তুমি অভুক্ত রয় মুসাফির
তোমার ঘরে অঢেল মজুত রসের পায়েস কোরমা ক্ষীর
জাত গেল জাত গেল বলে নাচুক পাড়া অহর্নিশ
বিষ্ণু স্বয়ং গৃহে তোমার তুমি কেন হও অস্থির?
২.
এখনো তো পাত্র আমার হয়নি খালি ঘৃতচি
আলোপুষ্প মেলেনি চোখ ভোর এখনো খুব কচি
কাছে এসে ওষ্ঠ নাভি মুক্ত করো উর্বশী
দ্রাক্ষারসে ডুব দিয়ে দুই সৃষ্টিমূলের পদ রচি।
৩.
সেজদাতে রোজ তসবিহ ভুলে তোমারই নাম জপ করি
তখন আমার কাল-মহাকাল হিসাব রাখে কোন ঘড়ি
ঝিলিক মারে সেজদাতে নুর হারিয়ে যায় মুহূর্তেই
কোথায় তুমি লুকিয়েছ অপার্থিব সুন্দরী?
৪.
হেদার গ্রামে জন্মেছিল কাদামাখা মাটির ফুল
গোল ভূগোলে বইছে সুবাস, রহস্যময় এ-বর্তুল
তিন দশমিক দুই মিলিয়ন বছর গেল পার হয়ে
সেই ফুলের এক পরাগরেণু বাংলাদেশের জহিরুল।
৫.
ভাষ-বাগানে ফোটাই আমি মাত্রা এবং ছন্দফুল
মাংসে ফোটা লাল-গোলাপে কখনো হইনি মশগুল
হয়তো আমি ভুল করেছি ভুলই ছিল নিয়তি
এমন ভুলে আর হবে কি অন্য আরেক জহিরুল?
৬.
ফুঁ দিয়ে ছাদ উড়িয়েছি আকাশের ওই উচ্চে
কোন গৃহে রাত কাটে আমার তবু ওরা খুঁজছে
কোন দেয়ালে আটকাবে মন, কোথায় এমন মায়া?
ময়ূর সেজে কাকেরা সব পেখম পরে পুচ্ছে।
৭.
কোথায় এমন উঁচু পাহাড় পা রাখিনি আমি
এমন ছোট কোথায় আছে যার চে’ আমি দামি?
তুমি, আমি সমান্তরাল, এক উঁচুতে বাহু
আদাব, সালাম এই পৃথিবীর মূর্খতা, ভণ্ডামি।
৮.
হাঁটতে হাঁটতে একটা ঘন জঙ্গলে রাত হলো
কুমির ভরা ভয়ের নদী, বিষমাখা সেই জলও
ডানে-বাঁয়ে শ্বাপদ হাঁটে, ভূজঙ্গেরা গাছে
কোথায় বাতি পথ দেখাবে কিছুটা উজ্জ্বলও।
৯.
‘মিথুনাদেকামবধি’ উচ্চারিল বাল্মীকি
এ-অগ্নি কি বুকের ভেতর জ্বলছিল না ধিকধিকি?
রত্নাকরের বুকে ঘুমায় লক্ষ বছর কোন বারুদ?
হঠাৎ জ্বলে ইগ্নিশনে আগুন ছিল ঠিকঠিকই।
১০.
পিঠে আমার হিরের বোঝা কিন্তু খোলার সাধ্য নেই
অন্ধকারে ঝিলিক মারে আনন্দ পাই চমকেই
বোঝার ভারে কুঁজো হয়ে পড়ছি নুয়ে কার পায়ে?
সারা জীবন হাবুডুবু জটিল জলের রহস্যেই।