Thikana News
২১ নভেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

সমুজ্জ্বল ঠিকানা

সমুজ্জ্বল ঠিকানা
শুরুতেই সাপ্তাহিক ঠিকানার ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জানাই অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। প্রবাসে প্রথম থেকেই এত দীর্ঘ সময় একটি বাংলা পত্রিকাকে পাঠকসমাজের মধ্যে শীর্ষস্থান ধরে রাখা সহজ কাজ নয়। নিউইয়র্কে আসার শুরু থেকেই শুনে এসেছি অনেকগুলো বাংলা পত্রিকার মধ্যে পাঠকপ্রিয়তায় ঠিকানাই প্রধান স্থান দখল করে আছে। বিশেষ করে, কমিউনিটির খবর কিংবা অন্য কোনো তথ্য জানতে হলে সবার আগে মানুষ ঠিকানার কথা উল্লেখ করে। ইংরেজি কম জানা বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে নানা কারণে ঠিকানা হয়ে ওঠে প্রধান অবলম্বন। প্রয়োজনীয় সংগঠন, সংস্থা, সেবা ইত্যাদির খোঁজখবরের জন্য ঠিকানার রয়েছে একচেটিয়া প্রাধান্য। বিভিন্নধর্মী লেখা এবং নিরপেক্ষ কিংবা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য একটি পত্রিকা পাঠকসমাজে সমাদৃত হয়। পাঠকসমাজ যে পত্রিকাকে গ্রহণ করে, সেই পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও থাকে বেশি। কারণ মানুষ চায় প্রচারিত তথ্য অধিক মানুষের কাছে পৌঁছে যাক। বিজ্ঞাপনের সংখ্যাই বলে দেয় পত্রিকাটি কতটা জনপ্রিয়। আমি নিজেও বাসা ভাড়া নেওয়া কিংবা দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার ঠিকানার শরণাপন্ন হয়েছি। এভাবে আমার মতো বহু মানুষ কিছু জানার জন্য কিংবা কমিউনিটির সংবাদ পাওয়ার জন্য ঠিকানা পত্রিকার কাছে ছুটে যায়।
পত্রিকা মূলত সমাজের দর্পণ। চলমান সমাজে যা ঘটে, তা পত্রিকার পাতায় উঠে আসে। আমরা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার সঙ্গে পত্রিকার চোখ দিয়েও সমাজকে দেখি এবং প্রয়োজনীয় বিষয়টি গ্রহণ করি। সে জন্য পত্রিকা আমাদের শিক্ষকও বটে! তাই একটি সুষ্ঠু নীতিমালা-সংক্রান্ত পত্রিকা সমাজের আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। এ ধরনের পত্রিকা সমাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৩৫-৪০ বছর আগে আমাদের দেশের মানুষ এ দেশে অভিবাসী হিসেবে আসতে শুরু করে। সেই সময়ে নিজ ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা যেমন কম ছিল, ঠিক তেমনি তথ্য জানারও সুযোগ কম ছিল। আজকের মতো এমন অবাধ তথ্যপ্রবাহ ছিল না। ভিন্ন পরিবেশে ও পরিস্থিতিতে ঠিকানা সেই সময়ে নতুন অভিবাসীদের কাছে আলোকবর্তিকার মতো কাজ করেছে। এ দেশটা এবং এ দেশের মূল সমাজব্যবস্থাকে চেনার জন্য, স্কুল- কলেজ, অফিস-আদালত, কাজ-কর্ম, ব্যবসা-বাণিজ্য, আইন-আদালত ইত্যাদি বিষয়ে যথাযথ তথ্য উপস্থাপন করে অভিবাসীদের সহযোগিতা করে গিয়েছে ঠিকানা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আজও ঠিকানার সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ঠিকানা পেশাগত দায়িত্ব পালনের ভেতর দিয়ে দেশ ও প্রবাসের সেতুবন্ধ রচনা করে যাচ্ছে।
এ দেশে অনেক ইংরেজি পত্রিকা আছে। কিন্তু তাতে আমাদের দেশের খবর কিংবা কমিউনিটির খবর থাকে না। নিজেদের খবর জানার পাশাপাশি নানা বিষয়ের লেখাপড়ার জন্য আমরা তৃষ্ণার্ত থাকি। নিজের ভাষায় যখন নিজেদের খবর কিংবা তথ্য পাই, তখন নিঃসন্দেহে তৃপ্তি বোধ করি। এভাবেই ভিনদেশে নানা বিষয়ে ঠিকানার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছি। সুখ-দুঃখ নিয়ে আমাদের অভিবাসী সমাজ বিনির্মাণে ঠিকানার ভূমিকা অনস্বীকার্য। ঠিকানায় বিষয়ভিত্তিক প্রচুর লেখা ছাপা হয়। শ্রেণিবিন্যাস না করে সব ধরনের পাঠকের জন্য লেখা ছাপানোর একটি বিরামহীন প্রচেষ্টা লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন লেখকের লেখায় থাকে বিভিন্ন বিষয়, যেখান থেকে ভাগ্য পরিবর্তনের দিকনির্দেশনা খুঁজে পাওয়া যায়। এভাবে প্রতিনিয়ত পাঠকেরা পত্রিকাটি থেকে উপকৃত হচ্ছেন এবং দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগাচ্ছেন। তাই এ কথা বলতেই হয়, পত্রিকা মানুষের জীবনকে সহজ করে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ঠিকানার অসামান্য অবদান আছে। দক্ষ ব্যবস্থাপনায় ঠিকানা তার আপন মহিমায় সমুজ্জ্বল থাকুক। প্রতিনিয়ত উন্নতির শিখরে আরোহণ করুক।
লেখক : কথাশিল্পী
কমেন্ট বক্স