৩৩ বছর পার করে ৩৪ বছরে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশের বাইরে সর্বাধিক প্রচারিত ও পাঠকনন্দিত পত্রিকা ঠিকানা। একুশে ফেব্রুয়ারিতে পা রেখেছে ৩৪ বছরে। ১৯৯০-এর সুপ্রভাতে আত্মপ্রকাশ ঘটে ঠিকানার। জন্মের সেই শুভলগ্নেই যে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল ঠিকানা, ৩৩ বছরের চলার পথে অনেক প্রতিকূলতা সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, ঠিকানা কখনো থমকে দাঁড়ায়নি, পথ হারায়নি। করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছিল সবার জীবন। করোনার তাণ্ডবে বিপর্যস্ত পৃথিবী তার পরও থেমে যায়নি। কোভিড-১৯ গোটা পৃথিবীর জন্য এক মহামারি। ঠিকানা সেই সময় দেশ থেকে বিদেশের দক্ষ সাংবাদিকদের সকল সঠিক তথ্য দিয়ে, সাহায্য দিয়ে জাতির পাশে ছিল। ঠিকানা শুধু পত্রিকা নয়, সবার বন্ধু।
২০২২ সালে মনে রাখার মতো ঘটনা সিলেটের বন্যা। মানুষ, গাছপালা, পশুপাখি, পরিবেশ-প্রতিবেশ, নদীনালা, খালবিল ভয়াবহ বন্যায় এক হয়ে গিয়েছিল। খাদ্য ও পানির অভাবে মানুষের জীবন ছিল বিপর্যস্ত। সেই সময় ঠিকানার চেয়ারম্যান এম এম শাহীন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে সিলেটের ভয়াবহ বন্যায় পানিতে ভেসে যাওয়া সব ধরনের মানুষের পাশে থেকেছেন। নানান ঘটনার মধ্যেও ঠিকানা পত্রিকা জন্মের প্রতিশ্রুতি থেকে কখনো সরে আসেনি। প্রবাসে বাঙালি কমিউনিটিতে ঠিকানা মানে নিজ ঘরের পত্রিকার মান পায়। নিজ পকেটের পয়সা ব্যয় করে ঠিকানা সামনে এগিয়ে গেছে। তাই সততা ঠিকানার মূল উদ্যেশ্য। সম্মানিত পাঠক, পৃষ্ঠপোষক এবং প্রতিশ্রুতিশীল কমিউনিটির সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা, ভালোবাসা ও শুভকামনা সঙ্গী করে সমানতালে এগিয়ে চলেছে আজও। ভবিষ্যতেও একইভাবে চলবে-এই প্রত্যাশা।
৩৪ বর্ষে পদার্পণে ঠিকানার সম্মানিত সকল পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ীসহ প্রবাস ও স্বদেশের সকল ভাষাভাষীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
বস্তুনিষ্ঠ ও সৃজনশীল খবর ছাপিয়ে ৩৩তম বর্ষ অতিবাহিত করে প্রমাণ করেছে ঠিকানা আমেরিকার বিখ্যাত একটি পত্রিকা। সব ধরনের মানুষের কাছে ঠিকানা এমন একটি ঐতিহ্য নিয়ে উপস্থিত হয় প্রতি সপ্তাহে, যার কারণে সবার পত্রিকা পড়ার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। পাঠকনন্দিত সাপ্তাহিক ঠিকানা আমার/আপনার সত্যিকারের বস্তুনিষ্ঠ, সৃজনশীল, সৎ ও নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যম। প্রবাসে ঠিকানা আমাদের সবার কাছে গৌরব আর মর্যাদার। যে পত্রিকা কমিউনিটির ধনী-দরিদ্র সবাইকে একই পাল্লায় মাপে, কমিউনিটির সমস্যায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
এটি একটি জাদুকরি পত্রিকা বটে! সবকিছুর মধ্যে সততার কারণে পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপন, ব্যবসা, কবিতা, কলাম, গল্প ঠিকানাতেই জনসাধারণ খুঁজে নেয়। ঠিকানা দেখে কেউ হাতে নিয়ে পড়বে না, এমন হয় না। আমেরিকার সব পত্রিকার মাঝে ঠিকানা যেন এক সত্যিকারের পত্রিকা। ঠিকানা আমাদের বাঙালির (বাকি অংশ
সঠিক বাংলা ভাষার পত্রিকা। স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস, কলাম, কবিতা, গল্প আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে ঠিকানা।
নতুন প্রজন্ম স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে পারে ঠিকানার সঠিক লেখকদের কলমে। প্রতি সংখ্যায় ঠিকানা তৈরি করেছে নতুন লেখক ও কবি। ঠিকানায় শুধু নামকরা লেখকেরা স্থান পান না, নতুনদের লেখাও ছাপা হয়। ঠিকানার মতো এমন পত্রিকা আর নেই। ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সংখ্যার জন্য আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা। ঠিকানা এভাবেই ভবিষ্যতে এগিয়ে যাবে তার সুনাম আর নিষ্ঠার সঙ্গে।
লেখক : কবি ও সাহিত্যিক
