Thikana News
২২ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ উন্নয়নে ঢাকায় তিনদিনের সম্মেলন ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ

জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ উন্নয়নে ঢাকায় তিনদিনের সম্মেলন ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ



 

ইন্টারন্যাশনাল পারস্পেকটিভ অন ওয়াটার রিসোর্সেস অ্যান্ড দি এনভায়র্নমেন্ট (IPWE) কনফারেন্সের প্রস্তুতি পর্যালোচনার জন্য সম্মেলনের চেয়ারম্যান হিসেবে গত ১ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছলাম। ২০০৬ সাল থেকে আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (ASCE)-এর এনভায়র্নমেন্টাল ওয়াটার রিসার্চ ইনস্টিটিউট (EWRI) বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে এই সম্মেলনটি আয়োজন করে আসছে। এ পর্যন্ত ১০টি দেশে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রতিটি অনুষ্ঠানে আমি বক্তা, মডারেটর ও সেশন চেয়ার হিসেবে যোগদান করেছি। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে একাদশ সম্মেলনটি ঢাকায় করার জন্য EWRI-কে রাজি করেছিলাম। জানুয়ারি ৪, ৫ ও ৬ তারিখে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম পর্ব প্লেনারি সেশনে আমি চেয়ারম্যান হিসেব স্বাগতিক বক্তব্য রাখি। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক কি-নোট বক্তব্য রাখেন ASCE-এর প্রেসিডেন্ট মারিয়া লেহ্ম্যান। অন্য যারা সৌজন্য বক্তব্য রাখেন, তারা হলেন- EWRI-এর প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ড. সার্লি ক্লার্ক, বুয়েটের উপাচার্য ড. সত্যপ্রকাশ মজুমদার, EWRI-এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ব্রায়ান পারসন্স, IWFM-এর ড. সাইফুল ইসলাম। সবশেষে প্রধান অতিথির ভাষণ ভিডিওর মাধ্যমে প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিওটি উপস্থাপনা করেন আমার বিশিষ্ট বন্ধু ড. শহীদ হোসেন, যিনি সম্প্রতি সচিব মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর স্পেশাল অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে যোগদান করেছেন। দ্বিতীয় পর্বটি ছিল খুবই অভিনব। কোভিডের জন্য সব সম্মেলন ভার্চুয়ালি হচ্ছিল, যা অংশগ্রহণকারীদের পছন্দের ছিল।

এই দু’সমস্যার সমাধান হিসেবে আমরা সর্বপ্রথম হাইব্রিড সামিট অথবা গোলটেবিল আলোচনার সূত্রপাত করি। প্রথম সামিটটি অনুষ্ঠিত হয় ASCE-এর হেডকোয়ার্টার্স রেস্টন, ভার্জিনিয়ায়। বিশ্ববিখ্যাত বক্তারা কতিপয় আমন্ত্রিত অতিথির মাঝে তাঁদের বক্তব্য রেখেছেন, যা কিনা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে বিশ্বব্যাপী।

দ্বিতীয় দিনের গোলটেবিল আলোচনা সম্প্রচারিত হয়েছিল হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুম থেকে। ঢাকার গোলটেবিল বৈঠকে আমরা তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। প্রথমটি বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান ২১০০, যার মূলবক্তা ছিলেন গিয়াসউদ্দিন আহমদ এবং প্যানেলিস্টরা ছিলেন নেদারল্যান্ড থেকে আমার সহকর্মী পিট ডারকে এবং নেদারল্যান্ড অ্যাম্বাসির ড. শিবলী।

এরপরে আমরা আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে আলোচনা করি, যার মূলবক্তা ছিলাম আমি নিজে। প্যানেলিস্টদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মা ব্রিজের ডাইরেক্টর ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম, উপদেষ্টা কমিটির চেয়ার‌্যান ড. শামীম বসুনিয়া এবং প্রকল্পের চিফ ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট জন ইভেস। এই গোলটেবিলের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ASCE-এর প্রেসিডেন্ট মারিয়া লেহম্যান প্রজেক্ট ডাইরেক্টর শফিকুল ইসলামের হাতে পদ্মা ব্রিজের স্বীকৃতি স্বরূপ একটি প্রক্লেমেশন তুলে দেন।

সর্বশেষ বিষয়টি ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং এর প্রধান বক্তা ছিলেন ড. আইনুন নিশাত।
তৃতীয় পর্বে আমরা পৃথিবীর বিশিষ্ট এক্সপার্টদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম চারটি বিষয়ের উপর বক্তব্য রাখার জন্য। প্রথম বক্তব্যটি ছিলÑ বাংলাদেশের নদীগুলোর পাড় সংরক্ষণের উপর। এখানে উল্লেখ্য যে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপদেষ্টা হিসেবে নদীরপাড় সংরক্ষণের জন্য একটি অভিনব পদ্ধতির প্রবর্তন করি, যাকে বলা হয় ‘আর্টিকুলেটেড কংক্রিট ব্লক’। এই পদ্ধতিতে আলাদা আলাদা কংক্রিট ব্লকগুলোকে পলিথিন রোপ দিয়ে কাঁথার মতো সেলাই করে ম্যাট্রেস তৈরি করে নদীর পাড়ে বিছিয়ে দেয়া হয়। এই পদ্ধতিতে মিসিসিপি নদীর পাড় সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই পদ্ধতির বাণিজ্যিক নাম ‘ফেল্কেস ম্যাট’।

ফেল্কেস ম্যাটের নির্মাতা ডেভিড ম্যাকলিন এই নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে মূল বক্তব্য রাখেন এবং LGRD মন্ত্রী তাজুল ইসলাম সেশন চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় বক্তব্যটি ছিল পানিসম্পদ উন্নয়নের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। এ বিষয়ে মূলবক্তা ছিলেন ড. কামাল লাকসিরি, যিনি ASCE Region 10-এর গভর্নর।

তৃতীয় বক্তব্যটি ছিল, পারমাণবিক শক্তি ও পরিবেশের উপর। মূলবক্তা ছিলেন পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরমাণু বর্জ্য ব্যভস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. চৈতন্যময় গাঙ্গুলি। ড. গাঙ্গুলির আদি নিবাস বাংলাদেশের মাগুরায় হলেও তার কর্মজীবন কেটেছে জার্মানি এবং ভিয়েনায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান সেসন চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

চতুর্থ এবং শেষ বক্তব্যটি ছিল আকস্মিক বন্যার (ফ্লাশ ফ্লাড) উপর। সিলেটের হাওর অঞ্চল এবং সিলেট শহরে গত বছর আকস্মিক বন্যার জন্য অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই বিষয়ে মূল বক্তব্য রাখেন জার্মানির বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ ড. একহাড হেলস্বেকা।
এই সম্মেলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্ব ছিল তিন দিনব্যাপী ২৪টি প্যারালাল সেশনে ১৮টি বিষয়ে ১৪০টি প্রবন্ধ পরিবেশন। এই পর্বে ২১টি দেশ থেকে বক্তারা অংশগ্রহণ করেন। এত বিশাল আয়োজন এর আগে বাংলাদেশে হয়েছে কি-না, তা বলা কঠিন!
সর্বশেষ পর্বে অবশ্য ছিল বিরাট নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এখানেও ছিল বিশেষ ব্যতিক্রম। বাংলাদেশের সৃষ্টিকে বিদেশিদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আমরা একটি নৃত্যনাট্যের ব্যবস্থা করি, যাতে ছিলÑ সাঁপুড়ে নৃত্য, নৌকা বাইচ, নবান্ন উৎসব, বাংলাদেশের ঢোল, ক্লাসিক্যাল মণিপুর নৃত্য ও সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধের উপর নৃত্য নকশা। সবাই অনুষ্ঠানটি খুব উপভোগ করেছেন।

নতুন প্রজন্মের জন্য সবার শেষে ছিল বাংলাদেশের বিটলস নামে খ্যাত ব্যান্ড মাইলস। মাইলস ইংরেজি ও বাংলা মিলিয়ে অনেকগুলো সংগীত পরিবেশন করেছে। সেই সঙ্গে উপস্থিত তরুণ-তরুণীরা ব্যান্ডের তালে তালে নৃত্য করে সবাইকে মুগ্ধ করেছে।
পরদিন বিদেশিদের বিদায় দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উপস্থিত হলাম আমি, প্রফেসর গাঙ্গুলি ও ড. শহীদ হোসেন। ৮ জানুয়ারি বিকেলে রেডিও অ্যাক্টিভ ওয়েস্ট-এর উপর খুব জ্ঞানগম্ভীর বক্তৃতা করেন ড. গাঙ্গুলি। পরদিন সকালে আমি রূপপুর ইন্টেক ডিজাইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরলাম এবং সরেজমিনে ইন্টেক ও জেটি’র সাম্প্রতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করলাম।

পথে আমাদের গ্রামের বাড়িতে আরও দু’দিন কাটিয়ে ঢাকা পৌঁছলাম জানুয়ারির ১১ তারিখে। ১৩ জানুয়ারি ছিল বুয়েট অ্যালামনাইর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। বুয়েটের মাঠে বিরাট সামিয়ানা খাটিয়ে এক বিশাল আয়োজন। প্রায় তিন হাজার ইঞ্জিনিয়ার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বিশাল সমাবেশ। এই উপলক্ষে একটি সুন্দর স্যুভেনিয়র বের করা হয়েছিল, ‘এসো মিলি প্রাণে প্রাণে।’ এই স্যুভেনিয়রে ‘সুপার অ্যাচিভার-বুয়েট অ্যালামনাই’ হিসেবে আমার সংক্ষিপ্ত জীবনী ছাপা হয়।
১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর প্রাইভেট সেক্রেটারি মিস মনিরা ড. শহীদ হোসেনকে জানালেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল আমাদের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হয়েছেন।

পরদিন সকালে কোভিড টেস্ট করিয়ে, সবুজ ও লাল ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যখন রেড জোনের ওয়েটিং রুমে পৌঁছলাম, তখন বেলা এগারোটা। ওয়েটিংরুমে বাংলাদেশের অনেক হোমরা-চোমরা ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তাঁদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য সালমান এফ রহমান।
বেলা একটার দিকে আমাদের ডাক পড়লো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী মাস্ক পরা অবস্থায় আমাদের আমন্ত্রণ জানালেন। রুমটি বেশ পরিপাটি করে সাজানো। একপাশে দৈনিক পত্রিকাগুলো স্ট্যাক করে রাখা, অপরদিকে বড় একটা মনিটর এবং টেবিলের মাঝখানে বড় একটি ডেস্ক ক্যালেন্ডার। ড. শহীদ আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার পর তিনি সম্মেলন সম্বন্ধে জানতে চাইলেন, বিশেষত এ সম্মেলন থেকে আমরা কি পেলাম।
এই সম্মেলনে আমাদের প্রাপ্তি অনেক। প্রথমত, ASCE-এর প্রেসিডেন্ট মারিয়া লেহম্যান পদ্মা সেতুকে একটি প্রক্লেমেশন দিয়েছেন। বুয়েটের সাথে একটি LOI (Letter of Intent) স্বাক্ষর করেছেন, যাতে ১৮টি বিষয়ে সহযোগিতার উল্লেখ আছে। ASCE বুয়েটে একটি Student Chapter খুলেছে, যাতে সরাসরি সহযোগিতার সুযোগ ঘটলো। ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (IEB)-এর সাথে ASCE-এর চুক্তি নবায়ন হয়েছে এবং সর্বোপরি এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্মান অনেক বেড়ে গেছে, বললাম আমি।

প্রধানমন্ত্রী আমার বক্তব্যে খুব সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন এবং আমাদের আলোচনার ধারা অন্যান্য বিষয়ে প্রসারিত হলো।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপদেষ্টা হিসেবে নদীর পাড় সংরক্ষণের জন্য যে অভিনব আর্টিকুলেটেড কংক্রিট ব্লক সম্বন্ধে জানতে চাইলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন আমরা জিওটেক্সটাইল ব্যবহার করেছি কিনা।

অবশ্যই, বললাম আমি। প্রধানমন্ত্রীর এই সূক্ষ্ম প্রশ্নে সত্যিই খুব আশ্চর্য হলাম।
একটু হেসে প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্বন্ধে বললেন, আমিই ড. মিজানকে (ড. ওয়াজেদ মিয়ার ভাগ্নে) বলেছিলাম দ্বিতীয় কেন্দ্রটি যেনো দক্ষিণাঞ্চলের কোনো দ্বীপে হয়।
জানি, বললাম আমি। ইতিমধ্যে পাঁচটি দ্বীপের উপর যে প্রাথমিক সমীক্ষা হয়েছে, তা রিভিউ করার সুযোগ আমার হয়েছে।
তবে কি জানেন, এখন আমার ধারণা এই দ্বীপগুলো হয়তো দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য উপযুক্ত নয়। প্রথমত, ফাউন্ডেশন এবং দ্বিতীয়ত দ্বীপগুলোর জনসংখ্যা এত বেড়ে গেছে যে, পুর্নবাসন একটি বিশাল সমস্যা হিসেবে দেখা দেবে। তাই ভাবছি, দ্বিতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আমরা রূপপুরেই করবো, বললেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হয়ে বললাম, এটি সঠিক সিদ্ধান্ত। কেননা ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ট্রান্সমিশন লাইন এবং পর্যাপ্ত জমি থাকায় খরচও অনেক কম হবে।
রূপপুরের প্রথম দু’টি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলে, আমরা দ্বিতীয় কেন্দ্রের কাজ শুরু করবো, জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
এর পরে মংলাবন্দরের নাব্যতা, পায়রা বন্দরের ড্রেজিং এবং প্রধান নদীগুলোর মেইনটেইনেন্স ড্রেজিংয়ের ওপর বিস্তারিত আলোচনা হলো।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানালেন, গড়াই নদীর মুখ ড্রেজিং করে খুলে দিয়েছেন এবং এখন সুন্দরবনের লবণাক্ততা কমে আসছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হয়ে বললাম, এ ব্যাপারে আমি কয়েকটি প্রবন্ধ লিখেছি। জাতিসংঘ স্বীকৃত ন্যাশনাল হেরিটেজ সুন্দরবনকে বাঁচাতে হলে গড়াই নদীকে পুনরুজ্জীবিত করার কোনো বিকল্প নেই।

কথায় কথায় ঘড়ির কাঁটা দেড়টার দিকে। বিদায়ের আগে ড. শহীদ একটা ছবি তোলার অনুরোধ করলেন।
সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কলিং বেল টিপে সিকিউরিটি ডিটেলের একজন মহিলা অফিসারকে দিয়ে কয়েকটি ছবি তুলে দিলেন। ছবিতে অবশ্য মাস্ক পড়েননি।
প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বের হয়েই ছুটলাম এয়ারপোর্টের দিকে। কারণ এদিন দুপুরে বিশ্ব ইজতেমা শেষ হয়েছে এবং মুসল্লিরা সবাই ছুটছেন এয়ারপোর্টের দিকে।

অনেক বাধাবিঘ্ন কাটিয়ে এয়ারপোর্টে পৌঁছলাম বিকাল সাড়ে চারটায়।
বিমানবন্দরে ঢুকতেই একজন অফিসার জিজ্ঞেস করলেন, কি করে আসলেন স্যার?
-কেনো গাড়িতে, তবে অনেকটা সময় লেগেছে!
-আপনি ভাগ্যবান। তাকিয়ে দেখুন রাস্তা-ঘাট এখন বন্ধ। লটবহর নিয়ে এখন সবাই পায়ে হেঁটে আসছেন।
মনে মনে ভাবলাম, সত্যই আমি ভাগ্যবান, নতুবা এই ১৫ দিনের ঝটিকা সফরে এতো সফলতা অর্জন সম্ভব হতো না।

লেখক : বিশ্ববিখ্যাত পানি-বিশেষজ্ঞ ও বহুজাতিক কনসালটিং ফার্ম আরকেডাসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট।

কমেন্ট বক্স