Thikana News
০২ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪
বাইডেন-ট্রাম্প প্রথম বিতর্ক ২৭ জুন

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে গুরুত্ব পাবে মানসিক যোগ্যতা

হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে গুরুত্ব পাবে মানসিক যোগ্যতা
মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ২৭ জুন রাত ৯ টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার) জর্জিয়ার আটলান্টায় প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ও তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এটিই হবে প্রথম বিতর্ক। সিএনএন আয়োজিত ৯০ মিনিটের এই বিতর্কে কোনো শ্রোতা উপস্থিত থাকবেন না। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর বক্তৃতার ক্ষেত্রেও ‘কড়া সময়সীমা’ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। জাতীয় জনমত জরিপ অনুযায়ী উভয় প্রার্থী- বাইডেন (৮১) ও ট্রাম্পের (৭৮) সমর্থন কাছাকাছি। ঘাড়ে-ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলার মতো। তবে নির্বাচনের পাঁচ মাস আগে এখনো অনেক ভোটার অনিশ্চিত তারা কাকে ভোট দেবেন।
জনমত জরিপ বলছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো বিতর্কেও দুই প্রার্থীর লড়াই হবে সমানে সমান। চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্দলীয় প্রার্থী তথা লিবার্টারিয়ান পার্টির নেতা রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র এই বিতর্কে অংশ নিচ্ছেন না। 
গত মে মাসে লিবার্টারিয়ান পার্টির সম্মেলন মঞ্চে ‘আমন্ত্রিত’ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্প ও বাইডেন। কিন্তু এবার এই প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিতে চলেছেন তারা।
বাইডেন বর্তমানে ক্যাম্প ডেভিডে রয়েছেন। তিনি তার সহযোগী তথা প্রাক্তন চিফ অফ স্টাফ রন ক্লেইনের নেতৃত্বে, বিতর্কের প্রস্তুতির দিকে মনোনিবেশ করছেন। ক্লেইন মার্চ মাসে স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন বক্তৃতার প্রস্তুতিতে বাইডেনকে সহায়তা করেছিলেন। বাইডেনের দলের লক্ষ্য- গর্ভপাত ও গণতন্ত্রের মতো ইস্যুতে ট্রাম্পের চরমপন্থী নীতিগুলো তুলে ধরা এবং ট্রাম্পের বিভাজনমূলক নীতির তুলনায় বাইডেনকে একজন স্থিতিশীল ও জ্ঞানী নেতা হিসেবে চিত্রিত করা।
ট্রাম্প ইতিমধ্যে চিরাচরিত প্রস্তুতির পরিবর্তে বাইডেনের বিরুদ্ধে ‘জাতীয় নিরাপত্তায় অবহেলা’, ‘কূটনৈতিক ব্যর্থতা’ এবং ‘আমেরিকার আদি বাসিন্দাদের স্বার্থরক্ষায় অনীহা’- এর মতো বিষয়গুলো বেছে নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিতর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে, যা ভোটারদের দেশের জন্য দুই নেতৃস্থানীয় প্রার্থীর দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা প্রদান করবে।
জনমত সমীক্ষা আভাস দিয়েছে, বাইডেনের তুলনায় সামান্য এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে আটলান্টায় সিএনএন আয়োজিত বিতর্কসভায় বাইডেন তার বক্তৃতায় ট্রাম্পের আমলের করোনা মহামারি সামলাতে ব্যর্থতা, আর্থিক ঘাটতি, ‘স্বৈরতন্ত্র’ ‘মিথ্যাচার’ এবং ক্যাপিটল হিলে হামলার মতো প্রসঙ্গ তুলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে বাইডেনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের প্রচারের প্রধান অস্ত্র হতে পারে মুদ্রাস্ফীতি তথা জিনিসপত্রের উচ্চমূল্য, জাতীয় নিরাপত্তায় অবহেলা, কূটনৈতিক ব্যর্থতা এবং আমেরিকার আদি বাসিন্দাদের স্বার্থরক্ষায় অনীহা। 
৯০ মিনিটের ওই বিতর্কে ট্রাম্প তাঁর ৮১ বছর বয়সী প্রতিদ্বন্দ্বীর মানসিক সক্ষমতা নিয়ে আক্রমণের সুযোগ নেবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্পের বয়সও ৭৮ বছর। তাই বয়স নিয়ে বাইডেনও ট্রাম্পকে খোঁচা দিতে ছাড়েন না। বিতর্কে বাইডেন ফৌজদারি মামলা নিয়ে ট্রাম্পকে আক্রমণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাইডেন আগেই ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন বলে মন্তব্য করেছিলেন।
আরকানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক প্যাট্রিক স্টুয়ার্টের মতে, এই বিতর্ক উভয় প্রার্থীকে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য দেবে বলে মনে হয় না বরং তাদের অনেক চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। 
বিতর্কটি উভয় প্রার্থীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হবে। কারণ দুজনেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য বেশ প্রবীণ প্রার্থী। এটি দুই প্রার্থীর জ্ঞানীয় দক্ষতার একটি অবিশ্বাস্য পরীক্ষা।
এ নিয়ে নিউইয়র্কের বিংহামটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক ডোনাল্ড নিম্যান বলেন, এই বিতর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই বিতর্কে জনগণের পরিচিত দুই প্রার্থী নিজেদের আবার নতুন করে চেনানোর সুযোগ পাবেন। তাদের জনগণ ভালো করেই চেনে কিন্তু গুরুত্ব দিচ্ছে না। 
জো বাইডেন বৃহস্পতিবার রাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ২০২০ নির্বাচনী চক্রের একটি অস্বস্তিকর বিষয় নিয়ে বিতর্ক করবেন এবং আবারও আটলান্টা হবে রাজনৈতিক মহাবিশ্বের কেন্দ্র।
প্রশ্ন হলো দুই প্রার্থী আটলান্টাকে প্রভাবিত করতে পারবেন কিনা, নাকি আটলান্টা তাদের প্রভাবের বাইরে। এই আটলান্টা আমেরিকার রাজনীতিতে সবকিছুকে প্রভাবিত করে।
এ বছর আটলান্টার অতিরিক্ত তাৎপর্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্দলীয় বিতর্ক আয়োজক কমিশন সিপিডি ১৯৮৮ সাল থেকে নির্বাচনে বিতর্কের আয়োজন করে আসছে। এবারও তার অন্যথা হচ্ছে না। আগামী বৃহস্পতিবার প্রথম বিতর্কের আয়োজন করছে সিএনএন। দ্বিতীয় বিতর্কের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর। এবিসি ওই বিতর্কের আয়োজন করবে।
১৯৫৬ সালে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী অ্যাডলাই স্টিভেনসনকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন রিপাবলিকান নেতা ডুইট ডি আইজেনহাওয়ার। সেটা ছিল দেশটির রাজনীতির ইতিহাসে শেষ বারের মতো একই প্রার্থীর দ্বিতীয় বার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা। প্রথম বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও মুখোমুখি হয়েছিলেন স্টিভেনসন এবং আইহেনহাওয়ার। সেটা ছিল ১৯৫২ সালের নির্বাচন। 
 
কমেন্ট বক্স