সিলেটে বাজতে শুরু করেছে নির্বাচনী ডামাডোল। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৎপর হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলেও চলছে নানামুখী প্রস্তুতি। প্রতিদিনই নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের জানান দিচ্ছেন। এতে দু’দলে সমান তালে বাড়ছে ঐক্য এবং মতবিরোধ।
ইতোমধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ আসনে (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও বর্তমান এমপির আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নিজের প্রার্থিতা জানান দিয়েছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুর শাফি চৌধুরী এলিম।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার সিলেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এলিম।
এদিকে, সিলেট-৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে নানা কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডাক্তার এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল। নিজ এলাকায় জনসেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘ অধিবেশনে সফরসঙ্গী হয়েছেন তিনি। এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
অন্যদিকে, বিএনপিতেও চলছে নানা তোড়জোড়। প্রকাশ্যে নির্বাচনে প্রার্থীতা নিয়ে কোনো প্রচারণা না থাকলেও ভেতরে ভেতরে চলছে প্রস্তুতি। অতি সম্প্রতি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত করায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে তাঁকে ঘিরে। আগামী নির্বাচনে সিলেটের যেকোনো আসনে তাঁকে প্রার্থী দেখা যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
বিশেষ করে আরিফুল হক চৌধুরী উপদেষ্টা হওয়ায় সিলেট মহানগরীতে তার বলয়ের নেতাকর্মীরা বেশ উচ্ছ্বসিত। সিটি মেয়রের দায়িত্ব পালনাকালে দলীয় কর্মকাণ্ডে অনেকটাই নিষ্ক্রিয় ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী।
গত সিটি নির্বাচনের আগে তিনি লন্ডন সফর করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে দেখা করে আসেন। দেশে ফিরে ঘোষণা দেন নির্বাচন না করার। জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকা সত্ত্বেও দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় তাকে নিয়ে নেতাকর্মীদের আগ্রহ বেড়ে যায়। এরপর থেকে তিনি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হচ্ছেন এমন গুঞ্জন ছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে উপদেষ্টা হিসেবেই পদোন্নতি দেওয়া হয়।
এদিকে, এতোদিন সিলেটের রাজনীতিতে অনেকটা আধিপত্য বিস্তার করে চলছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদির আহমদ। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটিতে তারই প্রাধান্য ছিল বেশি। কমিটিতে নিজের অনুসারীদের ভালো অবস্থানে জায়গা করে দিতে না পেরে অনেকটা কোনঠাসা ছিলেন আরিফ। এখন আরিফ উপদেষ্টা হওয়ায় মুক্তাদিরের আধিপত্যে টান পড়বে বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও উত্তেজনা বাড়ছে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ‘ভোটের অধিকার আদায়ের যুগপৎ আন্দোলনের এক দফা দাবিতে’ সিলেট বিভাগীয় রোডমার্চ আয়োজন করেছে বিএনপি। একইভাবে আওয়ামী লীগও মাঠে রয়েছে নানা কর্মসূচি নিয়ে। সব মিলিয়ে সিলেটের রাজনীতিতে নির্বাচন নিয়েই চলছে বিভিন্ন সমীকরণ।