Thikana News
২০ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

তৃণমূল বিএনপিতে আসছে নতুন চমক চেয়ারম্যান

শমসের মবিন ♦ মহাসচিব তৈমূর আলম
তৃণমূল বিএনপিতে আসছে নতুন চমক চেয়ারম্যান



 
নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনীতিতে দেখা দিচ্ছে একের পর এক চমক। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির প্রয়াত নেতা নাজমুল হুদার প্রতিষ্ঠিত দল ‘তৃণমূল বিএনপি’তে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিলেন শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকার। শমসের মবিন চৌধুরীকে দলের চেয়ারম্যান এবং তৈমূর আলম খন্দকারকে দলের মহাসচিব করা হয়েছে। তারা দুজনই একসময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একজন দল ছেড়ে চলে গেছেন, অন্যজন বহিষ্কার হয়েছেন। 
দীর্ঘদিন এই দুই নেতার রাজনৈতিক তৎপরতা চোখে পড়েনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তারা সক্রিয় হয়েছেন। বর্ষীয়ান রাজনীতিক ও কূটনীতিক শমসের বিকল্পধারায় যোগ দেওয়ার আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন, দলটির কূটনৈতিক উইংয়ের দায়িত্বও সামাল দিতেন। আর গত নারারণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন করায় বিএনপি থেকে বহিষ্কার হন তৈমূর। ওই সময় তিনি দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তৃণমূল বিএনপি নামে দল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০২৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দলটি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায়। এর তিন দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান নাজমুল হুদা। তার মৃত্যুর পর ১৬ মে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তার মেয়ে ব্যারিস্টার অন্তরা হুদা।
শমসের-তৈমূরের পাশাপাশি দলটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট অন্তরা হুদা নির্বাচিত হয়েছেন এক্সিকিউটিভ চেয়ারপারসন। মোট ২৭ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয় তৃণমূল বিএনপির।
১৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নবনির্বাচিত কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশানুর রহমান এই কমিটি ঘোষণা করেন। সঞ্চালক আক্কাস হন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। দলটির ভাইস চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন কে এ জাহাঙ্গীর মজুমদার, মেজর (অব.) ডা. হাবিবুর রহমান, মোখলেসুর রহমান ফরহাদী, দীপক কুমার পালিত, মেনোয়াল সরকার ও ছালাম মাহমুদ। যুগ্ম মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান, ফয়েজ চৌধুরী, তালুকদার জহিরুল হক ও রোখসানা আমিন সুরমা। কোষাধ্যক্ষ (ভাইস চেয়ারম্যান পদমর্যাদা) নির্বাচিত হয়েছেন শামীম আহসান। সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শাহজাহান সিরাজ (বরিশাল), আকবর খান (চট্টগ্রাম)। এ ছাড়া সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল মোড়ল, দপ্তর সম্পাদক হিসেবে একে সাইদুর রহমান ও মো. রাজু মিয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক কাজী ইব্রাহীম খলিল সবুজ, যুববিষয়ক সম্পাদক শাহাবউদ্দিন ইকবাল, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশানুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক স্থপতি নাজমুস সাকিব, প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক সাগর ঘোষ এবং স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ৩০০ সংসদ সদস্য এই ১৭ কোটি মানুষের নেতৃত্ব দিতে পারবেন? আমি মনে করি, না। আমি মনে করি, আমাদের সংসদ সদস্য অনেক বেশি নির্বাচন করতে হবে। প্রতিটি উপজেলা থেকে একজন সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে হবে। এ ধরনের সুপারিশ তৃণমূলের ইশতেহারে থাকবে।
সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যত পদক্ষেপ নেবে, তাতে তৃণমূল বিএনপির সহযোগিতা থাকবে বলেও উল্লেখ করে শমসের মবিন বলেন, আমরা লগি-বৈঠার হত্যা দেখতে চাই না। বাস-ট্রাক পোড়ানোর সহিংসতাও দেখতে চাই না। সাবেক এই বিএনপির নেতা বলেন, আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। সেটা সম্ভব যদি প্রশাসন নিরপেক্ষ ও পেশাদার ভূমিকা পালন করে। নির্বাচন কমিশন যদি তার ক্ষমতার সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারে। শুধু তাই নয়, আমার ভোট যদি সঠিকভাবে গণনা হয়, তাহলে আগামী সংসদ নির্বাচনের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
অনুষ্ঠানে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমি একটা রাজনৈতিক দল করেছি। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে রাজনীতি করেছি। আজ আমি তার মুক্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। তিনি আরও বলেন, বিএনপি থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কার হওয়ার পর দেড় বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। এই দেড় বছর আমি বিএনপির পতাকা বহন করেছি। আমি মনে করি, আগে যে দল করতাম, সেটার সঙ্গে আদর্শগত ও জাতীয়বাদের মিল রয়েছে তৃণমূল বিএনপির। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। এ জন্য এই দলে এসেছি। দলকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবার সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করছি। এই দল প্রাইভেট কোম্পানির হবে না। এখানে সবার মূল্যায়ন করা হবে।
তৃণমূল বিএনপিতে আসছে আরও চমক : বিএনপি থেকে একঝাঁক নেতা তৃণমূল বিএনপিতে যাচ্ছেন-এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপির ভেতরেই। শুধু কেন্দ্রীয় নেতারা নন, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী নেতারা এমনকি বিভাগীয় জেলা পর্যায়ের নেতারাও তৃণমূল বিএনপিতে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিএনপির মধ্যে যেসব নেতা এখন নিষ্ক্রিয় রয়েছেন, তাদের একটি বিরাট অংশ তৃণমূল বিএনপিতে যেতে পারেন বলে অনেকে ধারণা করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিতে পারেন-এমন গুঞ্জন রয়েছে। বিএনপির ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল সময় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলন তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিতে পারেন-এমন কোথাও শোনা যাচ্ছে। খুলনার বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুও তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন-এমন দাবি করছেন তৃণমূল বিএনপির নেতারা। এ ছাড়া বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমানসহ বেশ কয়েকজন নেতার তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিএনপির মধ্যে যেসব নেতা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে চান এবং এলাকায় যাদের জনপ্রিয়তা আছে, তাদের সঙ্গে তৃণমূল বিএনপি যোগাযোগ করছে। এই সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দেখা গেছে, তারাও স্বীকার করেছেন যে তাদের সঙ্গে এখন যোগাযোগ বাড়ছে।
কমেন্ট বক্স