Thikana News
২০ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

সরকারবিরোধী সব দল হার্ডলাইনে

সরকারবিরোধী সব দল হার্ডলাইনে



 
সরকারের পতন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপিসহ সরকারবিরোধী অন্যান্য সব দল কঠোর কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এত দিন জাতীয়তাবাদ    আদর্শ ও একাধিক ডান-বাম দল বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচিতে থাকলেও জামায়াতসহ ইসলামি দলগুলোকে দেখা যায়নি। এখন থেকে জামায়াতের সঙ্গে অন্যান্য ইসলামপন্থী দলকেও আলাদা ব্যানারে সরকার পতন আন্দোলনে দেখা যাবে। ইতিমধ্যে ইসলামী আন্দোলনসহ একাধিক ইসলামি দল প্রতি শুক্রবার বাদ জুমা কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে যুগপৎ কর্মসূচিতে জামায়াতসহ অন্যান্য দলও একজোট হতে পারে।
ইতিমধ্যে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির লক্ষ্যে এক দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই দিন সমাবেশ ও পদযাত্রাসহ চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতন্ত্রমঞ্চ। এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাস্তবায়নে জামায়াতে ইসলামীও এখন থেকে সিরিজ কর্মসূচি পালন করবে। ১৮ সেপ্টেম্বর তারা ঢাকার পান্থপথে বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আলেমদের মুক্তির দাবিতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত জামায়াতও মাঠে থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বেগম খালেদা জিয়া সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য দল ও জোটকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই থেকে বিএনপি এখন হার্ডলাইনে। দলে যারা নরম সুরের অবস্থানে রয়েছেন, তাদেরকেও বেগম জিয়া তিরস্কৃত করেছেন। সরকারের অচলাবস্থা তৈরি হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন তিনি। দলটির সিনিয়র রাজনীতিবিদেরা খালেদা জিয়ার নির্দেশনাকে ওয়েলকাম জানিয়েছেন। সেই আলোকে জোট নেতারাও কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। এর আগে রোডমার্চ কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব ঘোষণা দিয়েছিলেন, রোডমার্চ তখনই শেষ হবে, যখন সরকারের পতন হবে। তিনি এও বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে সরিয়ে দিতে দেশের সব রাজনৈতিক দল এখন এক হয়ে গেছে।
বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ভাষ্য, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির প্রকাশ্যে দূরত্ব থাকলেও খালেদা জিয়ার নির্দেশ রয়েছে দলটিকে সঙ্গে রেখেই যেন বিএনপি আন্দোলন করে। এখন সবার একই উদ্দেশ্য-সরকার পতন। সেই টার্গেটে বিএনপি সিরিজ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, জামায়াতও মাঠে নেমেছে। সবাই এখন হার্ডলাইনে চলে গেছে। আপাতত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চললেও সেটি হয়তো শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ থাকবে না, সরকারের গতিবিধির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে এবার আর সরকারের সঙ্গে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বিরোধীরা বসবে না আলোচনার টেবিলেও।
বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা জেলার জিঞ্জিরা-কেরানীগঞ্জ এবং গাজীপুরের টঙ্গীতে সমাবেশ। ২১ সেপ্টেম্বর ভৈরব-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার-সিলেটে রোডমার্চ। ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরে যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় সমাবেশ। একই দিন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় বাদ জুমা সারা দেশে জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দোয়া। ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল-ঝালকাঠি-পিরোজপুর-পটুয়াখালীতে রোডমার্চ। ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরে নয়াবাজার ও ঢাকা জেলার আমিন বাজারে সমাবেশ। ২৬ সেপ্টেম্বর খুলনা বিভাগে রোডমার্চ ও ঢাকায় পেশাজীবী কনভেনশন। ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরে গাবতলী ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জনসমাবেশ। ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মহিলা সমাবেশ। ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শ্রমজীবী কনভেনশন। ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জে রোডমার্চ। ২ অক্টোবর ঢাকায় কৃষক সমাবেশ। ৩ অক্টোবর কুমিল্লা, ফেনী ও চট্টগ্রামে রোডমার্চ।
গণতন্ত্র মঞ্চের চার দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৯ সেপ্টেম্বর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা, ২৩ সেপ্টেম্বর কারওয়ান বাজারে পেট্রোবাংলার সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা, ২৫ সেপ্টেম্বর খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা এবং ২৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও পদযাত্রা।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দিন দিন আমাদের আন্দোলন শক্তিশালী হচ্ছে। গণ-আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানের দিকে রূপ নেওয়ার পথেই এগোচ্ছে। এই সরকারের সরে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ অবৈধ পথে ক্ষমতায় এসে এ দেশের জনগণের সব অধিকারকে হরণ করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এই পরিস্থিতিতে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে আনার দাবি শুধু জামায়াতে ইসলামীর নয়, এটি গোটা বাংলাদেশের জনগণের দাবি। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে। জামায়াতে ইসলামী অতীতেও আন্দোলন করে সফল হয়েছে, এবারও সফল হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, সরকার পতনে এখন দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। এই সরকারকে সরে যেতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। সরকার যদি আমাদের ভিন্ন দিকে যেতে বাধ্য করে, আমরা সেদিকেই যাব। সরকারের গতিবিধির ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। আমরা আন্দোলনে নেমেছি। এই সরকারকে হটানো পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
কমেন্ট বক্স