Thikana News
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পবিত্র আশুরা বা ১০ মহররম

পবিত্র আশুরা বা ১০ মহররম
১৯ জুলাই বুধবার সন্ধ্যার সূচনালগ্নে বিশ্ব মুসলিমের জীবন থেকে বিদায় নিয়েছে হিজরি ১৪৪৪ অব্দ এবং শুরু হয়েছে হিজরি ১৪৪৫ অব্দ। সদ্য বিদায়ী ১৪৪৪ অব্দে আমাদের মধ্য থেকে বিশ্বপ্রতিপালকের নির্দেশে অনেকেই ইহলোকের পাট চুকিয়ে অনন্তলোকে পাড়ি জমিয়েছেন। 

অনেকের সংসারে নতুন মুখের আগমন ঘটেছে এবং জগৎজুড়ে রাজ্য-সাম্রাজ্য এবং দানবীয় শত্রুর উত্থান-পতন, ক্ষমতার হাতবদলসহ অসংখ্য কাক্সিক্ষত-অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। তাই হিজরি ১৪৪৫ সালের সূচনালগ্নে বিগত বছরে লোকান্তরিতদের বিদেহী আত্মার চিরপ্রশান্তি কামনা এবং তাদের স্বজনদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। যুগপৎ জগৎ থেকে দানবীয়-অসুরীয় ও পেশিশক্তির সমূল উৎপাটন, মনুষ্যত্ব, মানবতা ও সৌভ্রাতৃত্ববোধের বিকাশ এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে বিশ্ববাসীর জন্য রাব্বুল আলামিনের বিশেষ রহমত কামনা করছি। অধিকন্তু বিগত বছরের যাবতীয় ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে নতুন হিজরি বর্ষে পদার্পণে হায়াতদানের জন্য আমরা বিশ্বপ্রতিপালকের নিকট সকৃতজ্ঞচিত্তে শোকরিয়া আদায় করছি, আলহামদুলিল্লাহ, আমিন!

বিশ্ববিধাতা মহান আল্লাহর নির্দেশে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর পার্থিব জীবনের মক্কা ত্যাগ এবং মদিনা বা ইয়াসরিবে স্থায়ীভাবে বসবাসের ঐতিহাসিক ও পরম তাৎপর্যমণ্ডিত অধ্যায়কে চিরস্মরণীয় করার মানসেই সাহাবিদের পরামর্শক্রমে হিজরি সালের প্রবর্তন করা হয়েছিল এবং মুসলিমবিশ্ব তা অদ্যাবধি অনুকরণ ও অনুসরণ করে। হিজরি সাল মূলত চান্দ্রবর্ষ এবং মহররম মাস দিয়ে গণনা শুরু হয় এবং জিলহজ দিয়ে বছরের পরিসমাপ্তি টানা হয়। সৌর দিবসের সূচনা হয় রাত ১২টা ১ মিনিটে, পক্ষান্তরে হিজরি দিবস গণনা করা হয় পশ্চিমাকাশে চন্দ্রোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে।

আশুরা : আরবি ভাষার আশরা বা দশম শব্দ থেকেই আশুরা শব্দটি উদ্ভূত। বিশ্ব মানবসম্প্রদায়, বিশেষত মুসলমানদের শাশ্বত জীবনবিধান পবিত্র কোরআনে মহররম মাসের দশম তারিখ বা আশুরা দিবসে অসংখ্য ঐতিহাসিক ও অলৌকিক ঘটনা সংঘটিত হওয়ার বর্ণনা রয়েছে। মানুষের চিরশত্রু শয়তানের প্ররোচনা ও প্রলোভনে আদি পিতা হজরত আদম (আ.) ও আদি মাতা বিবি হাওয়া (আ.) নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফলভক্ষণের পর অভিশপ্ত জীবনের গুরুভার নিয়ে বেহেশত থেকে ভূমণ্ডলে নিক্ষিপ্ত হলেন। অনুশোচনাগ্রস্তচিত্তে কয়েকশ বছর কান্নাকাটির পর মহান আল্লাহ তায়ালা ১০ মহররম তাঁদের অপরাধ মার্জনা করেন এবং আরাফার ময়দানে তাঁরা পুনর্মিলিত হন। অপর একটি বর্ণনা অনুসারে, একাধারে ৪০ দিন অবিরাম ভারী বর্ষণ এবং উত্তাল তরঙ্গবিক্ষুব্ধ সাগরের ঊর্মিমালার উল্লম্ফন ১০ মহররম স্তিমিত হয়েছিল এবং হজরত নুহ (আ.) এবং তাঁর অনুসারীদের বহনকারী বিশেষ কিস্তিটি পাহাড়ের কিনারায় ঠেকেছিল। তারপর হজরত নুহ (আ.) ও তাঁর অনুসারীগণ বৃষ্টিবিধৌত ভূখণ্ডে অবতরণ করলেন এবং নতুনভাবে বসতি গড়া শুরু করলেন। 

অপর একটি বর্ণনা অনুসারে, আল্লাহর অস্তিত্ব ও একত্ববাদে অবিশ্বাসী জালেমদের অমানুষিক নির্যাতন এবং নিগ্রহে অতিষ্ঠ হয়ে হজরত ইউনুস (আ.) আল্লাহর সম্মতি ছাড়াই গোপনে স্বদেশ ত্যাগের উদ্দেশ্যে জাহাজে আরোহণ করেছিলেন। ফলে ধরা পড়ায় তাঁকে গভীর সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হলে প্রথমে একটি মাছ তাকে এবং পরে আরেকটি দৈত্যাকার সামুদ্রিক মাছ ইউনুস (আ.)সহ প্রথম মাছটিকে ভক্ষণ করেছিল। দীর্ঘকাল মাছের পেটে থাকার পর দয়াময় আল্লাহ তায়ালার বিশেষ রহমতের বদৌলতে ইউনুস (আ.) ১০ মহররম সমুদ্রের উপকূলীয় চরে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন এবং পুনর্জীবন লাভ করেছিলেন। হজরত মুসা (আ.) এবং তাঁর অনুসারী বনি ইসরাইলের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মিসরের ইতিহাসধিক্কৃত ও খোদাদ্রোহী ফেরাউনের নিষ্ঠুর নির্যাতনের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন ১০ মহররম। অনুসারীদেরসহ হজরত মুসার (আ.) যাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে মহান রাব্বুল আলামিন ঐতিহাসিক রেড সি বা লোহিত সাগরের মধ্যভাগে প্রশস্ত রাস্তা তৈরি করে দিয়েছিলেন। 

আর সসৈন্যে চির অভিশপ্ত ফেরাউনের সলিলসমাধি রচিত হয়েছিল অতলস্পর্শী রেড সি বা লোহিত সাগরে। ৬১ হিজরিতে মুসলিম ইতিহাসের অন্যতম হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পর্শী হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল অবরুদ্ধ ফোরাত নদের উপকূলবর্তী কারবালার প্রান্তরে। হজরত মুহম্মদ (সা.) এর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সাহাবি মুয়াবিয়ার দুশ্চরিত্র, ইন্দ্রিয়পরায়ণ ও লম্পট পুত্র ইয়াজিদের নির্দেশে মহানবী (সা.) এর কনিষ্ঠ দৌহিত্র ইমাম হোসেনকে ৭২ জন সঙ্গী-সাথিসহ নৃশংস ও বর্বরোচিতভাবে খুন করা হয়েছিল ৬১ হিজরির ১০ মহররম। 

স্মর্তব্য, ঊষর কারবালার অবরুদ্ধ মরুপ্রান্তরে নিহতদের সবাই ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর পরিবারের পুরুষ সদস্য। ওই তারিখেই লাখ টাকা পুরস্কারের লোভে পাষণ্ড-পামর সিমার হজরত ফাতিমা (রা.) এর জঠরজাত এবং ইসলামের চতুর্থ খলিফা হজরত আলির (রা.) পরম আদরের ধন এবং বেহেশতে যুবকদের অন্যতম সরদার মুমূর্ষু হজরত হোসাইনের শির মোবারক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে যে নারকীয় ইতিহাসের জন্ম দিয়েছিল, তা বিশ্বমুসলিমকে অদ্যাবধি অশ্রুসিক্ত করে। এই বিয়োগাত্মক হত্যাকাণ্ডের পটভূমিতে প্রতিবছর ১০ মহররম শিয়া ধর্মাবলম্বীরা তাজিয়াসহ শোক মাতম এবং সুন্নি বিশ্বমুসলিম নানাবিধ ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের আয়োজন করে থাকেন। ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে ১০ মহররমের বিভিন্ন ঐতিহাসিক তাৎপর্যমণ্ডিত ঘটনা, বিশেষত কারবালার স্মৃতিচারণা করে বিশ্বমুসলিম অশ্রুসিক্ত ও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এই বিশেষ দিবসে কারবালার ঊষর প্রান্তরে ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্তের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত মহানবী (সা.) এর অসহায় বংশধরদের করুণ কাহিনি পর্যালোচনাকালে হায় হোসাইন হায় হোসাইন আর্ত আহাজারিতে অনেকেই আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে তোলেন।

করণীয় ও বর্জনীয় : পবিত্র হাদিসের বর্ণনা অনুসারে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) পবিত্র রমজানের ফরজ সওমের পর আশুরার সাওমের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। ‘আমি কখনো আশুরা ছাড়া অন্য কোনো দিবসে আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে রোজা পালনের ক্ষেত্রে এত বেশি গুরুত্ব আরোপ করতে দেখিনি।’ (সহি আল-বুখারি)। আশুরার দিবসের রোজা পালনকারীকে এক বছর রোজা পালনকারীর সওয়াব প্রদান করা হবে বলেও আমাদের নবী (সা.) উল্লেখ করেছেন। উল্লেখ্য, আশুরার তারিখে রোজা পালনকারীদের রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করায় তারা বললেন, হে আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ, এই বিশেষ দিবসে ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা পাশবিক নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছিল। 

তখন প্রিয় নবী (সা.) বললেন, আগামী বছর, আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে, আমরা নবম তারিখেও রোজা রাখব। কিন্তু পরের বছর মহানবী (সা.) ইন্তেকাল করেন। (মুসলিম)। প্রিয় নবী (সা.) মহররমের নবম তারিখে রোজা রাখার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন বিধায় ইসলামি বিশেষজ্ঞগণ নবম ও দশম মহররম কিংবা দশম ও একাদশ মহররম রোজা রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) আরও বলেছেন, আশুরার দিবসে যে ব্যক্তি স্বজনদের জন্য উদারহস্তে ব্যয় করে, আল্লাহ তার প্রতি সারা বছর সদয় থাকবেন (বায়হাকি)। আশুরা উপলক্ষে পরিবার-পরিজনের জন্য সাধ্যমতো অর্থব্যয়ের পাশাপাশি অসহায় ও গরিবদের দুর্দশা লাঘবে যথাসাধ্য সদকা ও জাকাত প্রদানের তাগিদ দিয়েছেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। আত্মকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থায় ও আত্মসুখে নিমগ্ন বর্তমান বিশ্বচরাচরে স্বজনদের ভূরিভোজন আয়োজনের পাশাপাশি অসহায়দের দুর্দশা লাঘবে আন্তরিক হলে মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ নতুন মাত্রা পাবে, ইনশা আল্লাহ। পবিত্র আশুরার তারিখে এ ছাড়া কোরআন তেলাওয়াত, নফল সালাত আদায় ও অন্যান্য সকল ইবাদত-বন্দেগির বিশেষ তাগিদ রয়েছে ইসলামি শরিয়তে। তবে অত্যুৎসাহী শিয়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা ধরনের মতভেদ রয়েছে। 

উল্লেখ্য, ইসলামি শরিয়তে বাড়তি ইবাদত-বন্দেগির জন্য যে পাঁচটি দিবস-রজনীর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, আশুরা তার অন্যতম। তবে অন্যান্য বিশেষ দিবসের ইবাদত-বন্দেগি করা হয় রাতে; শুধু আশুরার ইবাদত-বন্দেগি দিবাভাগে করা হয়ে থাকে।

বস্তুত, বর্তমানে ইসলামের মৌলিক আদর্শচ্যুত নামকাওয়াস্তে মুসলমানরা প্রাকৃতিক এবং মনুষ্যসৃষ্ট চরম আজাব-গজবের আকাশ আড়াল করা ঊর্মিমালার তরঙ্গাভিঘাতে হাবুডুবু খাচ্ছে। ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী এবং ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষে ইরান-ইরাক-সিরিয়া-তুরস্কসহ অনেক দেশে মুসলমানদের রক্তের জোয়ার বইছে। আবার স্বার্থের ঘেরাটোপে আচ্ছাদিত বিশ্বচরাচরে শয়তানের প্ররোচনায় কিংবা ব্যক্তি-গোষ্ঠী-পারিবারিক-দলীয় স্বার্থে বর্তমানে জাগতিক মোহাবিষ্ট মুসলমানরা পারলৌকিক পাথেয় সংগ্রহের তুলনায় পার্থিব ভোগ-বিলাসিতা, ক্ষমতার বাহাদুরি এবং পরস্ব হরণকে প্রাধান্য দিচ্ছে। পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকার্জন বা হালাল রোজগারের চেয়ে বাম হাতের লেনদেনের মাধ্যমে অল্প দিনে অর্থবিত্তের পাহাড় গড়ার প্রতিযোগিতার নামে মূলত স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য জাহান্নাম খরিদ করছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের ৯৫ শতাংশই একদা বাংলার সহস্র বছরের কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ এবং স্বজনদের স্নেহসান্নিধ্য ছিন্ন ও করুণাকাতর মুখচ্ছবির মর্মবেদনা বুকে চাপা দিয়ে অনিশ্চিতের উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন। 

দুর্গম-দুর্লঙ্ঘ্য পথপ্রান্তর এবং শ্বাপদসংকুল বনবাদাড় মাড়াতে গিয়ে অনেকেই পথিমধ্যে চিরতরে ঝরে গেছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখা ভাগ্যবান বাংলাদেশিদের কেউ কেউ প্রাকৃতিক বৈরিতা ও হিমাঙ্কের নিচের তাপমাত্রা উপেক্ষা করে উদয়াস্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রমের বিনিময়ে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীদের অনেকেই নিজেদের পোষ্যদেরও শিক্ষা-দীক্ষায় একুশ শতকের চাহিদার উপযোগী করে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে সময়ের অগ্রযাত্রায় সর্বস্তরে এবং সর্বক্ষেত্রে প্রবাসী বাঙালিদের অহেতুক ও অসম প্রতিযোগিতা বর্তমানে প্রতিহিংসায় রূপ নিয়েছে এবং পান থেকে চুন খসে পড়ার মতো তুচ্ছ বাগ্্বিতণ্ডা-মনোমালিন্যকে কেন্দ্র করে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ধর্মীয় বিধিবিধান আমাদের জীবনাচরণ থেকে বহুলাংশে বিদায় নিয়েছে এবং সংসার ভাঙার ঘটনাও আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার প্রবাসজীবনের দায়বদ্ধতার কারণে আমরা অনেকেই কলুর বলদের মতো অহর্নিশ জীবনরথের ঘানি টেনে যাচ্ছি। তাই নিতান্ত সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকের পক্ষেই ধর্মকর্মে ইচ্ছামতো সময় দেওয়ার সুযোগ এবং সংগতি হয় না।

যাহোক, হিজরি ১৪৪৫ সালের সূচনাপর্বে, বিশ্বপ্রতিপালকের নিকট আমাদের কায়মনোবাক্যে আরাধ্য : হে, রাব্বুল আলামিন, তুমি আমাদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর উম্মত হওয়ার তাওফিক দান করে বিশেষভাবে ধন্য করেছ এবং হিজরি ১৪৪৫ বর্ষে পদার্পণের হায়াত দান করে কৃতজ্ঞতার ডোরে বিশেষভাবে আবদ্ধ করেছ। পবিত্র কোরআনের ২৪তম অধ্যায়ের মক্কায় অবতীর্ণ সুরা জুমার ৫৩ নং আয়াতে তুমি বলেছ : লা তাকনাতুম্ মির-রাহমাতিল্লাহে, ইন্নাল্লাহা ইয়াগফেরুজ যুনুবা, ইন্নাহু হুয়াল গাফুরুর রাহিম (আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ অপরাধীদের অপরাধ মার্জনাকারী; বাস্তবিকই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু)। অতএব, হিজরি নববর্ষে আত্মসমালোচনার মাধ্যমে আমাদের আত্মশুদ্ধির সুযোগ করে দাও। অবৈধভাবে সম্পদ আহরণ, পরচর্চা, পরশ্রীকাতরতা, অন্যের প্রতি অহেতুক বিদ্বেষ পোষণ, পার্থিব সম্পদের লোভ-লালসা-মোহ ইত্যাদি পাপাচার থেকে দয়া করে আমাদের মুক্তি দাও! ইহকালীন ধন-সম্পদ আহরণের চেয়ে পরকালীন পাথেয় সঞ্চয়ের মনোভাব আমাদের অন্তরে জাগ্রত করো। পেশি ও দানবীয় বা অসুরীয় শক্তির পতন ঘটিয়ে বিশ্বজুড়ে শান্তির মৃদুমন্দ মলয় বইয়ে দাও। আমিন!

লেখক : সহযোগী সম্পাদক, ঠিকানা, নিউইয়র্ক। ২৫ জুলাই ২০২৩
কমেন্ট বক্স



9