কত প্রলাপ শুনেছি এই বাটে
ঝাউয়ের ঝনঝন পবন প্রহরায়,
ছিপ ফেলেছি জলে, ঘাসমাখা ঘাটে,
ফেলে আসা শৈশব, সেই আঙিনায়।
পানকৌরীর ডুবসাঁতারে আনন্দ ছড়ায়,
শিশুমন ঠায় দাঁড়িয়ে অধীর অপেক্ষায়।
কোথা থেকে দেয় ডুব, কোথায় লুকায়,
ঝোপঝাড় মাখা রূপ, সবুজ বাংলায়।
পাব কি ফিরে, বুকে লালিত মেঠো পথ?
শাপলা, শালুক, শিমুলঝরা মহুয়া বন,
নেড়ে কুকুরের পথহারা ফেরা রথ।
সুরহারা সুর, বেদের দলের বীণ।
লঙ্কা ফুলের মতো দুলছে কানে দুল,
নিমা পরা পেট, কৃষ্ণমাখা গায়ে।
কাকডাকা ভোরে কিশোরীর ডালায় ফুল।
শিশিরভেজা পথ, শিউলি পাতা পায়ে।
পুজোর থালায় পদ্মপাতায় লক্ষ্মী ঘুমায়,
আঁচলঢাকা শান্তি মায়ের মুখ।
শত খুশি, আনন্দ পল্লব পাতায়,
একা আঙিনায়, তুলসী ফাটায় বুক।
আর কি হবে, নগ্ন পায়ে হাঁটা,
চলার পথে তরুর কষ্ট বাটা।
জীবন চলেছে, জীবনের গতিতে দ্রুত,
রেশমি রঙিন উল্লাসে জীবন শোকাহত।
মনের হিসাব মেলাতে, সদা অবেলায়,
সমাজ-সংসার নাম-যশে উদ্ধত।
কাঁদে প্রাণ প্রাতে, বাসন্তীর সন্ধ্যায়,
হৃদয় ব্যাকুলতা ঢাকি, সমাজ সংযত।
চাওয়া-পাওয়ার নির্মম কশাঘাতে,
প্রবাস-জীবন বন্দী, বড় অসহায়।
বনবাস আর পরবাস, সুখ নেই তাতে,
বন্দী জীবন কাটে, আশায় নিরাশায়।