Thikana News
০৬ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

নির্বাচন-কেন্দ্রিক সংঘাত কি অনিবার্য হয়ে আসছে!

নির্বাচন-কেন্দ্রিক সংঘাত কি অনিবার্য হয়ে আসছে!



 
নির্বাচন নিয়ে দুই রাজনৈতিক পক্ষ-প্রতিপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ক্রমে চরম আকার নিচ্ছে। সামনে তা বড় ধরনের সংঘাত-সংঘর্ষময় পরিস্থিতি সৃষ্টিরও আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এই দ্বন্দ্ব-বিরোধ ক্ষমতাকেন্দ্রিক এবং কোনো পক্ষই একে অপরকে ছাড় দিতে রাজি নয়। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী ব্যয় শত কোটি টাকা কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছে। দেড় লক্ষাধিক নির্বাচনী কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। একজন    নির্বাচন কমিশনার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এবারের নির্বাচন হবে এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। নির্বাচন নিয়ে জনমনে হতাশা ও শঙ্কা বিরাজ করছে বলেও জানান তিনি।
এমনি হতাশা ও শঙ্কাময় পরিস্থিতির মধ্যেও ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে বলে গভীরভাবে আশাবাদী বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কমিশনকে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণাকে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি স্বাগত জানিয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ীর বেশে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রত্যাশী। লাগাতার ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে দলটির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দারুণ হতাশায় রয়েছেন। দীর্ঘ বঞ্চনা, নিপীড়নের পর তারা ক্ষমতার স্বাদ পাওয়ার জন্য গভীর আগ্রহে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ করছেন। প্রার্থী বাছাইও করা হচ্ছে। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে। বিএনপি ও তার সমমনা, অভিন্ন রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা ও আদর্শে বিশ্বাসী দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যেও নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং ক্রমে গোটা নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী আবহ তৈরি হচ্ছে। এর বিপরীত চিত্রও ক্রমে ক্রমে সুস্পষ্টভাবেই প্রতিভাত হতে শুরু করেছে।
নির্বাচনের অপর প্রধান দুই পক্ষ জামায়াতে ইসলামী ও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষর্থীদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তারা দৃশ্যতই ঘোষিত নির্বাচনী রোডম্যাপে সন্তুষ্ট নয়। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের খোলাখুলিই বলেছেন, রোডম্যাপ ঘোষণার আগে নির্বাচন প্রচলিত সংসদীয় আসনভিত্তিক হবে, নাকি তাদের দাবিকৃত ভোটার সংখ্যানুপাতিক ভিত্তিতে হবে, তা নির্ধারণ করা জরুরি ছিল। কিন্তু তা নির্ধারণ না করেই নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে, যা তাদের প্রত্যাশিত ছিল না। জামায়াতের সঙ্গে অভিন্ন সুরে কথা বলছে আরও কয়েকটি ইসলামি দল এবং এনসিপি।
পরস্পর বৈরী এই অবস্থায় সর্বজনীন নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নির্বাচন হলেও তা জাতীয়ভাবে ব্যাপক অংশগ্রহণে হবে না। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতাহীন নির্বাচন ও সেই নির্বাচনে প্রতিষ্ঠিত সরকারের পক্ষে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা ও গণতন্ত্রের বিকাশে অবদান রাখা কি সম্ভব? সবচেয়ে বড় কথা, দেশের অন্যতম বৃহৎ গণতান্ত্রিক দল বিএনপির জন্য রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা-প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে অংশ নিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া কি দীর্ঘ মেয়াদে চরম ক্ষতিকর নয়!
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, দেশে উগ্রপন্থী রাজনীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। কারা, কোন রাজনৈতিক দল এই ভয়ংকর উদ্বেগজনক ক্রিয়াকর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তিনি তাদের নাম প্রকাশ করেননি। দেশে ধর্মীয় উগ্রপন্থার প্রসার ঘটানোর চেষ্টা আগে থেকেই হচ্ছে। বাংলাদেশে এবং সীমান্তবর্তী ভারতীয় বিভিন্ন অঞ্চলে যেসব উগ্রবাদী ঘটনা বিভিন্ন সময়ে ঘটেছে, সেসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অতীতে জামায়াত-সংশ্লিষ্টরা রয়েছে। তার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড অতীতের মতো জামায়াত-সংশ্লিষ্টরাই সংঘটিত করছেন কি না, বিএনপির মহাসচিব বিষয়টি স্পষ্ট করেননি।


 
কমেন্ট বক্স




9