বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। অন্যান্য বার ট্রাস্টিদের সিলেকশন করে বোর্ড গঠন করা হলেও এবার প্রার্থী বেশি হওয়ায় নির্বাচন করা হয়। প্রথমে প্রার্থী ছিলেন ২৪ জন। পরে ১০ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। বাকি ১৪ জনের মধ্যে নির্বাচিত হলেন ১২ জন। নির্বাচিতদের মধ্যে একজন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন। যারা নির্বাচিত হয়েছেন, এর মধ্যে চারজন সমান ভোট পেয়েছেন। তবে সব দিক বিবেচনায় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছেন শাহওনেয়াজ। এখন পর্যন্ত এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও খুব শিগগিরই করা হবে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে একাধিক প্রার্থী ১৮টি করে ভোট পান। কারণ ভোট দেন বাংলাদেশ সোসাইটির পরিচালনা পরিষদের ১৯ জন নেতা। ২০ এপ্রিল সন্ধ্যা ছয়টায় বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যালয়ে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করার লক্ষ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রাত বারোটায় তা শেষ হয়। এই বৈঠকে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করার জন্য সোসাইটির পরিচালনা পরিষদের সবাই উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে ২৪টি নাম ট্রাস্টির জন্য প্রস্তাব আসে। এরপর দফায় দফায় সেই নামের তালিকা কাটছাঁট করা হয়। কাটছাঁট করার পরও ১২টি নামের বেশি ছিল। অর্থাৎ ১৪টি নাম ছিল। শেষ পর্যন্ত বাকি দুজন নাম প্রত্যাহার না করায় সোসাইটির প্রেসিডেন্ট আতাউর রহমান সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ও অন্যরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেন ভোট করার। ভোটের নিয়ম ছিল যারা ১৪ জন প্রার্থী আছেন, সেই ১৪ জনের নাম লেখা হয় কাগজে। এর মধ্যে একেকজনকে বলা হয় ১২টি করে ভোট দেওয়ার জন্য। সেই হিসেবে ভোটাররা তাদের পছন্দসই প্রার্থীদের ভোট দেন। যাকে ভোট দিচ্ছেন, তার নামের পাশে টিক মার্ক আর যাকে ভোট দিচ্ছেন না, তার নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিতে বলা হয়। এভাবেই সোসাইটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য সদস্যরা ভোট দেন। তবে কেউ কেউ ১২ জনকে ভোট দেননি। এর চেয়ে কম নামের পাশে টিক চিহ্ন দিয়েছেন। অন্যদিকে একাধিক ভোটার একই ব্যক্তিকে ভোট দেওয়ার কারণে একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পান। সমান ভোট পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে একাধিক নতুন নেতাও রয়েছেন। তবে একাধিক নেতা সমান ভোট পেলেও এখন পর্যন্ত কে হবেন চেয়ারম্যান, তা নির্ধারণ করা হয়নি।
২৪ জন প্রার্থীর মধ্যে যারা প্রস্তাবের নামের তালিকায় ছিলেন, তারা হলেন আবু নাসের, ফারুক হোসেন মজুমদার, ফারহানা চৌধুরী, নওশাদ হোসেন, কাশেম চৌধুরী প্রমুখ। যারা নির্বাচিত হতে পারেননি, তারা হলেন তোফায়েল ইসলাম ও ওসমান গনি।
বাংলাদেশ সোসাইটির পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের ভোটে ট্রাস্টি বোর্ডে নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ সোসাইটির গত নির্বাচনে সেলিম-আলী প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ, তিনি বৃহত্তর খুলনা, জ্যাকসনহাইটস হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন; সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আখতার হোসেন, তিনি ব্রঙ্কস বরো থেকে নির্বাচিত; সোসাইটির সাবেক ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাজী আজহারুল হক মিলন, তিনি ঢাকা ও জ্যামাইকা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন; সেলিম-আলী প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা জোনায়েদ চৌধুরী, তিনি ব্রঙ্কসের বাসিন্দা, ট্রাস্টি বোর্ডে নতুন সেই সাথে তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি ছিলেন; সোসাইটির বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য আতাউল আলম, তিনি বৃহত্তর নর্থ বেঙ্গল থেকে প্রতিনিধিত্ব করছেন; সোসাইটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার, তিনি ঢাকা ও জ্যাকসন হাইটস থেকে নির্বাচিত; ফোবানা স্টিয়ারিং কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, তিনি চট্টগ্রাম ও ব্রুকলিনের প্রতিনিধি; জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, তিনি জ্যামাইকাবাসী, সিলেটি, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার, সেই হিসাবে নির্বাচিত, সেলিম-আলী প্যানেলের নির্বাচন পরিচালনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন; কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আহসান হাবীব, তিনি নতুন করে সোসাইটির নেতৃত্বে এলেন, তিনিও একজন ব্যবসায়ী ও জ্যামাইকাবাসী। ব্রুকলিন থেকে আরও আছেন নাইম টুটুল। তিনি একজন রিয়েলস্টেট ও মর্টগ্রেজ ব্রোকার।
সূত্র জানায়, ট্রাস্টি বোর্ডের মেয়াদ শুরু হবে আগামী ১ জুন। ২০২৭ সালের ৩১ মে তাদের দায়িত্ব শেষ হবে। এর আগে ২০২৬ সালের অক্টোবরের মধ্যে সোসাইটির আগামী পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে। বর্তমান কমিটি ২০২৭ সালের জানুয়ারি মাসে নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে। এরপর তারা ট্রাস্টি বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এপ্রিলে ট্রাস্টি বোর্ডের নির্বাচন করবেন।
ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, অত্যন্ত সুন্দর ও সফলভাবে ২০ এপ্রিল রাতে সোসাইটির কার্যালয়ে ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে ২৪ জন প্রার্থী ছিলেন। ১০ জন নির্বাচনে অংশ নেননি। তারা কেউ কেউ নাম প্রত্যাহার করেন। কেউ কেউ অনুরোধে তুলে নেন নাম। তবে শেষ পর্যন্ত ১২ জনের জায়গায় ১৪ জন প্রার্থী থাকায় নির্বাচন হয়। এতে পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা ভোট দেন। ভোট গ্রহণ শেষে সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম নির্বাচিতদের নাম ঘোষণা করেন। মোহাম্মদ আলী বলেন, এখন আমরা আলোচনা করে দিনক্ষণ ঠিক করে ট্রাস্টি বোর্ডের নবনির্বাচিত সদস্যদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাব, সেই সাথে তারা শপথবাক্য পাঠ করবেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তারা ১ জুন থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। ৩১ মে পর্যন্ত বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ড দায়িত্ব পালন করবে।