Thikana News
২৪ এপ্রিল ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
ধোঁকায় বিএনপি, টোকায় আ.লীগ, টোপে এনসিপি

র-মোসাদ-সিআইএ-আইএসআই জালে বাংলাদেশ

র-মোসাদ-সিআইএ-আইএসআই জালে বাংলাদেশ
একে একে অনেক কিছুতে হারতে হলেও বাংলাদেশ প্রশ্নে হাল ছাড়ছে না ভারত। একদিকে মার খেয়ে আরেকদিকে ঢুঁ মারছে। ভারতের সঙ্গে প্রস্তাবিত স্থলপথ সংযোগ স্থগিত করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। যার মাধ্যমে পক প্রণালি পেরিয়ে একটি সেতু বা করিডোর নির্মাণের কথা ভাবা হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক কলম্বো সফরের সময় বিষয়টি অগ্রাধিকার পেলেও শ্রীলঙ্কা সরকারের পক্ষ থেকে দু-তিন দিন আগে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রকল্পটি নিয়ে এগোতে প্রস্তুত নয় তারা।
অন্যদিকে বাংলাদেশে রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি রুপির অর্থায়ন ও নির্মাণকাজ স্থগিত করেছে ভারত। ‘শ্রমিকদের নিরাপত্তা’এবং ‘রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার’ কারণ দেখিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেপালও ডিস্টার্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-বিআরআই নিয়ে গেল ডিসেম্বরে চীনের সঙ্গে কাঠামোগত চুক্তির মাধ্যমে নেপালে চীনের প্রভাব বিস্তারের পথ সুগম করেছে। প্রাথমিক বোঝাপড়ার সাত বছর পর এই নতুন চুক্তি প্রকল্পে যোগ দিয়েছে নেপাল। একের পর এক এ ধরনের বাধায় কাবু নন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায় চীনকে টপকে বিশ্বের দ্বিতীয় সুপারপাওয়ার রাষ্ট্র করা পর্যন্তই নয়, বাংলাদেশ-পাকিস্তানসহ গোটা এ অঞ্চলকে টানা আয়ত্তে নেওয়ার চেষ্টায় অটল তিনি। কৌশলে একটুও কমতি করছেন না। চীন-মার্কিন সমীকরণ মেলাতেও চালাচ্ছেন ম্যারাথন কূটনীতি। এর জেরেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে দাওয়াত করে আনা। উচ্চমার্গের এ সফরে ভারত-আমেরিকা শুল্কচুক্তি নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে। ২১ এপ্রিল সোমবার দুই নেতার আলোচনার সময় মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর ৭ লোককল্যাণ মার্গের বাসভবনে ভ্যান্সের সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী উষা। তিন ছেলে ইওয়ান, বিবেক ও মিরাবেল। মোদি তিন শিশুর সঙ্গে ছেলেমানুষির মতো আদর-রসিকতা করেন। পরে তিন ছোট্ট বাচ্চার হাতে একটি করে ময়ূরের পালক তুলে দেন। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দুজনের মধ্যে ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। কথার শেষে দুই নেতা আপস-আলোচনার সুপারিশ চূড়ান্ত করার পথে বলে ঘোষণা করেন। ভ্যান্সের সঙ্গে আলোচনার পরদিনই ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে মোদি সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশে রওনা দেন। যাওয়ার আগে এক্স বার্তায় জানান, সৌদির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অমূল্য। ঠিক এ সময়েই যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কংগ্রেসম্যান, সরকারি কর্মকর্তা এবং কয়েকটি এনজিও-প্রধানের ওপর চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। হংকং ইস্যুতে ‘জঘন্য আচরণ’ করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর আগে গত মাসে চীনের মূল ভূখণ্ড ও হংকংয়ের ছয়জন কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর জবাবে এই পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, হংকং, সৌদিসহ আশপাশ বাংলাদেশের জন্যও বেশ প্রাসঙ্গিক। পাকিস্তান সম্প্রতি আরও প্রাসঙ্গিক। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর প্রায় দেড় দশক পর বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বিশেষ মনোযোগী পাকিস্তান। গত আগস্টের পর হুটহাট করেই সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ ততটা আগ্রহী ছিল না। কিন্তু ব্যবসা, বাণিজ্য আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংযুক্তিকে বিবেচনায় নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগে সাড়া দিচ্ছে বাংলাদেশ। এরই অংশ হিসেবে ঢাকা সফর করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। এর ৫ দিনের ব্যবধানে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ঢাকা সফর। বাংলাদেশে পাকিস্তানের এভাবে এগিয়ে চলা অসহ্য ভারতের। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসের গতিবিধি বাড়বাড়ন্ত। একসময় যে দাপট ছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর। তারাও হাল ছাড়ছে না। কাউন্টার দেওয়ার চেষ্টা করছে আইএসআই-সিআইএকে। ‘র’-কে এ কাজে ব্যাপক সহযোগিতা দিচ্ছে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। ঢাকায় এখন এসব বিদেশি গোয়েন্দাদের কিলবিল। রাজনীতি, ব্যবসা, বিভিন্ন বাহিনীতেই তাদের নজরদারি। বাংলাদেশের কয়েকটি এজেন্সির কাছে এ-সংক্রান্ত আপডেট তথ্য থাকলেও না জানা-না বোঝার ভান নিয়েছে তারা। আওয়ামী লীগকে একটু একটু করে মাঠে নামানো, এখানে-ওখানে ঝটিকা মিছিল, বিএনপির একাংশকে ঘোরে ফেলে উতলা করে তোলার পুরো কাজে লিপ্ত বিদেশি গোয়েন্দারা। গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট দখল করে শহরের শিক্ষিত মানুষের কাছে সীমিত করা, এনসিপির নেতৃত্বকে অর্থের ঘেরে ফেলায়ও তাদের বিস্তর বিনিয়োগ। তাদের জীবন কীভাবে বিলাস-জৌলুশে পাল্টাচ্ছে, এর তথ্য সংগ্রহে কাজ করছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। ব্যাপক তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে ড. ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েক জায়গা থেকে এনে কিছু ব্যক্তিকে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোদের বিষয়ে। সেই সঙ্গে চাঙা করে দেওয়া হচ্ছে চৈত্রের খরতাপে রাস্তায় রাজনৈতিক কামলা খাটানোর মেথড। সংস্কার না নির্বাচন- সেই বিতর্ক জমিয়ে দেওয়া হয়েছে আগেই।
কমেন্ট বক্স