Thikana News
১৪ মার্চ ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

পৃথিবী কি ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে

বাংলাদেশকে চীনের ক্লায়েন্ট লিস্ট থেকে সরানো হয়েছে এবং সেখানে রাজনীতিবিদেরা যা-ই দাবি করুক, ২০২৭ এর আগে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম; প্রয়োজনবোধে সামরিক শাসনে নেওয়া হবে, কিন্তু চীনের ঝামেলা না মেটানোর আগে কোনো নির্বাচিত সরকার আসতে দেওয়া হবে না
পৃথিবী কি ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের হঠাৎ আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি, আমেরিকান এয়ারফোর্সের একজন জেনারেলের যুদ্ধ মেমোরেন্ডাম, ডুমস ডে ক্লকের সময় পুনর্নির্ধারণ এবং একজন অন্ধ মহিলার ভবিষ্যদ্বাণীÑএই বিষয়গুলো ইঙ্গিত করে যে পৃথিবী একটি ঘোরতর সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দুটি বৃহৎ দেশ আমেরিকা ও চীন, যারা একে অপরের অর্থনৈতিক ও আধুনিক প্রযুক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী, এক ভয়াবহ সংঘাতে জড়িয়ে যেতে পারে, যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে। আমেরিকা দীর্ঘ দিন থেকেই চীনকে সীমাবদ্ধ করে রাখার পরিকল্পনা করে আসছে কিন্তু চীন তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে সম্প্রতি আরও যোগ হয়েছে ডিডলারাইজেশন, অর্থাৎ ডলারের বিকল্প মুদ্রা, যা আমেরিকাকে আরও আগ্রাসী করে তুলেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যারাই আমেরিকার স্বার্থে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, আমেরিকা তাদের কাউকেই ছেড়ে দেয়নি। ১৯৪৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৮১টি দেশে আমেরিকা প্রত্যক্ষ, পরোক্ষভাবে সামরিক হস্তক্ষেপ বা সরকার পরিবর্তন করে দিয়েছে। চীনের রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং কঠোর শৃঙ্খলার কারণে আমেরিকা সেখানে হাত বসাতে পারে না। সে ক্ষেত্রে একটি সামরিক সংঘাতই আমেরিকার একমাত্র পথ। যদিও চীন কখনোই আগ্রাসী ভূমিকা নেয় না, কিন্তু কেউ খবরদারি করতে এলে নতজানু হয়ে আত্মসমর্পণ করার মতো দেশও নয়। বর্তমানে দুটি দেশই মুখোমুখি, কোনো একটি দেশ আপস করতে রাজি না হলে যুদ্ধ অনিবার্য।
ট্রাম্পের বিজয় এবং জাতীয় নিরাপত্তা : এবারের ট্রাম্পের বিজয় বিস্ময়করভাবে চোখে পড়ার মতো। আজ পর্যন্ত আমেরিকার কোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় বড় করপোরেশনের কর্তাব্যক্তি এবং টেক জায়ান্টরা একজন প্রার্থীর পক্ষে এসে দাঁড়ায়নি, যেটা এবার ট্রাম্পের বেলায় ঘটেছে। তাদেরকে বোঝানো হয়েছে, চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক, টেকনোলজি এবং সামরিক অগ্রগতিতে আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্ব অচিরেই হারিয়ে ফেলতে হবে, যদি না চীনকে সীমাবদ্ধ করে রাখা না হয় এবং ট্রাম্পই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি সেটা করতে সক্ষম। চীন ঠেকাও নীতি শুরু হয়েছে ওবামা শাসনের মধ্যভাগ থেকে। সে সময় ৫-এ নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য আমেরিকা প্রস্তুতি নিচ্ছিল, কিন্তু তার আগেই চীন সেটা শুধু নিজেরাই তৈরি করেনি, ইউরোপীয় দুটি দেশে তৈরি করে দেওয়ার চুক্তিও স্বাক্ষর করেছিল। পরে আমেরিকার চাপে তারা ওই চুক্তি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল। এরপর ট্রাম্প প্রশাসন এসে একের পর এক চাপÑশুল্ক আরোপ, টেকনোলজি ও পেটেন্ট রাইট চুরির অভিযোগ, চীনের ল্যাবে কোভিড-১৯ তৈরি বা চীনা ভাইরাস, চীনের সবচেয়ে বড় টেলিফোন জায়ান্ট হাওয়েই কোম্পানির মালিকের মেয়ে ও কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্টকে কানাডায় আটক ইত্যাদি দিয়ে একের পর এক হয়রানি করা হয়েছিল। এরপর বাইডেন প্রশাসন একই নীতিতে অটল থেকে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সমন্বয়ে কোয়াড গঠন করে এবং চীনকে মোকাবিলায় ইন্দো-প্যাসিফিক সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ভীষণ তৎপর ছিল, যেখানে বাংলাদেশকেও অন্তর্ভুক্ত করার জোর প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা চীনের রোড অ্যান্ড বেল্ট কর্মসূচির আওতায় থাকায় সেটা হতে দেননি, অবশ্য সে জন্য তাকে খুব উচ্চ মাশুল দিতে হয়েছে।
এবার ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বসার সঙ্গে সঙ্গেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের, কম খরচে চীনের নবতম সংযোজন ‘ডিপসিক’ আমেরিকার শেয়ারবাজার থেকে ১ ট্রিলিয়ন ডলার গায়েব করে দেওয়ার ঘটনায় আমেরিকা আরও বেশি তাগিদ অনুভব করবে চীনকে শায়েস্তা করার। ট্রাম্প সবেমাত্র তার প্রশাসন সাজিয়েছেন, এখনো অনেক কর্মকর্তা সিনেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু ট্রাম্প সম্ভাব্য সংঘাতের সময় গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন, যেমন পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ, গ্রিনল্যান্ড দখল, গাজাকে নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি। পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সে কারণেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইতিমধ্যেই পানামা সফর করে ওই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে হুমকি দিয়ে এসেছেন। রুবিও দাবি করে এসেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জাহাজসমূহ পানামা খাল দিয়ে বিনা পয়সায় যাতায়াত করবে, যা পানামার প্রেসিডেন্ট মুলিনো সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাংবাদিক রুবিওকে প্রশ্ন করলে রুবিও বলেন, পানামা খাল রক্ষায় আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, সে চুক্তির বলেই আমেরিকান জাহাজ সে খাল দিয়ে পয়সা ছাড়া যাতায়াত করতে পারবে। অবশ্য পানামা সরকার চীনের সঙ্গে রোড অ্যান্ড বেল্ট প্রকল্প এবং পানামা খালের কিছু তদারকি কাজ থেকে চীনকে দূরে রাখার কথা আমেরিকা ও চীন সরকারকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে।
গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ইউরোপীয় নেতারা এখন যা-ই বলুন, শেষ পর্যন্ত আমেরিকার ইচ্ছাকে সম্মান করতে বাধ্য হবেন। কারণ ট্রাম্প বলেছেন, এটা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন আপাতত ঝামেলামুক্ত থাকতে চায়। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ইরান আক্রমণের ফাঁদে পা না দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ইরানের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চায়, যাতে চীনের সঙ্গে যেকোনো সংঘাতে যেন ইরান নিরপেক্ষ থাকে। গাজাকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভূমধ্যসাগরের আশপাশের অঞ্চলে সামরিক আধিপত্য বজায় রাখার পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক বিবেচনাও থাকতে পারে। ট্রাম্প ‘আর্ট অব দ্য ডিল’ নামে একটি বই লিখেছিলেন, যেখানে কীভাবে কোন ব্যবসায়িক বা রাজনৈতিক আদান-প্রদানে সুবিধাজনক অংশ পাওয়া যায়, তার বর্ণনা রয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে একটি স্থায়ী শান্তি আনতে পারলে নোবেল পুরস্কার নিশ্চিত-এই কথাটি একজন ইহুদি অধ্যাপক ট্রাম্পের মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন এবং তাই হয়তো এই গাজা সেই শান্তি আনয়নের জন্য দর-কষাকষির একটি টুল হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন আর যে কাজটি করার সর্বোত্তম চেষ্টা করবে, তা হলো আব্রাহাম একর্ডের আওতায় সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে দেওয়া এবং একই সঙ্গে সৌদিকে নিরাপত্তার গ্যারান্টিও দেওয়া। এই কাজটি করে দিতে পারলে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে যত মার্কিন সৈন্য মোতায়েন রয়েছে, তাদেরকে সরিয়ে চীনকে মোকাবিলায় এশিয়ার কোনো ঘাঁটিতে মোতায়েন করতে পারবে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে সৈন্য সরিয়ে চীনকে মোকাবিলা করার দুজন প্রবক্তা, একজন মাইকেল ডিমিনোকে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তাবিষয়ক ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী, অপরজন এলব্রিজ কোলারিকে আন্ডার সেক্রেটারি অব ডিফেন্স পলিসি হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের পর ইউরোপ তো ন্যাটোর সুবাদে পাশেই থাকবে। এশিয়ায় জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন এবং ব্রিটিশের ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ দিয়েগো গার্ছিয়াতে পর্যাপ্ত সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। বাংলাদেশকে চীনের ক্লায়েন্ট লিস্ট থেকে সরানো হয়েছে এবং সেখানে রাজনীতিবিদেরা যা-ই দাবি করুক, ২০২৭ এর আগে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম; প্রয়োজনবোধে সামরিক শাসনে নেওয়া হবে, কিন্তু চীনের ঝামেলা না মেটানোর আগে কোনো নির্বাচিত সরকার আসতে দেওয়া হবে না। মিয়ানমারকে পরিষ্কার করার জন্য বার্মা অ্যাক্ট নিয়ে কাজ চলছে। ভারতকে দূরেও নয়, আবার খুব কাছেও নয়, মাঝামাঝি স্থানে রাখা হবে। কারণ আমেরিকা জানে, ভারত কখনোই চীনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবে না, তারা সব সময় উভয় দিকের সুবিধা ভোগ করে। রাশিয়া যদি চীনের পাশে দাঁড়ায়, আমেরিকা কী করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ জিইয়ে রেখেই চীনকে মোকাবিলার কথা ভাবা হচ্ছে বলে মনে হয়। কারণ ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রথম দিনই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ করবেন। কিন্তু এখন তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া কড়া কথা বলছেন এবং ইউক্রেনকে সামরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা ভাবছেন, অবশ্য ইউক্রেন আমেরিকাকে দুর্লভ কিছু আর্থ মিনারেল দেওয়ার লোভ দেখিয়েছেন।
একটি যুদ্ধ মেমোরেন্ডাম : ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, আমেরিকান এয়ারফোর্সের এয়ার মবিলিটি কমান্ড ইউনিটের কমান্ডার জে. মাইকেল মিনিহ্যান একটি মেমোরেন্ডামে লেখেন, ২০২৫ সালে আমেরিকা চীনের সঙ্গে এক যুদ্ধে লিপ্ত হবে। সে যুদ্ধে আমেরিকান এয়ারফোর্সের প্রস্তুতি এবং ট্রেনিংয়ের জন্য প্রতি মাসে কী কী করণীয়, তার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। বিষয়টি নিয়ে যখন সোশ্যাল মিডিয়া ও কংগ্রেসে তোলপাড় শুরু হয়, এক সাংবাদিক তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জবাব দেন, ‘I hope IÕm wrong, but we need to prepare ourselves.’
ডুমস ডে ক্লক : গত ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ মঙ্গলবার, ডুমস ডে ক্লক বা কিয়ামতের ঘড়িটির সময় ৯০ সেকেন্ড থেকে ১ সেকেন্ড কমিয়ে ৮৯ সেকেন্ড করা হয়েছে, যার অর্থ পৃথিবী ধ্বংস হতে আর মাত্র ৮৯ সেকেন্ড বাকি আছে। এটি একটি কল্পিত বিপৎসংকেতের ঘড়ি, যা দ্বারা পৃথিবী ধ্বংস বা বসবাসের অযোগ্য হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। যদি কখনো ঘড়ির কাঁটা ঠিক ১২টায় পৌঁছায়, তাহলে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমার বীভৎসতার পর একদল হৃদয়বান বিজ্ঞানী ১৯৪৭ সালে ‘বুলেটিন অব দ্য অ্যাটমিক সায়েন্টিস্ট (Bulletin of the Atomic Scientists) নামে এই কল্পিত ঘড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ববাসী ও বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানদের সতর্ক করা। ওই সময় পৃথিবী ধ্বংস হতে মাত্র ৭ মিনিট বাকি আছে বলে তারা সময় নির্ধারণ করেন। সময়ের আবর্তে এই সময় কমতে থাকে। ১৯৫৩ সালে আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা ও বিস্ফোরণ ঘটালে ওই ঘড়ির সময় কমিয়ে ২ মিনিট করা হয়। ২০২৩ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমাদের সহায়তা, তার সঙ্গে জলবায়ুর পরিবর্তন ওই ঘড়ির সময় কমিয়ে মাত্র ৯০ সেকেন্ড করা হয়। ২০২৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তা আরও এক সেকেন্ড কমানো হয়। কেন এক সেকেন্ড কমানো হলো, তার কারণ ব্যাখ্যা করলেন সায়েন্টিস্ট বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেনিয়েল হলজ্। তিনি বলেন, বর্তমান দুনিয়ায় বড় বড় দেশগুলো তাদের পারমাণবিক অস্ত্র বাড়াচ্ছে, জলবায়ুর দ্রুত অবনতি হচ্ছে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নামক প্রযুক্তি দ্রুত জায়গা করে নিচ্ছে, অপতথ্য রাষ্ট্র ও সমাজে স্থায়ী বাসা বাঁধছে এবং যোগাযোগ ক্রমশ সংকুচিত হওয়ায় পৃথিবীর ঝুঁকি ক্রমশই বাড়ছে। তবে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ ট্রাম্পের আগ্রাসী মনোভাবকে এই কমানোর জন্য দায়ী মনে করেন।
ভাঙা বাবা : বুলগেরিয়ার এক পাহাড়ি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১৯১১ সালে জন্ম ও ১৯৯৬ সালে মৃত্যুবরণ করা এক অর্ধশিক্ষিত অন্ধ মহিলা, যাকে ভাঙা বাবা নামে ডাকা হতো, কিছু ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলন, যার মধ্যে নিজের মৃত্যুর তারিখটাও ছিল। তার ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর অনেকগুলোই সত্যি হয়েছিল। তার মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ৯/১১, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চেকোস্লাভিয়া ও যুগোস্লোভাকিয়ার বিলুপ্তি, চেরনোবিল দুর্ঘটনা, স্টালিনের মৃত্যু, ২০০৪ সালের সুনামি, প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু, আমেরিকায় একজন কালো প্রেসিডেন্ট ইত্যাদি। অবশ্য কয়েকটি সত্য হয়নি, যেমন ২০১০-১৬ সালের পারমাণবিক যুদ্ধ বা আমেরিকার ৪৪তম প্রেসিডেন্টই শেষ প্রেসিডেন্ট। সেই মহিলার আরও কয়েকটি ভবিষ্যদ্বাণী সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসেছে। তিনি বলেছিলেন, ২০২৫ সালে এত ভয়াবহ যুদ্ধে ইউরোপের অধিকাংশ লোকই মারা যাবে, ২০৪৩ সালে মুসলমানরা ইউরোপ শাসন করবে এবং ২০৭৩ সালে আবার কমিউনিস্টরা আধিপত্য বিস্তার করবে। ২০২৫ সালে একটি যুদ্ধে ইউরোপের অধিকাংশ লোক মারা যাবে-এটিই বর্তমানে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এত সব লক্ষণ থাকার অর্থ এই নয় যে যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। তবে ভয় যে বর্তমান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এমন একজন ব্যক্তি, যিনি যুক্তি-তর্কের চেয়ে নিজের খামখেয়ালিপনাকে বেশি প্রাধান্য দেন। এই প্রেসিডেন্টই ২০২০ সালে ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার পর বহুবার বলেছিলেন, তিনি একমাত্র রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট, যিনি কোনো যুদ্ধে জড়াননি। অথচ এবার নির্বাচনে জিতেই তিনি বিভিন্ন জায়গায় সামরিক হুমকি দিতে থাকেন। এ দ্বারা একটি জিনিস প্রমাণিত হয়, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যিনি বা যত শান্তিবাদী লোকই থাকুক, তাকে পেন্টাগনের বা জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রেসক্রিপশনে চলতে হয়। মহান সৃষ্টিকর্তা এ বিশ্ব মানুষের সহায় হোন। -নিউইয়র্ক

 
কমেন্ট বক্স