Thikana News
২৯ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
সংকটের সমাধান দেবে তারেক রহমানের জাতীয় সরকার সূত্র

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সংগৃহীত ছবি



 
আগামী সংসদ নির্বাচন কখন হবে, তা নিয়ে যেমন অনিশ্চয়তা রয়েছে, এই নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়ে গেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার অন্তর্বর্তীকালীন হলেও এই সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে, তা স্থিরীকৃত নয়। এরই মধ্যে এই সরকারের চার মাস পূরণ হয়েছে। সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারে কমিশন তার প্রতিবেদন দেওয়ার আগেই নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের এই অতি উৎসাহ নিয়েও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। সংস্কার কমিশনের সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেওয়ার নির্ধারিত সময় ডিসেম্বর। নভেম্বরেই সরকার সার্চ কমিটি গঠন এবং সার্চ কমিটির মাধ্যমে ১০ জনের নাম সংগ্রহ করেছে। তাদের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন কমিশনার নিয়োগ দিয়েছে সরকার। যে প্রক্রিয়ায় বিগত শেখ হাসিনা সরকার নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল, একই প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারও নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে সংস্কার কী হলো?
নির্বাচনের সম্ভাব্য অংশীজনদের দাবি অনুযায়ী, আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচনে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতাসম্পন্ন নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার, এই সরকারের নেপথ্যের পরিচালক ও উপদেষ্টাদের মধ্যে নানামুখী চিন্তা কাজ করছে বলে জানা যায়। আবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকারীরা এবং জামায়াতে ইসলামী দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে নয়। তারা রাজনীতিতে সুস্থ, সুন্দর, গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠার পক্ষে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে না করে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকা ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছেন। তারা স্থানীয় সরকার সংস্থাসমূহের নির্বাচনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠান করতে চান। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থায়ী কাঠামোগত রূপ প্রণয়নের সুপারিশ তাদের।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ক্ষমতাসীন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের আধীনেই অনুষ্ঠিত হবে বলে সাধারণভাবে ধারণা রয়েছে। সরকারি মহলও তা প্রত্যাশা করে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার, তার উপদেষ্টাদের কথাবার্তায় রাজনৈতিক মহলের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে, তারা কোনো না কোনো রাজনৈতিক পক্ষের স্বার্থরক্ষায় ভূমিকা রাখছে। বিএনপির মহাসচিবসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও দীর্ঘ আলোচনার পরই মানুষের মধ্যে এই ধারণা দৃঢ়তর হয়, দুই পক্ষের মধ্যে একটা সমঝোতা হয়েছে। ব্যাপক জনশ্রুতি রয়েছে, ড. ইউনূসকে আগামীতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হতে পারে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, আইনগত ভিত্তি না থাকলেও এর রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা অস্বীকার করার মতোও নয়। আগামী নির্বাচনের রোডম্যাপের তাগিদ, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গিয়ে দেশ পরিচালনার ব্যাপারে বিএনপির অধিক মাত্রায় আশাবাদী আচরণ মানুষের সংশয়-সন্দেহকে ঘনীভূত করতেই ভূমিকা রাখছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকারীদের এবং অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামীর উল্লিখিত বিষয়ে বিএনপির বিপরীত অবস্থানও সমস্যার সম্মত সমাধান কঠিন করে তুলছে। ড. ইউনূসকে আগামীতে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেখতে তারা অনাগ্রহী নন, তবে তাদের মধ্যে সংশয় কাজ করছে বলেই জানা যায়। বৈষম্যবিরোধীরা সংস্কার কাজ সম্পাদনের ওপর সবিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। সংস্কারের পরই নির্বাচনের পক্ষে তারা। অন্যদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানসহ অন্য সব নেতাই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিতদের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার দাবি করছেন। ২০২৫ সালের মধ্যেই তারা নির্বাচন চান। তারা চান সব সংস্কার কাজ সম্পাদন ও বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার। কিন্তু বৈষম্যবিরোধীরা এতে আস্থা রাখতে পারছেন না। এ ব্যাপারে বিএনপিসহ নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার সম্পন্ন করা ও অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে যেসব সংস্কার কাজ করবে, নির্বাচনের পর তা পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের লিখিত অঙ্গীকার চায়। যেসব সংস্কার কাজ অন্তর্বর্তী সরকার করতে পারবে না, নির্বাচিত সরকার সেসব সংস্কার ও বাস্তবায়ন করবে মর্মে লিখিত অঙ্গীকার দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারে প্রকাশ্য ঘোষণা দিতে হবে। নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন দল সেসব বাস্তবায়ন না করলে তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা-ও পরিষ্কারভাবে অঙ্গীকারনামায় রাখতে চান তারা। যত দূর জানা যায়, জামায়াত এবং বামপন্থী দলগুলো বৈষম্যবিরোধীদের দাবির সঙ্গে একমত। ভিন্নমত পোষণ করছে বিএনপি। বিএনপি পর্যায়ক্রমে সব ক্ষেত্রেই সংস্কার আনার পক্ষে। তবে তারা কোনো আইনগত বিধান রাখার পক্ষে নয়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন, আগামীতে সব দল নিয়ে তারেক রহমানের জাতীয় সরকার গঠনের ঘোষণা সংকট সমাধানের বাস্তবভিত্তিক সমাধান দিতে পারে। তার এই ঘোষণা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এতে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতাও প্রকাশিত হয়েছে।
আগামী সংসদ নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠানের পক্ষে বিএনপি। তবে জামায়াত ও বৈষম্যবিরোধীরা এর বিপক্ষে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যাতে সম্পূর্ণ পক্ষপাত, প্রভাবমুক্ত থাকে, জামায়াত তা নিশ্চিত করার পক্ষে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রস্তাব করে জামায়াত। তারাই আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সম্পূর্ণ দলনিরপেক্ষ অবস্থানে থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে চায়।
কমেন্ট বক্স