আজ আমি সমাজের বিশেষ একটি জটিল বিষয়ের ওপর কিছুক্ষণ আলোকপাত করতে চাই। বিশেষভাবে আমেরিকার প্রেক্ষাপটে অহরহ প্রকাশ্যেই যেসব বিকৃত রুচির কাণ্ড-কারখানার পদস্খলন ঘটছে, তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ হৃদয়ের কিছু অনুকম্পা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাচ্ছি। যেমন ধরুন হিজড়া শব্দটির সঙ্গে আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি পরিচিত। কেননা বিশ্বজুড়ে সবখানেই এদের অবস্থান রয়েছে। তা ছাড়া চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুসারে, ক্রোমোজমের ত্রুটির কারণে জন্মগত ‘যৌনপ্রতিবন্ধী’ ব্যক্তি, যাদের দৈহিক বা জেনেটিক কারণে নারী বা পুরুষÑকোনো শ্রেণিতেই অন্তর্ভুক্ত করা যায় না, সমাজে এই জনগোষ্ঠীই হিজড়া হিসেবে পরিচিত। চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে, ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ হিজড়া হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। যারপরনাই এই মন্তব্যের কোনো বিকল্প হতে পারে না।
তবে আমি আজ যে সম্পর্কে লেখায় পরিভ্রমণ করতে চাই, আপনাদেরকে ধারণা দিতে চাই, পরিচয় করিয়ে দিতে চাই, সেই বিষয়টি, যা আজকের সমাজকে কলুষিত করার পেছনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবজীবনের অত্যন্ত ভারাক্রান্ত, গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য। যে তথ্যের নিরিখে নিবদ্ধ ওই ভয়ংকর শব্দটি যাকে বলা হয়ে থাকে ‘ট্রান্সজেন্ডার’। যে বিষয়টি সম্পর্কে সমাজের প্রত্যেকেরই একান্তভাবে নলেজে থাকা দরকার বলে আমি মনে করি।
যা বলছিলাম, ট্রান্সজেন্ডারের ব্যাখ্যা বড়ই বেদনাদায়ক। কেননা একজন সুস্থ মানুষের নিজস্ব শরীর, যা কিনা সৃষ্টিকর্তার দান, সেই স্বর্ণকান্তি দানকে উপেক্ষা করে নিজের শরীরের অত্যন্ত গোপন অংশটি সার্জারির মাধ্যমে বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে অপসারণ করে অন্যের জননাঙ্গ বা জেন্ডার ধারণ করে। অর্থাৎ জননাঙ্গ বা জেন্ডার ট্রান্সফারের নিমিত্তে তাদেরকে বলা হয়ে থাকে ট্রান্সজেন্ডার।
আমাদের সৃষ্টিকর্তা, যাঁকে আমরা পিতা বা গড হিসেবে হৃদয়ে ধারণ করে আছি। কেননা যাঁর কোনো বিকল্প নেই। সেই পরমাধ্য নিজের ক্ষমতার বলে পুরুষ ও নারী জননাঙ্গ দিয়ে আমাদেরকে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু এই নিপুণতায় আমরা সন্তুষ্ট নই। যার কারণে শয়তানের প্রলোভনে ওর মাস্টারপ্ল্যানকে আমরা অনুসরণ করি। তাই তো সমাজে আজ এত অবক্ষয়, এত স্পর্ধা। সেই দুর্বিষহ অবিশ্বাস্য স্পর্ধার অহরহ প্রকাশ্য বিকৃত মস্তিষ্কের, বিকৃত রুচির কর্মকাণ্ডের ধৃষ্টতা আজ সমাজের সমীপে তুলে ধরতে চাই। একজন পুরুষ ও নারী জাতির লোমহর্ষক ঘৃণ্য অপকর্মের কথাই লিপিবদ্ধ করতে চাই।
একজন পুরুষ জাতি তার নিজস্ব জননাঙ্গ নিয়ে এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু রুচিবিন্যাস-হেতু পরবর্তী সময়ে নিজেকে নারী হিসেবে পরিচয় দিতে বা ভাবতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আর সেই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে মতামতের ভিত্তিতে, হাসপাতাল সার্জারির মাধ্যমে একজন নারীর জেন্ডার পুনঃস্থাপন করে থাকে। যারপরনাই সমাজে একজন জেন্ডার নারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে এই কার্যক্রমের ব্যবস্থাকে ট্রান্সজেন্ডার নারী বলা হয়। একজন শক্তিশালী পুরুষ মানুষ একজন অবলা নারীর উপাধি ধারণ করে সমাজে ঘুরে বেড়ায় আমরণ।
একইভাবে একজন নারী বা রমণী যখন আপন জননাঙ্গ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে বা পৃথিবীতে আসে, পরবর্তী সময়ে ওই একই উপায়ে সার্জারির দ্বারা জেন্ডার পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে নিজেকে একজন পুরুষ হিসেবে দাবি করে বা পুরুষ স্বত্ব হিসেবে গৌরবান্বিত হতে চায়, তখন ওই বিকৃত রুচিসম্পন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীটি ট্রান্সজেন্ডার পুরুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
কী ভয়ংকর নিষ্ঠুর বাস্তবতা, ভাবা যায়! একজন সুস্থ, সবল, সুন্দর, সুশ্রী সমস্ত ধাতুর সমন্বয়ে গঠিত একটি সুষম দেহের অধিকারী যখন তার বিকৃত রুচির বা বিকৃত মস্তিষ্কের নিমিত্তে এই হিউম্যানয়েড কাজগুলো করে থাকে, চিন্তা করা যায়? কতটা বিস্ময়কর, হতভাগ্য, বিমূঢ়, মূর্খ, কাণ্ডজ্ঞানহীন জীব! সত্যিই বিচিত্র এই পৃথিবীর হিউম্যানরা!
আমেরিকায় বসবাসকারী পিতা-মাতাদ্বয়কে উদ্দেশ করে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনুরোধে বলতে চাই, আপনারা প্রতিনিয়ত সতর্ক থাকুন। কেননা পরে কেঁদে কোনো লাভ হবে না। এত কঠিনভাবে বলছি, আমাকে ভুল বুঝবেন না, প্লিজ। কেননা এ দেশের আঙ্গিকে খুব বেশি সংক্রামিত হচ্ছে এই ট্রান্সজেন্ডার নামক সংক্রামক রোগটি। এমনকি স্কুল টিচারদের মধ্যেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। যাদের দিয়ে ভূত ছাড়ায় তাদের যদি ভূতে পায়? দিস ইজ আমেরিকা! কী স্বাচ্ছন্দ্যবোধ, ভাবতে অবাক লাগে। যেন স্বাধীনতার চরম শিখরে এসে দাঁড়িয়েছে। এমন একটি দেশে বসবাস, যেখানে সন্তানদেরকে শাসন করা যাবে না। কেননা স্কুল কোনো রিপোর্ট পেয়েছে, কী ভয়ানক, আশঙ্কাজনক অবস্থা। পিতা-মাতার হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে সোজা হাজতবাস। বাচ্চারা নিখোঁজ হয়ে যায়। কোথায় তাদের অবস্থান, কেউ জানে না। তাদের জীবদ্দশায় আর কোনো দিন কারও সঙ্গে দেখা মিলবে না। কী নিষ্ঠুর বাস্তবতা।
এর পরেও কথা আছে। আরও বিস্ময়কর পরিস্থিতি, যা এ দেশের আইনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। আঠারো বছর পার হয়েছে কি সন্তানেরা আলাদা হয়ে যায়। তখন তারা স্বনির্ভরযোগ্য। তাদের গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড নিয়ে জীবন শুরু। অপ্রিয় সত্য বলতে, পাপে অন্তর্ভুক্ত জীবন। এতটাই স্বাধীনতার জীবন যে তখন তারা ধরাকে সরা জ্ঞান করে না। একজন বন্ধু বা বান্ধবীতে সন্তুষ্ট নয়। যারপরনাই দুষ্ট বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়ে জীবনকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। সত্যি কথা বলতে, এখানে পিতা-মাতাদের কিচ্ছুটি করার থাকে না। বরং সন্তানদের আদেশমাফিক তারা চলতে বাধ্য। এরই নাম বি-দে-শ। আবার উক্তিটি পুনরাবৃত্তি করছি ‘দিস ইজ আমেরিকা’। তার পরও অনুরোধ থাকবে, চেষ্টা করুন ভালোবাসায়, প্রার্থনা ইবাদতে আপনার আদরের ধন সন্তানটিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার।