লিখতে চেয়েছি মনের বাসনা লিখতে চেয়েছি ক্ষণ
লিখতে চেয়েছি না-বলা কথার সমস্ত আয়োজন।
লিখতে চেয়েছি আঁধার সরিয়ে আলোর উপস্থিতি
দূরে সরে গেছে মোহনমন্ত্র, মায়াভরা সম্প্রীতি।
লিখতে চেয়েছি আরাধনা শেষে পুষ্পিত সেই মুখ
লিখতে চেয়েছি কোমল কাজলে আজন্মের অসুখ।
লিখতে চেয়েছি ঘরহারা মেঘ ফিরে গেছে জলচোখে
কিছুই লিখিনি কিছুই শিখিনি ঝরে গেছি মৃত-শোকে!
লিখতে পারিনি জীবনের কথা মরণের পথে পথে
লিখতে পারিনি যাপনের দায়Ñদুঃখ জমেছে ক্ষতে।
লিখতে পারিনি নবরোদ-ঘেঁষা মানুষের দুটি আঁখি
তুমুল তৃষায় পথে পথে হাঁটি পথভোলা এক পাখি!
লিখতে পারিনি সমুদ্রকূলে স্বরলিপি খোঁজে ঢেউ
লিখতে পারিনি আকাশের বুকে জলছবি আঁকে কেউ!
লিখতে পারিনি নদীতীর ছুঁয়ে গৃহবধূ হেঁটে যায়
অসময়ে এসে দুয়ার দাঁড়ায় ঘরছাড়া জানালায়!
লিখতে চেয়েছি রোদের আঁচলে ছায়া নামে ধীরে ধীরে
লিখতে চেয়েছি হারানো সে মুখ আসেনি যে আর ফিরে!
লিখতে চেয়েছি স্মৃতির পাপিয়া উড়ে গেছে ভিনদেশে
লিখতে পারিনি সুখের গল্প বেদনাকে ভালোবেসে।
লিখতে চেয়েছি সরল আলাপ গরল সুরেতে ভাসি
লিখতে চেয়েছি ফসলের গান কৃষকের চোখে হাসি।
লিখতে চেয়েছি মাঝির মিতালি ঢেউজলে যায় চেনা
সময়ের দাবি না-হলে মেটানো, মহাকালসম দেনা।
লিখতে চেয়েছি, লিখতে পারিনি, অনন্ত দোলাচলে-
যা কিছু লিখেছি, ভাসিয়ে দিয়েছি সময়-চোখের জলে।