পাঠকেরা ঠিকানার উৎসই সংবাদও হওয়া চাই যুৎসই শিরোনামটা এরকম হলেই অধিক যুৎসই হয়, 'পাঠকের কাছে ঠিকানার দায়বদ্ধতা ও লেখকের কাছে ঠিকানার কৃতজ্ঞতা'। তবে শিরোনামটি হতে হয় সংক্ষিপ্ত ও আকর্ষক। অনেক পাঠক পত্রিকা হাতে নিয়ে শুধু শিরোনামগুলোতেই চোখ বুলিয়ে যায়। কিছু পাঠক সংক্ষিপ্ত যুৎসই শিরোনাম ও আঁটোসাটো সংবাদ আগে পড়ে। যেসব সংবাদের শিরোনাম বিভ্রান্তিমুলক এবং স্টোরিও অনেক বড় পাঠক সেসব সংবাদের আগা মাথা পড়ে শর্টকাটে কোনরকম বিষয়বস্তুটা জেনে নিতে চায়। তবে আধুনিক প্রযুক্তির যুগে বিভিন্ন উৎস থেকে পাঠক আগেভাগেই প্রায় সব খবরই তাৎক্ষণিক ভাবে পেয়ে যায়। সেক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত, আঁটোসাটো ও সংক্ষিপ্ত অথচ পরিপূর্ণ সংবাদ যেসব পত্রিকা পরিবেশনের যোগ্যতা রাখে, পাঠক কেবল সেসব পত্রিকাই সংগ্রহ করে পাঠ করে। পাঠক 'ওয়ান বাইট' সংবাদেই আকৃষ্ট হয় বেশী। একসময় টেলিভিশন সাদাকালো ছিলো, পত্রিকাগুলোও সাদাকালো ছিলো। সময়ের প্রয়োজনে টেলিভিশন রঙিণ হলো তো পাল্লা দিয়ে পত্রিকাগুলোও রঙিণ হলো। এখন আবার পত্রিকাগুলো সংবাদের সাথে ঘটনার ভিডিও লিংক দিয়ে দেয় যাতে করে পাঠক তাৎক্ষণিকভাবেই সংবাদের সত্যাসত্য চাক্ষুষ যাচাই বাছাই করে নিতে পারে। কোন কোন পত্রিকা কোন নির্দিষ্ট মতাদর্শ ধারণ করে এবং সেই মতাদর্শের পাঠকের কাছেই পত্রিকার চাহিদা থাকে। অন্য মতাদর্শের পাঠকের কাছে পত্রিকাটি মুল্য হারায়। আবার কিছু পত্রিকা প্রকৃত ঘটনা পরিবেশনের চেয়ে বরং নিজস্ব মতামত চালিয়ে দেয়ার অতি উৎসাহী প্রবনতা প্রকাশ করে ফেলে। যেনতেনভাবে সংবাদ কিছু পত্রিকার সম্পাদনা ও ব্যবস্হাপনা গোষ্ঠীর সর্বজন গ্রহনযোগ্যতা থাকে বলেও পত্রিকা জনপ্রিয় হয়। তবে ব্যক্তিগত দল, মত ও চিন্তাধারার উর্ধে উঠে নিরপেক্ষ সংবাদের আরক পরিবেশন করা সংবাদপত্রের সংখ্যা নগণ্য বলেই এসব পত্রিকা দীর্ঘদন জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে সক্ষম হয়। কিছু পত্রিকা পাঠকের সাথে একটা গ্রাহক- সেবক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই প্রক্রিয়ায় পত্রিকাটি গ্রাহকের প্রাত্যহিক চাহিদার যোগান দেয়। এতে তাজা খবর, খবরের পেছনের খবর, চাকরি- ব্যবসায়- আবাসন প্রভৃতি চাহিদা মেটানোর তথ্য যোগান দেয়। কিছু পত্রিকা লেখকের সাথে সেতুবন্ধ তৈরী করে। পাঠক লেখক সমাবেশ, মত বিনিময় ও প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করে। লেখকের লেখার মান নির্নয়, যাচাই, মুল্যায়ন ও স্বীকৃতি দান করে। কিছু পত্রিকা নিজেরাই নিজেদের সংবাদ পরিবেশন করে বা নিজেদের ঢাকঢোল পিটিয়ে নিজেদের সস্তা করে তোলে। কিছু পত্রিকা অপরের ব্যক্তিগত কুৎসা প্রচার করে আপন ব্যক্তিত্বকে গভীর খাদে ফেলে দেয়। কিছু পত্রিকা আগ বাড়িয়ে অলীক ভবিষ্যদ্বানী প্রচার করে অর্বাচীনতার পরিচয় দেয়। কিছু পত্রিকা অন্যান্য পত্রিকার জনপ্রিয় লেখাগুলো কপি করে ছেপে দেয় এবং সেসব লেখার রতে পরতে এমন সব নির্বুদ্ধিতার ছাপ রেখে যায় যাতে সচেতন পাঠক সহজেই এসব তস্করাচার ধরে ফেলে। তবে দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় ঠিকানা এই প্রবাসে তার শক্তপোক্ত অবস্হান আয়ত্বে রাখতে পেরেছে। ঠিকানা সংবাদ প্রকাশে বস্তুনিষ্ঠ থেকেছে। পাঠকের প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সরবরাহে আন্তরিক থেকেছে এবং সর্বোপরি লেখকদের সাথে সেতুবন্ধ রচনায় সম্ভব সবকিছু করার সর্বোচ্চ প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। ঠিকানার জন্মদিন উপলক্ষে সকল লেখকের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিবাদন ও শুভকামনা জানাচ্ছি।
লেখক : ছড়াকার ও সাবেক ব্যাংকার