Thikana News
০২ অগাস্ট ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫
নিজের পছন্দে পোস্টিং নিয়ে প্রেমিকের দেশে রাষ্ট্রদূত!

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাদিয়া  ফয়জুন্নেসার মগের মুল্লুক

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাদিয়া  ফয়জুন্নেসার মগের মুল্লুক
ব্রাজিলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুন্নেসা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মগের মুল্লুক বানিয়ে রেখেছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনিই সম্ভবত একমাত্র নারী কূটনীতিক, যিনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিজের ইচ্ছামত পদায়ন হয়েছেন প্রেমিকের দেশে। ব্রাজিলে তিনি নিজের খেয়ালখুশী মত দূতাবাস চালাচ্ছেন। ইচ্ছামত অফিস করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
২০১৮ সালের ১ জুন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল হিসাবে যোগদান করেন বিসিএস ১৮তম ব্যাচের (পররাষ্ট্র ক্যাডার) কর্মকর্তা সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর সময় নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে সরাসরি সেবা বন্ধ ছিল। প্রবাসীরা ডাকযোগে আবেদন পাঠাতেন। আবেদনের সঙ্গে মানি অর্ডারের অর্থও জমা দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু এসব আবেদনপত্র কনস্যুলেটে পৌঁছলেও অফিসিয়ালি আর জমা দেখানো হয়নি। প্রেরক কোনো রশিদও পাননি। ভূক্তভোগীরা না পেয়েছেন পাসপোর্ট, না পেয়েছেন নো-ভিসা। ওইসময় কনস্যুলেট থেকে দুই শতাধিক প্রবাসীর ফিসহ পাসপোর্ট, নো ভিসা রিকোয়ার্ড এবং অন্যান্য সেবা চেয়ে করা আবেদনপত্র গায়েব হয়ে যায়। আবেদনকারীদের প্রায় ৭০ হাজার ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস তদন্ত করে এর সত্যতা পায়। 
যাদের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ তাদের রক্ষা করেন সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার পদোন্নতি আটকে দিয়ে তাকে ভারতের মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের উপ-হাই কমিশনার হিসাবে বদলী করে। কিন্তু ওপর মহলে তদবিরের জোরে রক্ষা পান সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রীর মর্যাদায় জিয়াউদ্দিন আহমেদ অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় তার। তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে ডিঙ্গিয়ে জিয়াউদ্দিনের মাধ্যমে নিজের সব বাধা অতিক্রম কাটিয়ে ওঠেন সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। বরং কনসাল জেনারেল হিসাবে বদলী ঠেকিয়ে রাষ্ট্রদূত হিসাবে প্রমোশন নিয়ে চলে যান ব্রাজিলে। কেন তিনি ব্রাজিল বেছে নিলেন তা নিয়েও রয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।  
একাধিক সূত্র জানায়, নিউইয়র্কে কনসাল জেনারেলের দায়িত্ব পালনকালে একজন ব্রাজিলিয়ান শেফের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। এই অভিযোগে স্বামী-সন্তান তাকে ছেড়ে যান। এমনকী ব্রাজিলিয়ান প্রেমিককে নিয়ে নিউইয়র্কের রুজভেল্ট আইল্যান্ডে সরকারি বাসভবনে লিভ-টুগেদার করতেন সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। এ বিষয়টি তখন ওপেন সিক্রেট ছিল। কিন্তু অ্যাস্বাসেডর অ্যাট লার্জ জিয়াউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বিশেষ সখ্যতার কারণে সাদিয়া ফয়জুন্নেসা সবকিছু সামলে নেন। তিনি যে কোনো মূল্যে আমেরিকায় থেকে যেতে চান এবং প্রেমিকের ইচ্ছামত পোস্টিং নেন ব্রাজিলে। সেই থেকে সাদিয়া ফয়জুন্নেসা ব্রাজিলেই রয়েছেন। বাংলাদেশে জাতীয় দিবস উদযাপন ছাড়া আর কোনো অর্জন নেই তার ঝুলিতে। 
এদিকে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের তদন্তে অর্থ তছরুপের প্রমাণ পাওয়া গেলেও তা চাপা দিয়ে রেখেছিলেন সাদিয়া ফয়জুন্নেসা। পরে স্বরাষ্ট্র সচিব নিউইয়র্ক কনস্যুলেট পরিদর্শনে এলে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা এবং তদন্ত প্রতিবেদন তার নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দোষীদের কনস্যুলেট থেকে বহিস্কার করেন। অভিযুক্ত একজন সহকারী সচিবকে দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দিলেও তিনি চাকরি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের একজন নেতার সঙ্গে বর্তমানে পিৎজার ব্যবসা করছেন। সাদিয়া ফয়জুন্নেসার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। 
ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাদিয়া ফয়জুন্নেসা রাষ্ট্রদূত হিসাবে যোগদানের পর থেকে কূটনীতিক অগ্রগতি নেই। বাণিজ্য বিষয়ক কোনো অগ্রগতি নেই। তিনি ঠিকমত অফিস করেন না। দূতাবাসে তিনি একটি নিজম্ব বলয় গড়ে তুলেছেন। অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তিনি কাউকে পরোয়া করেন না। ফলে ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাজে শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। এ ব্যাপারে ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসে ফোন করেও রাষ্ট্রদূত সাদিয়ার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। 


 
কমেন্ট বক্স



9