বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব মিশিগান (BAM) সফলভাবে আয়োজন করলো ১৬তম বাংলাদেশি-আমেরিকান ফেস্টিভ্যাল যা অনুষ্ঠিত হয় ২ ও ৩ আগস্ট ওয়ারেন সিটি স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনের এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন রেকর্ডসংখ্যক প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের খ্যাতনামা শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন।
এ উৎসবে গেস্ট অব অনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মিশিগানের সেক্রেটারি অব স্টেট জোসেলিন বেনসন, যুক্তরাষ্ট্র সিনেট প্রার্থী আব্দুল সৈয়দ, সিটি অফ ওয়ারেন মেয়র লরি স্টোন, সম্মানিত মিশিগান স্টেট সিনেটর ম্যালোরি ম্যাকমরো, স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ টনিয়া মেয়ার্স ফিলিপস-এর প্রতিনিধিত্ব করেন- রুথ জনসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর এলিসা স্লটকিন, মিশিগান ইমিগ্রান্ট অ্যান্ড রিফিউজি কাউন্সিল থেকে আহমাদ আলকাবি ও ইয়ারা শাদ্দা, স্টেট সিনেটর (ডিস্ট্রিক্ট ১০) পদপ্রার্থী অ্যামান্ডা ট্রেপ্পা, অ্যাটর্নি জেনারেল পদপ্রার্থী এলি সাভিট, ইউএস কংগ্রেস পদপ্রার্থী ক্রিস্টিনা হাইনস, স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ মাইক ম্যাকফল স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভ রন রবিনসন।
আমন্ত্রিত অতিথির মধ্যে ছিলেন নিউইয়র্ক থেকে আগত বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক ট্রাস্টি ও বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল, অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল হাসিম হাসনু, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ট্রাস্টি জুনেদ চৌধুরী, বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান রুহেল, বাংলাদেশি আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হান জামান রানা, অরল্যান্ডো থেকে আগত সাংবাদিক জুয়েল সাদত। এছাড়াও উপস্থিতি ছিলেন হেমট্রামিক সিটির মেয়র পদপ্রার্থী কাউন্সিলর মুহিত মাহমুদ, ট্রয় সিটি কাউন্সিল পদপ্রার্থী সাদেক রহমান সুমন, মিশিগান ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান শাহিন, এমআইবিএডিসি’র প্রেসিডেন্ট সুলেমান বাহার, সাবেক কাউন্সিলম্যান সিটি অফ হ্যামট্রামেক নাইম চৌধুরী।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলম্যান জনাথন লেফার্টি, তোফায়েল হোসেন, সানী জায়গীরদার, গিয়াস তালুকদার, ‘বিএএম’ উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আহাদ, ‘বিএএম’ ট্রাস্টি মেম্বার আহাদ মোহাম্মদ, ‘বিএএম’-এর সাবেক সভাপতি ও ট্রাস্টি মেম্বার মতিন চৌধুরী, ফিটজেরাল্ড স্কুলের সাবেক ফুটবল কোচ গ্যারি স্কোপ, ওয়ারেন পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এর ক্যাপ্টেন ম্যাথিউ ডিলেনবেক, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার চার্লস রাস্টন, ‘বিএএম’ উপদেষ্টা লুৎফুর বারী নিয়ন, ক্রাইম কমিশনার ও ‘বিএএম’ উপদেষ্টা সুমন কবির প্রমুখ।
উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জাবেদ চৌধুরী, সঞ্চালনায় ছিলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপদেষ্টা সুমন কবির ও প্রচার সম্পাদক তাহমিদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে ফেস্টিভ্যালের শুভ উদ্বোধন করা হয়। শুরুতে বাংলাদেশের মাইলস্টোন স্কুল ট্র্যাজিতে নিহতদের ও নিউইয়র্কে আততায়ীর গুলিতে নিহত পুলিশ অফিসার দিদারুল আলম এর স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। উল্লেখ্য যে, র্যাফেল ড্র থেকে প্রাপ্ত আয়ের একটা অংশ মাইলস্টোন স্কুলে আহতদের এবং নিহত পুলিশ অফিসার দিদারুল ইসলামের পরিবারের সহায়তায় প্রদান করা হবে।
প্রথম দিনে মঞ্চ মাতান জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ বেলি এবং লোকগানের প্রাণপুরুষ বাউল কালা মিয়া, তরুণ সংগীত শিল্পী অনিক রাজ, এবং স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ নৃত্য পরিবেশন করেন।
দ্বিতীয় দিনে হাজারো দর্শকের উপস্থিতিতে জনপ্রিয় পপ তারকা প্রীতম হাসান ও প্রতীক হাসান ভ্রাতৃদ্বয় দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেন। এছাড়াও অংশ নেন স্থানীয় ব্যান্ড টেন এন হাফ মাইল ও হৃদম অব বাংলাদেশ। হাওয়াইন গিটারে দেশের গান বাজিয়ে দর্শকদের মন জয় করেন কামাল উদ্দিন।
সমাপনী পর্বে র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। সব শেষে সভাপতি জাবেদ চৌধুরী দুই দিনের ফেস্টিভ্যাল সফলভাবে সম্পন্ন করায় মিশিগান বাসী ও সকল স্পন্সর, সংগঠক এবং ফেস্টিভ্যালের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
দুই দিনের সাংস্কৃতিক পর্ব সঞ্চালনায় ছিলেন শারমীন তানিম, অদ্বিতি বর্ণা, রাহি এহিয়া। উৎসব উপলক্ষে ‘বিএএম’ তিনটি গৌরবজনক সরকারি প্রোক্লেমেশন (ঘোষণা পত্র) লাভ করে- মিশিগান রাজ্য সরকার কর্তৃক গভর্নর, স্টেট সিনেটর ও স্টেট রিপ্রেজেন্টেটিভদের স্বাক্ষরিত একটি প্রোক্লেমেশন, মার্কিন সিনেটর এলিসা সটকিন কর্তৃক প্রদত্ত একটি প্রোক্লেমেশন, যা বাংলাদেশি-আমেরিকান কমিউনিটির অবদানের স্বীকৃতি দেয়, ওয়ারেন সিটির মেয়র লরি স্টোন প্রদত্ত একটি প্রোক্লেমেশন, যা এই উৎসবের অব্যাহত ঐতিহ্য ও সাফল্যকে সম্মান জানায়।
‘বিএএম’ -এর সভাপতি জাবেদ চৌধুরী বলেন, “এই বছরের উৎসব আমাদের জন্য একটি ইতিহাস তৈরি করেছে। হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণ, প্রখ্যাত শিল্পীদের পরিবেশনা এবং রাষ্ট্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি- সব মিলিয়ে এটি ছিল এক অবিস্মরণীয় সংস্কৃতিক মহামিলন।
‘বিএএম’-এর পক্ষ থেকে সকল অংশগ্রহণকারী, শিল্পী, স্বেচ্ছাসেবক, স্পন্সর, নিরাপত্তা বাহিনী এবং ওয়ারেন সিটি প্রশাসনকে জানানো হচ্ছে আন্তরিক ধন্যবাদ, যারা এই উৎসবকে সফল করে তুলেছেন।




