পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের টুপিতে নৌকা প্রতীক রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট সরকার। ব্রিটিশ ভারত আমলের বেঙ্গল পুলিশের ক্যাপ, পোশাকে প্রচণ্ড বিরোধিতা করা হয়। তারা নৌকা প্রতীক উঠিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেয়। ঐতিহাসিক এই প্রতীক প্রত্যাহার করার বিরোধিতা আসে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্য থেকে। ফলে এ পরিকল্পনা থেকে সরে আসে সরকার। আসলে তৎকালীন সরকারের কয়েকজন উচ্চপদস্থ অফিসারের ইচ্ছা অনুযায়ীই সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ থেকে সরে আসেন। এই বাহিনীর সাধারণ সদস্য, অফিসারদের মতামত নেওয়া হয়নি। তাদের মনোভাবের প্রতিফলন ঘটেনি। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সরকারি কর্মচারী হিসেবে সরকারের কোনো সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার সুযোগ নেই তাদের। সরকারি সিদ্ধান্ত তাদেরকে মেনে নিতে হয়।
নৌকা একটি দলের নির্বাচনী প্রতীক। দলীয় প্রতীক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাথার ক্যাপে স্থান পাওয়াটা স্বাভাবিক নয়। জামায়াতে ইসলামী দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তাদের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা বিচার আদালতের প্রতীক। এটি যথার্থ নয় বলে উচ্চ আদালত জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা প্রতীক রাজনৈতিক ব্যবহারে নিষিদ্ধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াত দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ব্যবহার করতে পারছে না। বর্তমান সরকার দলীয় প্রতীক নৌকা জাতীয় প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা চলছে। শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োজিত উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধীরা আওয়ামী লীগ-বিরোধী কঠোর অবস্থান নিয়ে আছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে সাংবিধানিক, আইনগত জটিলতা থাকায় তারা সহজেই তা পারছে না। আওয়ামী লীগ, নৌকা নামই বৈষম্যবিরোধীরা অপসারণের পক্ষে। বরগুনায় নৌকার জাদুঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা এবার চাচ্ছে দলীয় প্রতীক হিসেবে নৌকাকে নিষিদ্ধ করতে। এ লক্ষ্যে তারা আইনি দিক খতিয়ে দেখছে।