Thikana News
২২ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

আলাদা ব্যানারে এক দফার আন্দোলনে নামছে ৩৬ দল

আলাদা ব্যানারে এক দফার আন্দোলনে নামছে ৩৬ দল



 
 দীর্ঘ এক বছর উপজেলা-জেলা-বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সক্রিয় করে শক্তি সঞ্চয় করে সরকারের পতন ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে এবার চূড়ান্ত পর্যায়ের রাজপথে আন্দোলনে নামছে মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। এক দফার এই আন্দোলনের সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে ডান-বাম-মধ্যপন্থী সমমনা দলগুলো। আজ ১২ জুলাই বুধবার সরকারের পদত্যাগে এক দফার কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্তের পর গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গুলশানে দফায় দফায় বৈঠকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। পূর্বের সরকার পতনে ১০ দফা ও রাষ্ট্র সংস্কারে ২৭ দফার কর্মসূচির সঙ্গে যৌথ কর্মসূচিতে ৩১ দফার নতুন রূপরেখা যুক্ত হচ্ছে। এই আন্দোলনে ৩৬টি দল একাদশের ঐক্যফ্রন্টের মতো এক ব্যানারে থাকবে না। সবাই নিজ নিজ ব্যানারে পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করবে। হরতাল-অবরোধসহ অনেক প্রস্তাব এলেও আপাতত সংঘাত হতে পারে-এমন কর্মসূচিতে যাচ্ছে না বিএনপি। বিদেশি কঠোরতায় নরম সুরের পথেই জুলাই পার করবে দলটি। তবে আন্দোলনে ঢাকাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বেশি।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে বিএনপি ও তার মিত্ররা। এখন পর্যন্ত গণমিছিল, গণ-অবস্থান, মিছিল, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, পদযাত্রার মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তবে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর দলীয় দফাও ছিল। সব দলের নানা দাবির সমন্বয়ে একটি অভিন্ন দফার ভিত্তিতে দাবিনামার বিষয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় ঈদুল ফিতরের পর থেকে বিএনপি ও তার মিত্ররা আলাদাভাবে কর্মসূচি করছে। এক দফা ঘোষণার পর ফের মাঠে গড়াচ্ছে যুগপৎ আন্দোলন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচন-বিষয়ক তথ্যানুসন্ধানী মিশন ১৬ দিনের সফরে বর্তমানে ঢাকায়। এ ছাড়া ১১ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নাগরিক নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় পৌঁছেছে। চার দিনের সফরে উজরা জেয়ার সঙ্গে তার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও ইউএসএইডের এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর। তাই কিছুটা আগেই সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এই এক দফা আন্দোলনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিএনপি বিদেশি প্রতিনিধিদের কাছে বার্তা পৌঁছাবে যে, তারা এই সরকার পতন আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপে নেমেছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দলের নীতিনির্ধারণী নেতা এবং যুগপতে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে নানা রকম কর্মসূচির প্রস্তাব এসেছে। এর মধ্যে ছিল হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ, ঘেরাও, লংমার্চ, পদযাত্রা, অবস্থান, অনশন, মানববন্ধন। তবে বিএনপি এখনই হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যেতে চায় না। এবার তাদের কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য হবে রাজধানীতে শক্তি প্রদর্শন করা। এ জন্য আন্দোলনের রোডম্যাপে রয়েছে ঢাকায় অবস্থান ধর্মঘট, ‘চলো চলো ঢাকা চলো’, সচিবালয় ঘেরাও, নির্বাচন কমিশন ঘেরাও, গণভবন ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি। যদিও প্রতি সপ্তাহেই এখন একটি করে বড় কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে যদি সরকারি দল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ কোনো মাধ্যমে কোনো ধরনের উসকানি আসে, তাহলে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি। সে ক্ষেত্রে এখন যেসব কর্মসূচির বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না, সেসব কর্মসূচিতেও যেতে পারে দলটি।
এসব বিষয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বাংলাদেশ এখন পরিবর্তনের মুখে দাঁড়িয়ে। মানুষ এ সরকারের পরিবর্তন চায়। চলমান আন্দোলনকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। সে বিষয়ে আমাদের ঐকমত্য হয়েছে।
বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, আগামী দিনের আন্দোলন হবে ঢাকামুখী। ঢাকা নিয়ন্ত্রণে না আনলে আন্দোলন সফল হবে না। আমাদের আন্দোলন দেশবাসীর ভোটের অধিকার রক্ষার আন্দোলন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বিএনপি কখনোই বিশ্বাস করে না যে, বিদেশি কোনো শক্তি এসে আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় নিতে হবে। তিনি বলেন, সরকার বিদেশিদের কাছে নালিশ করে এবং বিভিন্ন সময় বলেছে, বিএনপির জনসমর্থন নেই। আমরা আবারো দেখিয়ে দিতে চাই দেশের বিপুল সংখ্যক জনগণ এই সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
কমেন্ট বক্স