আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপ, তাঁর স্ত্রী গুলশান আরা মিয়া, ছেলে ইভান সোবহান মিয়া ও মেয়ে আনিশা গোলাপ মিয়ার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ জানুয়ারি রোববার ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী আবদুস সোবহান গোলাপ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে থাকা সম্পদ ক্রোকের তালিকায় আছে মিরপুরের একটি পাঁচতলা বাড়ি। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আটটি হচ্ছে সিঙ্গেল রেসিডেনসিয়াল কন্ডো ইউনিট। আরেকটি হচ্ছে ডুয়াল ফ্যামিলি ইউনিট। এর বাইরে আবদুস সোবহান গোলাপ, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা ৫৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে গত ২ অক্টোবর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে, আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ পাচার, বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। আবদুস সোবহান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট আবদুস সোবহান গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
ঢাকার আদালদের নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রে কিভাবে বাস্তবায়িত হবে জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞ অ্যাটর্নি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম ডাইরেক্টর মঈন চৌধুরী ঠিকানাকে বলেন, আব্দুস সোবহান গোলাপ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক কীনা তা আগে খুঁজে বের করতে হবে। তাছাড়া আদালত এখনো মামলার রায় দেননি। সাধারণত, এ ধরনের মামলায় রায় হলে বাংলাদেশের সরকার অকাট্য প্রমাণসহ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।
এ ব্যাপারে আইন কি বলে? জানতে চাইলে অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অন্য দেশের আদালত যুক্তরাষ্ট্রের একজন বাসিন্দার দ্বারা ক্রয়কৃত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিতে পারে সাধারণত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং চুক্তির মাধ্যমে, যদি বিশ্বাস করা হয় যে সম্পদগুলো উভয় দেশের আইন লঙ্ঘনকারী অবৈধ কার্যকলাপের সাথে যুক্ত। এই প্রক্রিয়াটি জটিল। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আইনি পদ্ধতির যত্ন সহকারে বিবেচনা করা প্রয়োজন।