নির্বাচন শেষ। শপথ গ্রহণ শেষ। মন্ত্রিসভাও গঠিত হয়েছে। নবীন-প্রবীণে গঠিত নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিয়ে যার যার দপ্তরে বসে পড়ে দায়িত্ব পালনও শুরু করে দিয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে এখন আর তেমন কথাবার্তা নেই। রাজপথে হুংকার, প্রতিবাদ আছে বিরোধীদের। যেটুকু উত্তাপ আছে, তা নির্বাচন-পূর্ব উত্তাপের রেশ। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের খবরের কথাও ইতিমধ্যে দেশে ও দেশের বাইরে সবাই জেনে গেছে।
তবে এখনো কথাবার্তা হচ্ছে, সে আলোচনার বেশিটাই মন্ত্রীদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম, সাফল্য, দক্ষতা নিয়ে। আলোচনা হচ্ছে মন্ত্রীদের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে, সেসব নিয়ে। রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী যে প্রতিক্রিয়া তার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক যে চ্যালেঞ্জ, সেসব চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোচনা অধিক কেন্দ্রীভূত।
পৃথিবীর ইতিহাস বলে, দায়িত্ব পাওয়া যত আনন্দের, দায়িত্ব পালন আনন্দের তুলনায় অনেক বেশি বেদনার, ব্যর্থতার। ক্ষমতাবানদের ব্যর্থতা দুর্বলদেরও হতাশ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্যতা বিবেচনায় সকলের দায়িত্ব অর্পণ করে দিয়েছেন। তাই সব কাজের জন্য যদি সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর দায় চাপিয়ে নিজেরা সুবোধ হওয়ার চেষ্টা করি, তাহলে কোনো কাজই হবে না, যা অতীতেও লক্ষ করা গেছে। গণমানুষের প্রত্যাশা এবার অতীতের মতো কিছু ঘটবে না।
নতুন সরকার কী কী চ্যালেঞ্জ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে, সেসব চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ এবং টিভি চ্যানেলের টক শোতে রীতিমতো আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে সেসব প্রতিবেদন আর টক শোর আলোচনা থেকে এ কথা পরিষ্কারভাবে উঠে আসছে, দেশে আর্থিক দুর্গতিই প্রধানতম সংকট, দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পথে বড় বাধা। ‘নতুন সরকারের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ’ শিরোনাম ধারণ করে ঠিকানার ১০ জানুয়ারি সংখ্যার প্রথম পাতায় একটি তিন কলাম নিউজ প্রকাশিত হয়েছে।
খবরের বলা হয়েছে, টানা চতুর্থবার এবং মোট পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন সহজ হয়তো হবে। তবে বড় জয়ের বড় দায়। মানুষের প্রত্যাশা ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আশা অনেক বেশি। কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনার অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হবে পশ্চিমা বিশ্বের নেতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তন ঘটানো। এ ছাড়া সমাজের বৈষম্য ঘোচানো, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা, বিদেশে মুদ্রা পাচার কমানো, কৃষকদের স্বার্থরক্ষাÑপ্রধানত এসব বিষয়কে প্রধান প্রধান চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেসব মোকাবিলার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ ছাড়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্য ভোট নিয়ে যেসব প্রশ্ন আছে, তারও জবাব দিতে হবে জনগণকে সেবা প্রদান ও সুশাসন নিশ্চিতকরণের মধ্য দিয়ে। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে দেশের উন্নয়নধারা অব্যাহত থাকবেÑএই বিশ্বাস নিয়েই দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দিয়েছে। মানুষ এর প্রতিদান চায় সঠিক সেবালাভের মধ্য দিয়ে।