বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়ে গেল গত ৭ জানুয়ারি, তার ফলাফলও প্রকাশিত হয়ে গেছে। দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশানুযায়ীই ফলাফল হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তা নিশ্চিত। গত ২০২৩ সালটা বলা যায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং নির্বাচনের পরের বিষয়টিই ছিল অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা।
বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট, বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া, আমদানি-নির্ভর বাংলাদেশে ডলার সংকটের প্রভাব কী ভয়াবহ হতে পারে, সেসব নিয়ে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়।
পুরোনো বছর শেষ হয়ে ইংরেজি নতুন বছর ২০২৪ সালেও অর্থনীতির সংকট অব্যাহত থাকবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের একেবারে সূচনাকালে সংকট কেটে যাওয়ার আভাস মিলছে। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন সরকার গঠনের পর অর্থনীতির দুর্বলতা আরও কেটে যাবে। বিদেশের বিভিন্ন অর্থ প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান, যারা বাংলাদেশে নিয়মিত ডলার প্রেরণ করে, তাদের কাছ থেকেও এমন আভাসই পাওয়া যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলও (আইএমএফ) সে রকম অভাসই দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, নির্বাচনের পর সরকারের ওপর ছোট ছোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। আইএমএফের কাছে যখন বাংলাদেশ ঋণের জন্য আবেদন করে, তখন নানা রকম কথাবার্তা হয়। প্রথমে অনেকে বলার চেষ্টা করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে আইএমএফ হয়তো বাংলাদেশকে ঋণদানে সম্মত হবে না। শেষ পর্যন্ত বেশ কিছু শর্তে বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়া হয়। তখন সমালোচকদের পক্ষে বলা হয়, আইএমএফ-প্রদত্ত শর্ত বাংলাদেশ পূরণ করতেও পারবে না, ঋণও পাবে না। যাহোক, শত শঙ্কা, শত সমালোচনা সব সাথি করেই বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। রিজার্ভ পরিস্থিতি যখনই নিম্নমুখী, তখন তো রীতিমতো শঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে অন্য আমদানি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ডলার সংকটের কারণে।
চূড়ান্ত পর্যায়ে কোনো শঙ্কাই বাস্তব হয়নি।
বাংলাদেশ চলছে। আইএমএফের সর্বশেষ খবরটি ঠিকানার ইংরেজি নতুন বছর ২০২৪’র প্রথম সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছে। ‘জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখে আইএমএফের শর্ত পূরণ করল বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি আশার কথাও শুনিয়েছে। আইএমএফ এখন বলেছে শক্তিশালী হচ্ছে রিজার্ভ। প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত খবরটি শুরু হয়েছে এভাবে : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানামুখী তৎপরতার পর রিজার্ভ বাড়ছে। ১৯ বিলিয়নে নেমে যাওয়া রিজার্ভ এখন ২৬ বিলিয়নের মতো ডলারের ঘরে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে তথ্য দিচ্ছে, তাতে বলা হয়েছে, পরপর টানা দুই সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে ২২৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা অত্যন্ত ভালো এবং আশাপ্রদ লক্ষণ।
বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কামনা করেন। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। প্রবাসী-স্বদেশি সবাই আনন্দে থাকি।