Thikana News
০৬ অক্টোবর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

বসফরাস প্রণালীর দুইকুল ঘিরে ইস্তাম্বুল শহর

বসফরাস প্রণালীর দুইকুল ঘিরে ইস্তাম্বুল শহর



 
বেড়ানোর শখ কমিবেশি সকলের মধ্যে আছে। এই বিনোদনটি যেমন দূরের তেমনি অনতিদূরের হতে পারে। তবে দূরের ভ্রমণ ব্যয়বহুল বটে। আর সেখানে সামর্থ্যের বিষয়টি জড়িত আছে বলেই বিলাসবহুল ভ্রমণ সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তথাপি,সবকিছু ব্যতিরেকে এই বিনোদনের প্রতি সবার কমবেশি আগ্রহ মন ও মননের মধ্যে বিদ্যমান  থাকে। আগ্রার তাজমহল বা নায়াগ্রার জলপ্রপাত বই পুস্তকে পড়ে তার রহস্য উন্মোচনে পুলকিত হলেও তা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করার অনবদ্য আনন্দ সেখানে নেই। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এর ইচ্ছাপূরণ নেতিবাচক হলেও কিছু কিছু মানুষের মধ্যে অনিহার প্রবণতা গৃহবন্দি করে রাখে,যদিও তারা বিত্তশালী। জানিনা, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তারা কেন এমন হয়? আমার মধ্যেও এরকম অনিহা প্রকট না হলেও কিছুটা আছে বলেই ভ্রমণের ব্যাপারে আমিও পিছিয়ে আছি। দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে আসছি। অথচ দেশের বাইরে তেমন একটা যাইনি। পৃথিবী দেখার তাগিদে আমার ঘুরে বেড়ানোর শখ যদি প্রবল হতো তবে চল্লিশ বছরে পৃথিবীর অনেককিছু দেখতে পারতাম। অমর খৈয়াম লিখেছিলেন-“ভাবুক আর ভ্রমণকারী দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দরবেশ”। তাঁর কথা অনুযায়ী ভাবুক বা দরবেশ কোনটাই হতে পারিনি। 

এই বৎসর (২০২৫) সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু যাওয়া হয়ে উঠেনি। কারণ,বড় ভাইর পরিবার সহ তাঁর শালিকা তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে যাওয়ার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন দেখে আমিও সস্ত্রীক ইস্তাম্বুল বেড়াতে রেডি হয়ে গেলাম। ২০আগস্ট জার্মানির ‘লুফতান্সা’ এয়ার লাইন্সে ফ্রাঙ্কফুর্ট হয়ে ইস্তাম্বুল এয়ারপোর্টে অবতরণ করলাম। 
২১ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ইস্তাম্বুলের বাইজেন্টাইন হোটেলে পৌঁছে একটু বিশ্রাম নিলাম। রাত একটায় হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লাম নৈশভোজের উদ্দেশ্যে। প্রথমে মনে হলো এতো রাত কোন রেস্টুরেন্ট খোলা থাকার কথা নয়। রাস্তায় এসে দেখলাম অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট খোলা রয়েছে। পর্যটকদের নিয়ে খুব ব্যস্ত এলাকা। তাই রাত ৩টা পর্যন্ত রেস্তোরাঁগুলো খোলা থাকে। ডিনার শেষ করে হোটেলে ঘুমিয়ে পড়লাম। 

পরেরদিন ছিল শুক্রবার অর্থাৎ ইস্তাম্বুলে আমাদের প্রথম সকাল। ঐদিন লন্ডন থেকে আরো দুইজন এসে আমাদের সাথে যোগ দিলে সবমিলিয়ে আমরা মোট আটজন হয়ে গেলাম। হোটেল লবিতে সকালের নাশতা শেষ করে ধীরে ধীরে জুমার নামাজের জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম। তুরস্কের বিখ্যাত মসজিদ সুলতান আহমেদ মসজিদে(ব্লু মসজিদ নামে খ্যাত)আমরা সবাই জুমার নামাজ আদায় করে ইস্তাম্বুল শহর দেখার ব্যবস্থা করতে লাগলাম। যে ঐতিহাসিক মসজিদে নামাজ আদায় করলাম তার নির্মাণ কাজ ১৬০৯খিস্টাব্দ থেকে শুরু করে ১৬১৬খিস্টাব্দে সম্পন্ন করেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান আহমেদ বখতি। পাঁচটি প্রধান গম্বুজ,ছয়টি মিনার এবং আটটি গৌণ গম্বুজ সম্পন্ন ব্লু মসজিদের স্থপতি ছিলেন সিদেফকর মেহমেদ আগা। উক্ত মসজিদে একসাথে দশ হাজার মুসল্লির নামাজ আদায় করার ধারণক্ষমতা রয়েছে। ব্লু মসজিদের অতি সন্নিকটে রয়েছে আরেকটি পুরনো বিখ্যাত মসজিদ। যার নাম হাজিয়া সোফিয়া মসজিদ। ১৪৫৩খ্রিস্টাব্দে কনস্টান্টিনোপল এর পতনের পর অটোমান সাম্রাজ্যের তৎকালীন মুসলিম সম্রাট ফাতিহ সুলতান মুহাম্মদ পুরনো চার্চকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। ১৪৫৩খ্রিস্টাব্দের ১জুন সুলতান মুহাম্মদ উক্ত মসজিদে সর্বপ্রথম জুমার নামাজ আদায় করে হাজিয়া সুফিয়া মসজিদের শুভ সূচনা করেন। 

ইস্তাম্বুল তুরস্কের রাজধানী না হলেও এই শহর ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের দিক থেকে অনেক সমৃদ্ধ।  যেখানে প্রায় ২,৭৭৫ বছর ব্যাপি দ্য ইস্টার্ন রোমান,দ্য বাইজেন্টাইন ও অটোমান সাম্রাজ্যের সম্রাট ও সুলতানগণ রাজ্য শাসন করে গিয়েছেন । যারফলে তাদের প্রধান প্রধান প্রাসাদগুলো ইস্তাম্বুল শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও অটোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিলো ইস্তাম্বুল। শুধুমাত্র অটোমান সাম্রাজেই কমপক্ষে দশটি মেজর প্রাসাদ ছিল যেখানে বসে সম্রাটগণ সাম্রাজ্য শাসন করেছেন। 
‘তোপকাপি’ ইস্তাম্বুলের সবচেয়ে পুরোনো প্রাসাদ বলে বিবেচিত। উসমানীয় সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সুলতান মুহাম্মদ ১৪৫০খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে প্রাসাদটির কাজ শুরু করে তা ১৪৭০খ্রিস্টাব্দে সম্পন্ন করেন। ছোটবড় মিলিয়ে সর্বমোট প্রাসাদের সংখ্যা কতো তার সঠিক পরিসংখ্যান অজানা,তবে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের পর অটোমান সাম্রাজ্যের আমলে সুলতানগণের দশটি প্রাসাদের খোঁজ পাওয়া যায়। ‘ডলমাবাহজে’ প্রাসাদটি অটোমান সাম্রাজ্যের শেষ প্রাসাদ যেখানে কামাল পাশা আতাতুর্কও চার বছর দেশ পরিচালনা করার সময় পেয়েছিলেন। ১৯২৩ সালের ২৯অক্টোবর অফিসিয়ালি অটোমান সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি ঘটিয়ে রিপাবলিকান তুরস্কের গোড়াপত্তন ঘটেছিল এবং তার প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মোস্তফা কামাল পাশা আতাতুর্ক। তিনি আধুনিক তুরস্কের জনক বলে অভিহিত। মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক তাঁর শেষ জীবন দলমাবাহজে অতিবাহিত করেছেন। ১৯৩৮সালের ১০নবেম্বর উক্ত প্রাসাদেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

ইস্তাম্বুল শহর পৃথিবীর বিখ্যাত ২০টি অন্যতম পর্যটন নগরীর মধ্যে একটি। গত বছর(২০২৪) এই শহরে পর্যটকদের সংখ্যা ছিল আঠারো মিলিয়নের অধিক। ১৬মিলিয়নের অধিক ইস্তাম্বুল শহরের জনসংখ্যা যা পৃথিবীর ১৫তম জনবহুল শহর হিসেবে পরিচিত। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী এটি পৃথিবীর একমাত্র শহর যা ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশে তার অবস্থান। মারমারা ও কৃষ্ণ সাগরের মিলনস্থল থেকে বেরিয়ে আসা  ১৯মাইল দীর্ঘ ‘ বসফরাস’ প্রণালীর দুই তীর ঘিরে ইউরোপ ও এশিয়ায় ইস্তাম্বুলের অবস্থান। সাত পাহাড়ের শহর ছাড়াও এই শহর বিড়ালের শহর হিসেবেও খ্যাত। পুলিশী তত্ত্বাবধানে এই শহরের বিড়ালগুলো নিরাপদ এবং জনগণের স্নেহধন্যে লালিত। সেদিন হোটেল থেকে বেরিয়ে সন্নিকটস্থ ট্রাম-স্টেশনের দিকে পায়ে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। বিশ মিনিটের পথ। হাজিয়া সোফিয়া মসজিদের পাশেই অবস্থিত ট্রাম স্টেশন। স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছিলাম ‘ ডলমাবাহজে পেলেস’ দেখতে। ট্রাম স্টেশনে পৌঁছে ট্রামের অপেক্ষায় আছি। যাত্রীদের জন্য পাশের একটি বেঞ্চিতে দুজন যাত্রী বসে আছেন। এর পাশের আসনে একটি বিড়াল নিশ্চিন্তে শুয়ে আছে। কেউ তাঁকে সরিয়ে দিয়ে পথচারী বসার কোন চেষ্টাও দেখিনি। ওয়েটিং ব্যাঞ্চির একপাশে ঘুমন্ত বিড়ালটির দৃশ্য থেকেই প্রতিয়মান হয় যে তার নিরাপত্তা কতটুকু। শহরের পৌরসভার কর্তৃপক্ষ শহরের বেশ কিছু জায়গায় বিড়ালের জন্য বেন্ডিং মেশিনের ব্যবস্থা করে রেখেছেন যাতে বিড়াল প্রেমিকরা বিড়ালের জন্য খাবার পরিবেশনে সহায়তা হয়। ২০০৯সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা তুরস্কে গেলে হাজিয়া সোফিয়া মসজিদের ‘গ্লি’ নামক বিড়ালটিকে স্পর্শ করলে তার ছবি পৃথিবীর সব বিখ্যাত পত্রিকায় ছাপা পায়। এবং বিড়ালটি সেই থেকে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। তুর্কি ভাষায় ‘গ্লি’ নামের অর্থ ভালোবাসার মিলন। ২০১৭সালে লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় ইস্তাম্বুলের বিড়াল নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল “Turkey: where Pampered cats are top dog”.
ইস্তাম্বুল শহরে পর্যটকদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিনোদন হচ্ছে বসফরাস প্রণালীর ক্রজ ভ্রমণ। প্রায় সারাদিন ব্যাপি কালো জলের উপর ভাসমান বিনোদনের এক আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। লাইভ গান ও নাচের তালে তালে বসফরাসের দুই তীরের ইউরোপীয় ও এশিয়ান মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার মতো। দেখতে পারবেন অটোমান সাম্রাজ্যের নানান ঐতিহাসিক স্থান ও বর্তমান সময়ের নানান আবহমান দৃশ্য। দেখতে পাওয়া যায় বসফরাস ব্রিজ কীভাবে ইউরোপ ও এশিয়াকে সেতুবন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। 
ইস্তাম্বুল শহরকে মসজিদের শহর বল্লেও অত্যুক্তি হবেনা। এ শহরের মসজিদের সংখ্যা তিন হাজার। ব্লু ও হাজিয়া মসজিদ পাশাপাশি থাকায় সেখানে নামাজ পড়ার সুযোগ হয়েছে বেশি। এর বাইরে তিন চারটি মসজিদে নামাজ আদায় করেছি। এরমধ্যে ছিল ইস্তাম্বুলের এশিয়ান অঞ্চলে পহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত সবচেয়ে বড় মসজিদ ‘চামলিজা’ । চামলিজা মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০০সালে এবং ২০১৯ সালের ৩মে উদ্বোধন সম্পন্ন হয়। মসজিদের স্থপতি দুইজন মহিলা Bahar Mizrak and Hayriye Gul Totu. মসজিদের কাজ সম্পন্ন করতে খরচ হয়েছে ১১০মিলিয়ন মার্কিন ডলার । ৬টি মিনার সহ ৭০টি গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদে একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন ৬৩হাজার মুসল্লি। 
ইস্তাম্বুল শহরের তৃতীয় দিন ছিল গালাটা টাওয়ার পরিদর্শন। পথিমধ্যে কিছু বিলম্ব হওয়ায় টাওয়ারের ভিতর দেখা সম্ভব হয়নি। গরমের মধ্যে দুই ঘন্টা লাইনে দাঁড়ানোর ধর্য্য আমাদের কারোর না থাকার কারণে টাওয়ারের ভিতর দেখা সম্ভব হয়নি। সার্জারির পুরনো ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভটি ৫০৭খ্রিস্টাব্দে বাইজেন্টাইন সম্রাট গালাতা দেয়ালের প্রতিরক্ষা টাওয়ার হিসাবে নির্মাণ করেছিলেন। প্রতি বছর  ১.২৪ মিলিয়নের মতো দর্শনার্থীরা পরিদর্শন করে থাকেন এই ঐতিহাসিক গালাতা টাওয়ারটি। 
চলমান সীমিত সময়কে আটকানো যায়না। ইস্তাম্বুলে আমাদের শেষদিন কেনাকাটার জন্য গ্র্যান্ড বাজারে অতিবাহিত করলাম। পৃথিবীর বিখ্যাত বিখ্যাত বাজারগুলোর মধ্যে এটি একটি অন্যতম ঐতিহাসিক আচ্ছাদিত বাজার। ৫৭০বছরের পুরনো বাজারটির কার্যক্রম শুরু হয় ১৪৫৫খিস্টাব্দে। দ্বিতীয় সুলতান মুহাম্মদের নির্দেশিত নিবেদিত গ্র্যান্ড বাজারটির তার্কিস নাম ‘কাপালিসারশি’ যার অর্থ আচ্ছাদিত বাজার। ৬১টি সড়কসহ চার হাজারটি দোকান রয়েছে। ২৬,০০০ মানুষ সেখানে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছে। প্রতিদিন আড়াই লক্ষ থেকে চার লক্ষ দর্শনার্থীর ভিড়ে বাজারটি জমজমাট হয়ে ওঠে। গ্র্যান্ড বাজারে শপিং করতে গেলে জিনিসপত্রের দামের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। দোকানিরা যদি বুঝতে পারে খরিদ্দার ইউরোপ আমেরিকা থেকে এসেছেন তাহলে তারা দ্রব্য মূল্য বাড়িয়ে বলবে। ৫০০লিরার জিনিসের দাম ৮০০ তুর্কি লিরা চেয়ে বসবে। সেখানে শপিং করার পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলে অনেক কিছুই অতিরিক্ত দামে কিনতে হবে। দরকষাকষির ব্যাপারটি এখানে জড়িত আছে। 
মাত্র পাঁচদিনের সফরে বিশাল নগরী ইস্তাম্বুল দেখা কিছুতেই সম্ভব নয়। তবে এই সামান্য কয়দিনে যাকিছু দেখেছি তা অতি সামান্য হলেও ছিল অনেক অনেক বিস্ময়কর আনন্দে ভরপুর । দুই মহাদেশ ইউরোপ ও এশিয়াকে জড়িয়ে ধরে প্রায় ২,৬০০বছর যাবৎ ব্যাপি ইস্তাম্বুল শহর অতীত ও বর্তমান ঐতিহ্যে বহমান। আজও বহমান সেই হাজার বছরের প্রাচীন বসফরাস প্রণালী, বিগত তিন তিনটি সাম্রাজ্যের স্মৃতি বহন করে চলেছে। 
নিউইয়র্ক, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫।
 

কমেন্ট বক্স