Thikana News
২৩ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

ধরা মাত্রই বাতিল

ধরা মাত্রই বাতিল



 
যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় এবং শপথ গ্রহণের পর থেকে তার বেশির ভাগ সময় কেটে গেল অভিবাসীদের বৈধ নাকি অবৈধ এই নিয়ে ধরাধরি এবং তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যস্ততায়। এখনো অভিবাসী নিয়ে ট্রাম্পের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটেনি। এখন ট্রাম্প প্রশাসন ব্যস্ত আছে যারা বৈধ ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন, তাদের নিয়ে। তাদের সম্পর্কে ট্রাম্পের কঠোর নীতি : ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক’। অর্থাৎ ‘ধরো আর তাড়াও’। এ কথা ঠিক, একসময় ভিজিট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে এসে অনেকেই এ দেশে থেকে যেতেন। তবে এ কথা বলা যাবে না, সবাই থেকে যেতেন। অনেকে কেবল পর্যটনের উদ্দেশ্যেই এ দেশে আসেন, একথা অস্বীকার করা যাবে না। একসময় ভিজিট ভিসা নিয়ে আগত পর্যটকদের এ দেশে যথেষ্ট শ্রদ্ধার চোখে দেখা হতো।
কিন্তু সময় পাল্টাতে পাল্টাতে ট্রাম্প যুগে এসে পর্যটকদের সামান্য অপরাধেই ভিসা বাতিল করে পর্যটকদের তাদের নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনই একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে ঠিকানার ৭ মে সংখ্যার শেষ পৃষ্ঠার প্রধান সংবাদে। শিরোনাম : ‘ট্রাম্পের ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক নীতি/সামান্য অপরাধেই বাতিল হয়ে যেতে পারে ভিসা’। সংবাদটিতে শুরুতেই বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বৈধ ভিসাধারী বিদেশিদের জন্য নতুন এক কঠোর অভিবাসন নীতি ঘোষণা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক’ বা ‘ধরো এবং বাতিল করো’ শীর্ষক এই নীতির আওতায় বিদেশি নাগরিকেরা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আইন লঙ্ঘন করলে, এমনকি সামান্য ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের মতো অপরাধ হলেও তাদের ভিসা তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হতে পারে।

গত ২ মে এই ঘোষণা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও। তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন : ‘একবার অপরাধ করলেই ভিসা বাতিল, এখন থেকে এই এক স্ট্রাইক কার্যকর। কোনো বিদেশি আমাদের আইন ভঙ্গ করলে যখনই সরকার তাদের ধরবে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে তার ভিসা বাতিল করব।’ এর সঙ্গে মার্ক রুবিও আরও যোগ করেন, ভিসা একটি সুযোগ, অধিকার নয়। বিদেশি যারা যুক্তরাষ্ট্রে এসে আইন লঙ্ঘন করবেন, তারা এর যোগ্য নন। তবে এর বিপরীতে একটি গ্রুপ মনে করে, এ রকম কঠোর নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা, পর্যটন ও বিনিয়োগ খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

মনে করা হচ্ছে, এই নীতির মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন ভোটারদের একটি কঠোর অবস্থানের বার্তা দিতে চাইছেন, তবে হিতে বিপরীত হয়ে দাঁড়াবে। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা এ রকম পরিস্থিতিতে সব রকম ভিসাধারীকে সতর্ক হয়ে চলাফেরা করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এ রকম কঠোর আইনে কেউ ধরা পড়লে ভিসাধারীদের আইনি সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

এখানে এ কথা বলা অপ্রাসঙ্গিক হবে না, আজ যারা অভিবাসীদের ওপর খড়গহস্ত হচ্ছেন, তারা নিজেদের এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস ভুলে যাচ্ছেন। অতীতকে স্মরণে আনলে দেখবেন, তারাও আমেরিকার উদার অভিবাসন নীতির ফসল। আর আজকের আমেরিকার যে অগ্রগতি ও উন্নতি, তার পেছনে রয়েছে বিদেশি অভিবাসী এবং আজকের আমেরিকানদের পূর্ব প্রজন্মের অবদান। বড় বড় ইমারত, আন্ডারপাস, আন্ডারওয়ে, বিস্ময়-জাগানো বিশাল বিশাল ব্রিজ, সাবওয়ে, পাহাড় কেটে কেটে আমেরিকার দৃষ্টিনন্দন কানেকটিভিটি, সবকিছুতেই রয়ে গেছে সেই অভিবাসী সমাজের শ্রম, ঘাম ও রক্তচিহ্ন। অতীত ভুলে যাওয়া ভালো লক্ষণ নয়।

কমেন্ট বক্স