Thikana News
১৩ মার্চ ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

মানুষের ভয়-কী হয় কী হয়, না জানি কী হয়

মানুষের ভয়-কী হয় কী হয়, না জানি কী হয়
কথিত আছে, একসময় ইউরোপকে কমিউনিজমের ভয়ে দুঃস্বপ্নের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছিল। এখন কমিউনিজমের ভয় নেই, আছে ফ্যাসিজম। আর সেই ফ্যাসিজমের ভয়ে কাঁপছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী ইউনূস সরকার। মানুষ অনুধাবন করতে পারছে না, সরকারের মনের ভেতর আসলে কী লুকিয়ে আছে। সবাই জানে, ড. ইউনূসের মতো মানুষ বিনা উদ্দেশ্যে বা লক্ষ্যহীনভাবে কিছু করবেন না। ৮ আগস্ট ক্ষমতায় বসার পর থেকে ড. ইউনূস এবং তার উপদেষ্টামণ্ডলী, বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার পক্ষে যে তিনজন শপথ নেন, সংবিধানকে সমুন্নত রাখার অঙ্গীকারে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের কাছে, প্রথম দিন থেকেই সেই তাদের মুখে সংবিধানবিরোধী উল্টাপাল্টা কথাবার্তা মানুষ শুনে আসছে। তারা কখনো রাষ্ট্রপতিকে তাড়ানোর কথা বলেন, আবার কখনো সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিতে চান, কখনো আবার জাতীয় সংগীত পাল্টে ফেলতে চান। আসলে তারা যে লক্ষ্যহীনভাবে কিছু করেননি, সাধারণ মানুষও সেটা বোঝে। 
অতীতের সব সরকারই বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য থেকে জনগণকে বিচ্যুত করতে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী, বিজিপি, সেনাবাহিনী-সবাইকে ব্যবহার করেছে বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গড়েছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট।’ ডেভিলদের কতটা নিয়ন্ত্রণ করা গেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বিরোধীদের দমনের ক্ষেত্রে তারা সাফল্য ভালোই দেখাতে পারছে বলে গণধারণা।
গত ৫ মার্চ ঠিকানার ৩ নম্বর পৃষ্ঠায় প্রকাশ পেয়েছে একটি খবর : ‘অপারেশন ডেভিল হান্টেও অধরা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা’। রাজনীতির ময়দানে বলাবলি আছে, ‘লক্ষ্য তো ডেভিল ধরা নয়। যাদেরকে ধরার লক্ষ্যে ডেভিল হান্টের সৃষ্টি, তারা ডেভিল হান্টের জালে ঠিকই ধরা পড়ছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যায় অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী। এখন প্রকাশ্য দিবালোকেই চলছে অনেক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। মেয়েদের প্রকাশ্যে অপমান করছে যারা, তাদের ছাড়িয়ে আনা হচ্ছে গলায় মালা পরিয়ে, স্লোগান দিয়ে। নিষিদ্ধ সংগঠনও প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে, অনুষ্ঠান করছে। অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ক্ষেত্রে নীরব। প্রতিদিন খুন, ধর্ষণ, রাহাজানির বিরুদ্ধে রাজপথে মিটিং, মিছিল হচ্ছে। 
এদিকে অভিজ্ঞজনসহ প্রগতিশীল সব রাজনৈতিক দল মনে করছে, বর্তমান সময়ের পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন সবচেয়ে অধিক জরুরি সবকিছুর আগে নির্বাচন অনুষ্ঠান। নির্বাচন নিয়ে সরকার কূটবিতর্কে ব্যস্ত। কেউ বলছে নির্বাচন নয়, সংস্কার আগে। আবার কেউ বলছে শেখ হাসিনার বিচার আগে। কেউবা আবার বলছে, সবকিছুর আগে প্রয়োজন ল’ অ্যান্ড অর্ডার ঠিক করা। আইনের শৃঙ্খলার বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। একসময় বিতর্ক শোনা যেত ‘মুরগি আগে না ডিম আগে’। এখন নির্বাচন নিয়ে সে রকম বিতর্ক শুরু হয়েছে। মানুষ মনে করছে, আসলে সবকিছুরই একটি অর্থ-নির্বাচন বিলম্বিত করা।
অবশ্য এই নির্বাচন নিয়ে আবার একটা গোলযোগের আশঙ্কা রাজনৈতিক মহলের। সবকিছু মিলিয়ে মানুষ একটা আশঙ্কার মধ্যে আটকে আছে, তারা অনেকটাই ক্লান্ত। মানুষের মনে ভয়-‘কী হয় কী হয়, না জানি কী হয়’। কদিন আগেই একটা অভ্যুত্থান হয়ে গেল। সহসা আরেকটি বড় ধরনের রাজনৈতিক কলহে জড়িয়ে পড়তে চাচ্ছে না মানুষ। শেষ পর্যন্ত দেখা যাক কী হয়। তবে প্রার্থনাÑভালোটাই যেন হয়।

কমেন্ট বক্স