Thikana News
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

হ্যাকারদের উল্লাস আর গ্রাহকদের সর্বনাশ

হ্যাকারদের উল্লাস আর গ্রাহকদের সর্বনাশ


ব্যাংকের টাকা অ্যাকাউন্টহোল্ডারদের নাকি হ্যাকারদের-এই প্রশ্ন এখন তাদের সবারই, যারা হ্যাকারদের হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছেন। এর সঙ্গে এ প্রশ্নও ঘুরে বেড়াচ্ছে, ব্যাংকে যেসব অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তা সঠিক, সুন্দর ও নিরাপদভাবে সুরক্ষা করার দায়িত্ব ব্যাংকের নাকি ব্যাংকে যারা নিরাপদ ভেবে অর্থ রাখেন, তাদের? প্রশ্নটা দিন দিন বড় হয়ে চলেছে। প্রবাসী বাঙালিরা এই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি প্রবাসী রাকিবুল ইসলাম হ্যাকারদের শিকার হন। এর আগেও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেসব ছোটখাটো হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটলেও এখন অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। আরেকটি বিষয়ও হ্যাকিংয়ের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করাটা অযৌক্তিক হবে না। এর আগেও ব্যাংক থেকে নানাভাবে অর্থ তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটলেও ব্যাংকের পক্ষ থেকে সেটা পূরণ করে দেওয়ার কথা শোনা যেত। কিন্তু বর্তমানে ব্যাংক থেকে কারও অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে ব্যাংক আর তা পূরণ করে দেওয়ার দায়িত্ব নিচ্ছে না। ফলে অনেক প্রবাসীরই কপালে হাত। অধিকাংশ প্রবাসীই প্রায় ঘণ্টা হিসাবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অনেক হিসাব-নিকাশ করে সংসার চালিয়ে ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছু অর্থ সঞ্চয়ের চেষ্টা করে থাকেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আমরা যারা বাংলাদেশি, তারা প্রায় সবাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে রাকিবুলের মতো তিল তিল করে কিছু সঞ্চয় করে থাকি। প্রবাসীদের সেই কষ্টের অর্থ যদি ব্যাংক থেকেও খোয়া যায়, তবে তার আর যাওয়ার জায়গা থাকে কোথায়?
রাকিবুল ইসলাম ব্যবহার করতেন রবিনহুডের প্ল্যাটফর্ম। তিনি খুব সতর্কতার সঙ্গে ব্যবসায় কিছু পুঁজি খাটাতেন। তুলতেন, আবার বিনিয়োগ করতেন। এভাবেই কোনোমতে চলছিল রাকিবুলের ব্যবসা এবং সংসার। হঠাৎ করেই ঘটে গেল এ রকম একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। প্রথমে হ্যাক করে রাকিবুলের মোবাইল টেলিফোন। ফোন হ্যাক করে হ্যাকাররা রাকিবুলের টিডি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিল ৫০ হাজার ডলার। কিন্তু এই অর্থ ফিরে পাওয়ার জন্য কারও কাছ থেকে কোনো আশ^াস বা কোনো পথ খুঁজে পাননি রাকিবুল। ব্যাংকও জোরালো কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। রাকিবুল একজন উবার চালক। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছিল সংসারে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য আনবেন। এখন তার মাথায় হাত। ব্যাংকে এখন তার মাত্র ৭ ডলার আছে বলে জানিয়েছেন রাকিবুল। হ্যাক হওয়া অর্থের একটি টাকাও ফেরত পাননি তিনি। রাকিবুল বলেন, তিনি অবশ্যই অর্থ ফেরত চান। কিন্তু কবে পাবেন, কীভাবে পাবেন, তারও কিছু জানেন না। তিনি বিষয়টি পুলিশ এবং এফবিআইকে রিপোর্ট করেছেন। এখন অর্থ ফেরত পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তিনি ব্যবহার করতেন আলট্রা মোবাইল সার্ভিস।
জনাব রাকিবুল অর্থ ফেরত পাওয়ার অপেক্ষায় থাকুন এবং আমরা প্রার্থনা করি তিনি অর্থ ফেরত পাবেন। অন্য প্রবাসীরাও রাকিবুলের দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। তিনি তার সমুদয় অর্থ ফেরত পাক এবং প্রার্থনা করি আর কোনো ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে তিনি যেন পথে না বসেন। আর ব্যাংকগুলোও যেন আরও বেশি এবং অত্যন্ত আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করে তাদের ব্যাংকের সুনাম ও অ্যাকাউন্ট হ্যাক কার্যকরভাবে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়Ñএটা অবশ্যই কাম্য।
 

কমেন্ট বক্স