বর্তমানে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে বিরাজ করছে বিশ^ময় স্নায়ুযুদ্ধের আশঙ্কা। বিশ্বে সবচেয়ে বড় সামরিক শক্তির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া যখন সামনাসামনি অবস্থানে থাকে, তখন এমনিতেই সমগ্র বিশ্বে একটা আতঙ্ক বিরাজ করে। বিশ্বের প্রায় ৭০০ কোটি মানুষও তখন একটা স্নায়ুযুদ্ধের ভীতি অনুভব করে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশে^র সকল বিজ্ঞানী। অভিজাত মানুষেরা মনে করে, এ দুই দেশের কাছে এত এত আধুনিক এবং পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, যা দিয়ে একেবারে ন্যূনতম সময়ের মধ্যে বিশ্বের সকল মানুষকে এবং সেই অন্ধকার যুগ থেকে গড়ে ওঠা মানবসভ্যতাকে ধ্বংস করে ফেলা যাবে। এমন একটা সময় ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বিশ্বটা বিভক্ত ছিল। আর যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে সব সময় উভয়ের মধ্যে ছিল স্নায়ুযুদ্ধ। মানুষ আশঙ্কায় থাকত, এই বুঝি দুই পরাশক্তির মধ্যে বেধে যায় যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধে মানবসভ্যতা তছনছ হয়ে যায়। অন্যদিকে আশঙ্কার পাশাপাশি ভারসাম্য শক্তির একটা জায়গাও তৈরি হয়েছিল। যে কারণে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হওয়া পর্যন্তই। নব্বইয়ের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হওয়ার পর যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়নি। যুদ্ধ বেধেওছে কয়েকটি এবং সেখানে কোনো ভারসাম্য না থাকায় সেসব যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহতা বিশ্ববাসী দেখতে পেয়েছে। মানুষের ভালোই উপলব্ধি হয়েছে, যেকোনো কাজে ভারসাম্য না থাকার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে।স্নায়ুযুদ্ধ! স্নায়ুযুদ্ধের কথা শুনলে এখনো আতঙ্কে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যায়। স্নায়ুযুদ্ধের কথা শুনলে এখনো ‘ঘরপোড়া গরু’র অবস্থা হয়। ঠিকানার গত ৩ জুলাই সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠায় স্নায়ুযুদ্ধের খবরে সবার সেই অবস্থা হয়েছে কি না জানা না গেলেও যারা স্নায়ুযুদ্ধের পরিণতি কী জানে, তারা অন্তত ভীতির মধ্যে আছে। খবরের শিরোনাম ‘নতুন স্নায়ুযুদ্ধের শঙ্কা’ এবং নিচে আছে, ‘পাল্টাপাল্টি অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া।’ যুদ্ধের শঙ্কা শুনিয়ে বলা হচ্ছে : যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে রাশিয়া। আবারও মাঝারি এবং স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন। এসব অস্ত্র বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েনের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
দুই দেশের পাল্টাপাল্টি এই অবস্থানের কারণে নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ২৯ জুন সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে চীন ও রাশিয়া জোট বেঁধে এ স্নায়ুযুদ্ধে অংশ নিতে পারে। যতই আশঙ্কা থাক, মানুষ আর কোনো যুদ্ধ চায় না। তারা জানে যুদ্ধের পরিণতি। তাই সবাই যুদ্ধের বিরুদ্ধে। তারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেরও বিরোধী। তারা চায় উভয় পক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। বিশ্ববাসী শঙ্কামুক্ত হোক।