চলতি সপ্তাহে কিংবা আগামী সপ্তাহে ফাফসা পূরণ করা স্টুডেন্ট ও অভিভাবকদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা কমতে পারে। কারণ মার্চের প্রথম অর্ধভাগে স্টুডেন্টের তথ্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে পাঠানোর কথা। সেই হিসাবে এই সময়ে যদি ফাফসা কর্তৃপক্ষ তথ্য পাঠায়, এর ভিত্তিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্টুডেন্টদের জন্য ফাইন্যান্সিয়াল প্যাকেজ পাঠাতে শুরু করবে। এটি হলেই স্টুডেন্ট ও অভিভাবকেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, তারা কোন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবেন। এদিকে এবার ফাফসা ফর্মে বিভিন্ন পরিবর্তন আনায় ও এনফ্ল্যাশনের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করার কারণে দেরি হচ্ছে। এ নিয়ে স্টুডেন্ট ও অভিভাবেেকরা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় পার করছেন।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের একজন স্টুডেন্টের কলেজে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য ফাফসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে ফাফসার আবেদন গ্রহণ করা হয়। ৩-৫ দিনের মধ্যে প্রসেস করা হয়। এরপর একজন স্টুডেন্ট ধারণা করতে পারেন, তার পরিবারের কন্ট্রিবিউটশন কত, আর তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্কলারশিপ ও গ্র্যান্ট পাওয়ার পর তার আর কত ডলার লাগতে পারে। অবশিষ্ট অর্থ বাইরের কোনো স্কলারশিপ থেকে সংগ্রহ করা অথবা লোন নিয়ে জোগাড় করা হতে পারে। আগেভাগেই স্টুডেন্টরা পরিকল্পনা করতে পারেন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্টুডেন্টদের ফাইন্যান্সিয়াল প্যাকেজ দিয়ে দেয়। এরপর স্টুডেন্টরা কলেজের সঙ্গে অর্থ বাড়ানোর বিষয়ে চেষ্টা করতে পারেন। যেখানে তার জন্য পড়া সহজ হয় ও কম খরচ লাগে, সেই সঙ্গে তার পছন্দের বিষয়ে পড়তে পারেন, সেই কলেজেই এনরোলমেন্ট ফি জমা দেন ১ মের মধ্যে। কিন্তু এবার এটি হয়নি। অক্টোবরে শুরু না হওয়ায় এবার ফাফসার আবেদন গ্রহণ করা শুরু হয় ডিসেম্বরের ৩০ তারিখ থেকে। এরপর ফাফসায় অনেক কিছু পরিবর্তন আনার কারণে আবেদনের সাইটে ও ফর্মে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। ফলে সেটি সবার জন্য উন্মুক্ত না হওয়ার ও মনিটরিং করার ভিত্তিতে চালু করায় অনেকেই শুরুর দিকে ফাফসা ফর্ম জমা দিতে পারেননি। ফেব্রুয়ারির দিকে এটি অনেকটাই স্বাভাবিক অবস্থায় আসে।
ফাফসা ফর্ম পূরণে বিভিন্ন পরিবর্তন আনার কারণে স্টুডেন্টদের ফর্ম পূরণ করতেও কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। সব মিলিয়ে একটি কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে সময় পার করতে হয়। কেউ কেউ স্টুডেন্ট এইড ইনডেক্স (এসএআই) না জানার কারণে ধারণাও করতে পারছেন না, তিনি কত গ্র্যান্ট পেতে পারেন আর লোনই-বা কত পাবেন। ফলে তাদের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হচ্ছে। যারা আগে ফাফসা ফর্ম পূরণ করেছেন, তাদের ফর্ম জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে কলেজগুলোর কাছে পাঠানো হবে, এমনটি ওই সময়ে জানানো হয়েছিল। এরপর স্কুলের ফাইন্যান্সিয়াল অফিস থেকে ফাইন্যান্সিয়াল প্যাকেজ পাঠানো হবে, এমনটি কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কলেজগুলো তা পায়নি। ফাফসা কর্তৃপক্ষ স্টুডেন্টদের অবহিত করে ইমেইল দিয়ে এবং স্টুডেন্টের ফাফসার ফর্মের স্ট্যাটাস জানার জন্য, তাদের অ্যাকাউন্ট লগিং করে দেখার জন্য বলা হয়। এতে করে স্টুডেন্টরা তার অ্যাকাউন্টে লগইন করে ড্যাশবোর্ডে মাই এইড অ্যাক্টিভিটির ওখানে দেখতে থাকেন। কিন্তু এখনো সেখানে আপডেট নেই। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, মার্চের প্রথম অর্ধভাগে তারা কলেজের কাছে স্টুডেন্টের ফাফসার ফর্মের তথ্য পাঠাবে। সেই হিসাবে কলেজগুলো সেটি পাওয়ার পর তারা স্টুডেন্টদের ফাইন্যান্সিয়াল প্যাকেজ অফার করবে। স্টুডেন্টরা ওই প্যাকেজের ওপর ভিত্তি করেই কলেজের সঙ্গে স্কলারশিপ ও গ্র্যান্ট বাড়ানোর বিষয়ে চেষ্টা করার পাশাপাশি বাকি অর্থের সংস্থান করবেন। সেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন যুক্তরাষ্ট্রের মিলিয়ন মিলিয়ন স্টুডেন্ট ও তাদের অভিভাবকেরা। তারা মনে করছেন, মার্চের ১৫-২০ তারিখের মধ্যে হয়তো তারা ইমেইল পাবেন ফাফসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। সেখানে তার এসএআই থাকতে পারে। সেটি দিয়ে তারা ধারণা করতে পারবেন, কলেজের একেকটি শিক্ষা বছরের খরচ সম্পর্কে। তাদের তথ্য পাওয়ার পর কলেজগুলো তাদেরকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্যাকেজ দিতে পারবে। সেটি দিলে তারা কলেজ পছন্দ করে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন ও টেনশনমুক্ত হতে পারবেন।
যারা গত বছর থেকে কলেজ শুরু করেছেন ও বিভিন্ন পর্যায়ে পড়ছেন, তাদের একটি ধারণা আছে তারা কেমন সহায়তা পাবেন। কারণ কারও ইনকাম পরিবর্তন না থাকলে আগের বছরের মতো কিংবা এর কাছাকাছি অর্থ পেতে পারেন। এবার যারা নতুন করে ফল সেশনে ক্লাস শুরু করবেন, তারা বেশি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। কারণ তাদেরকে জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তের একটি নিতে হবে এই প্যাকেজ পাওয়ার পর। তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন শেষ পর্যন্ত কোন কলেজে যাবেন।
ফাফসা ফর্ম পূরণ করার সময় স্টুডেন্টরা সর্বোচ্চ ২০টি কলেজের নাম তথ্য পাঠানোর জন্য দিতে পারেন। কেউ চাইলে দুটি বা একটিও দিতে পারেন। পরে কোনো কলেজের নাম দিতে চাইলে বা কোনোটি বাদ দিতে চাইলে সেটিও করতে পারেন। ফাফসা প্রক্রিয়া হওয়ার পর তথ্য কারেকশন করা যায়। তবে আয়, সম্পদ ও সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য পরিবর্তন করা যাবে না। এটি আবেদন করার দিন যা ছিল, সেটিই থাকবে।
উল্লেখ্য, এই সপ্তাহেই কিছুু কিছু স্টুডেন্টের ফাফসা ফর্ম ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রসেস হওয়ার তথ্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাওয়ার কথা রয়েছে। যাতে করে কলেজগুলো স্টুডেন্টদেরকে ফাইনেন্সিয়াল প্যাকেজ পাঠাতে পারে। তবে কোন কোন কলেজ আগে পাবে কিংবা কোন সময় পর্যন্ত ফাফসার আবেদন করা ফর্মগুলোর তথ্য আগে পাঠানো হবে তা জানা যায়নি। যাদের তথ্য প্রথম পর্যায়ে কলেজগুলো পাবে তারা আগেভাগে ও সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে ফর্ম জমা দিয়েছেন তাদেরগুলো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জমা হওয়া ফর্মে কারো কোন অসম্পূর্ণ তথ্য থাকলে কিংবা স্বাক্ষর দিয়ে না থাকলে সেই জন্য তারা ইমেইল পেতে পারেন। স্টুডেন্টেরা তাদের এফএসএ এ্যাকাউন্ট লগইন করে তার ফর্মের বিষয়ে আপডেট দেখতে পারবেন। এছাড়াও ইমেইলও পেতে পারেন।