নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনার মঞ্চে ঠাঁই হয়নি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসানের। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মঞ্চে বসার সুযোগ পেলেও প্রধান উপদেষ্টা হয়েও ডাক পাননি তিনি। এ ঘটনায় তিনি দারুণ কষ্ট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাসুদুল হাসান প্রথমে কথা বলতে রাজি হননি। পরে তিনি বলেন- জীবনে প্রথম কষ্ট পেয়েছিলাম, মুক্তিযুদ্ধে চোখের সামনে যখন আমার বাবাকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানিরা। দ্বিতীয় বার কষ্ট পেয়েছিলাম সড়ক দুর্ঘটনায়। তখন প্রাণে বেঁচে গেলেও খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। তৃতীয় বার কষ্ট পেলাম- যখন প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা মঞ্চে আমার ঠাঁই হলো না। তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের জন্য যে কোনো কষ্ট সইতে রাজি আছি।
ডা. মাসুদুল হাসান বলেন, এবারই প্রথম নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগকে সংবর্ধনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সবাই জানেন, এটার জন্য আমার কী অবদান ছিল। কতটা কষ্ট করেছি আমি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে এবং প্রচার সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপের পরামর্শে দিনরাত পরিশ্রম করে সফল একটা অনুষ্ঠান করেছি। তিনি বলেন, মঞ্চে বসতে না পারলেও আমার কোনো আফসোস নেই। কারণ প্রধানমন্ত্রী ভালো করেই জানেন আমি কী করেছি।
প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের বিরোধ প্রকাশ্য হয়ে উঠেছিল। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান বরাবরই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরোধী। তিনি নিজেও সভাপতি হওয়ার দৌড়ে আছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে নিউইয়র্কে আগমণ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে তিনি আগে থেকেই দৌড়ঝাঁপ করছিলেন। একপর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে সংবর্ধনা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। তাকে অনুষ্ঠানের প্রধান উপদেষ্টা করে পোস্টার ছাপা হয়। পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও গেছে। সংবর্ধনার দিন প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আসার আগ পর্যন্ত মাসদুল হাসান বেশ সরবও ছিলেন। কিন্তু মঞ্চে এক এক করে সংশ্লিষ্টদের নাম ডাকা হলেও উহ্য থেকে যান মাসুদুল হাসান।
এদিকে সংবর্ধনা শুরুর আগে মঞ্চে বসা নিয়ে মৃদু হট্টগোল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরোধী কয়েকজন নেতা মঞ্চে কে কে বসবেন তা নিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। সিদ্দিকুর রহমানকে ইঙ্গিত করে তাদের বলতে শোনা যায়, ‘মহানগরের নেতারা শুধু মঞ্চে থাকবেন। এই বাইরে অন্যরা থাকলে সব অঙ্গ সংগঠনের নেতাদেরও মঞ্চে রাখতে হবে।’ তবে এ উত্তপ্ত পরিস্থিতি স্বল্প সময়ে শান্ত হয়ে যায়।