প্রধানমন্ত্রীর মিট দ্য প্রেস এবং নাগরিক সংবর্ধনায় সাংবাদিকরা উপেক্ষিত ছিলেন। অতীতে কখনো এমন ঘটনা কখনোই হয়নি। মিট দ্য প্রেসে নিরাপত্তা তল্লাশীর নামে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হয়েছে, এমনকী স্থানীয় বাংলা গণমাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিকদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, প্রতিবছর জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এ বছর আগে থেকে সাংবাদিকদের কিছু জানানো হয়নি। ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেষে মোবাইলে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে সাংবাদিকদের জানানো হয় মিট দ্য প্রেসের কথা।
জানা গেছে, দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা হঠাৎ করে স্থায়ী মিশনের প্রেস উইংকে মিট দ্য প্রেস আয়োজনের নির্দেশ দেন। এ কারণে স্থায়ী মিশনের প্রেস উইং তাৎক্ষণিকভাবে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানান। এ কারণে অনেকেই আমন্ত্রণ পাননি। তবে নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক অভিযোগ করেছেন, মিট দ্য প্রেসে এবারই প্রথম স্থানীয় গণমাধ্যমকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এটা নজিরবিহীন।
এদিকে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে প্রধানমন্ত্রীর মিট দ্য প্রেসে ব্যাগ নিয়ে ঢুকতে গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের বাধার মুখে পড়েন সাংবাদিকরা। জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সংগ্রহের জন্য অধিকাংশ সাংবাদিকের কাছে ল্যাপটপসহ সম্প্রচার ডিভাইস ছিল। সেখান থেকে ফিরে তারা স্থায়ী মিশনে গেলে বিপত্তিতে পড়েন। নিরাপত্তা কর্মীরা ব্যাগ নিয়ে প্রবেশে আপত্তি জানান। সাংবাদিকরা ব্যাগ কোথায় রেখে আসবেন সে ব্যাপারে অসহায়ত্বের কথা জানান। কিন্তু নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের কথা অগ্রাহ্য করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব নূরেএলাহি মিনা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সাংবাদিকদের ভেতরে ঢোকার ব্যবস্থা করেন।
মিট দ্য প্রেসের পর ম্যারিয়ট মার্কি হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনায় ঢুকতে গিয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের হয়রানির মুখে পড়েন সাংবাদিকরা। সাধারণ নেতা-কর্মীরা দল বেঁধে ও সহজে ঢুকতে পারলেও সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা কর্মীরা ব্যাগ নিয়ে প্রথমে আপত্তি করলেও পরে অনুমতি দেন। কিন্তু বাড়াবাড়ি করেন অনুষ্ঠানের ভাড়াটে নিরাপত্তা কর্মীরা। তারা ঢুকতে বাধা দেন। পরে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী এসে সাংবাদিকদের ভেতরে নিয়ে যান। এসব ঘটনায় সাংবাদিকরা উষ্মা প্রকাশ করেন।
এদিকে সংবর্ধনাস্থলে ঢুকতে দেরী হওয়ার কারণে সাংবাদিকদের বসার স্থান দখল করে নেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। আয়োজকরা সাংবাদিকদের জন্য তাদের নির্ধারিত স্থান ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও তাতে কেউ কর্ণপাত করেননি। নিরূপায় হয়ে সাংবাদিকরা সবার পেছনের সারিতে গিয়ে আসন নেন।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী এবং যুগ্ম সম্পাদক নূরুল আমিন বাবু।