Thikana News
০৬ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

বর্তমানের অশনি সংকেত ভবিষ্যতের বাংলাদেশ

বর্তমানের অশনি সংকেত ভবিষ্যতের বাংলাদেশ
অনেকেই প্রকাশ্যে এবং অনেকে মনে মনে এই আশঙ্কা পোষণ করে চলেছেন, চারদিকে যে ঘোর অন্ধকার, সেই অন্ধকার থেকে যে অশনি সংকেত পাওয়া যাচ্ছে, সেই অশনি সংকেতই হতে চলেছে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে সেই বিধিলিপি খণ্ডানো প্রায় দুষ্কর। কেননা, একটি দেশকে যেমন কিছু সাহসী, সৎ, ত্যাগী নেতা উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যেতে পারেন, তেমনি আবার কিছু স্বার্থপর, লোভী, অসৎ, দুর্নীতিপরায়ণ নেতা দেশকে অন্ধকারের অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করতে পারেন। আজকের বাংলাদেশ নিয়ে অনেক বিজ্ঞজনই ভবিষ্যতের বাংলাদেশের সামনে তেমন অন্ধকার দেখতে পান।

মানুষ প্রবাদে বলে থাকে, ‘মর্নিং, সোজ দ্য ডে।’ তেমনি বর্তমান দেখে ভবিষ্যতের কথা বলা। পত্রপত্রিকাতেও সে রকমই আভাস। যেমন ঠিকানার গত ২৫ অক্টোবর প্রথম পৃষ্ঠায় একটি শিরোনাম : ‘অনিশ্চিত ভবিষ্যতের অশনি বার্তাবাহী বর্তমান’। এ পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে বড় দুই দল-আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ক্ষমতা রক্ষা আর ক্ষমতা লাভের লড়াইয়ে রাজনীতির অঙ্গন টালমাটাল হওয়ার আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই গত ২৮ অক্টোবর এক দফা আর শান্তির কর্মসূচি পালনে সৃষ্ট তাণ্ডবে সে আলামত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ২৮ অক্টোবর দুই দলের কর্মসূচি পালনকালে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, প্রাণহানি সবই হয়েছে। ভবিষ্যতের অশনি সংকেত বর্তমানের এই তাণ্ডব ভবিষ্যতে কী রূপ নেয়, তা এখনই অনুমান করা যায়। প্রথম বড় ধরনের কর্মসূচিতেই ভবিষ্যতের ভয়ংকর ছবি কী পরিষ্কার বুঝতে পারা যাচ্ছে।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদবিরোধী আন্দোলনে জাতীয় পার্টি ব্যতীত আর সব দলের পৃথক পৃথক ও জোটের নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার সাফল্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ ভেবেছিল, রাজনৈতিক হানাহানি, সহিংসতার বুঝি অবসান ঘটবে এবার। কিন্তু কোথায় শান্তি, কোথায় স্বস্তি! উল্টো নতুন করে যেন রাজনৈতিক আস্থাহীনতা, অবিশ্বাস বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতির অঙ্গন আরও অসুস্থ হয়ে পড়ল। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতি চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্রে আরও জটিল হয়ে যায়। বাংলাদেশের ভাগ্যলিপি বটে! যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে লড়াই, আন্দোলন, অবশেষে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করল; যে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ বাঙালি জীবন বিসর্জন দিল, ২ লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রম গেল, সেই বাংলাদেশে আজও গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন। ক্ষমতা নিয়ে লড়াই। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা নিয়ে চক্রান্ত, দ্বন্দ্ব-সংঘাত। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত না হয়ে ক্ষমতা নিয়ে লড়াই।

বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে। এ বছর ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। এখনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে বাংলাদেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে উত্তাপ দেখা যাচ্ছে। এতে দেশের মানুষ শঙ্কিত। স্বাধীনতার শত্রু-মিত্র সবাই মাঠে নেমে পড়েছে। রাজনীতির ‘তাওয়া’ গরম হতে না হতেই ভয়ংকর পরিস্থিতির আলামত! নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসবে, পরিস্থিতি তত অবনতি ঘটার আশঙ্কা সবার মনে। বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করতে উদ্্গ্রীব রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের যত কর্মসূচি, কোনো কর্মসূচিই জনগণের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই নিয়ে থাকে। অথচ সব খেসারত দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। আহত হয়, আর দ্বগ্ধ হয়, প্রাণ যায়-সব সাধারণ মানুষের। ক্ষমতার জন্যই সব দল গণতন্ত্রকে ক্ষত-বিক্ষত করে। ক্ষমতায় গেলে সেই জনতাকে মনে রাখে না।

এই ক্ষমতার মোহ ত্যাগ না করা পর্যন্ত এ পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। এ জন্য চাই সবার ক্ষমতার মোহ ছেড়ে বের হয়ে আসা। স্বদেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মূল অঙ্গীকার বুকে ধারণ করে চলা। তার জন্য সর্বাগ্রে দরকার ক্ষুদ্রতা ত্যাগ করা। দেশপ্রেমের চেতনা থাকলেই কেবল এটা সম্ভব।

কমেন্ট বক্স