ডাকসু নির্বাচন মসৃণভাবে আয়োজন করবে প্রশাসন, করবে স্বচ্ছতার সঙ্গে- এই প্রত্যাশা থাকলেও সেটা পূরণ হয়নি, দাবি করছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে তিনি বললেন, ভোটের দিন সকালেই ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মিডিয়া মব তৈরি করা হয়। কারচুপির কিছু পরিস্থিতিও দেখা গেছে। তবে বৃহত্তর গণতন্ত্রের স্বার্থে ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেওয়া উচিত সবার- মন্তব্য করেছেন ডাকসুর একসময়ের ভারপ্রাপ্ত ভিপি শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।
৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এই টকশোতে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন-এর প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) এই অনুষ্ঠান সরাসরি দেখা গেছে ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে। ডাকসু নির্বাচন ছাড়াও সমসাময়িক জাতীয় ও ছাত্র রাজনীতির নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন দুই অতিথি।
নব্বই দশকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এবারের ডাকসু নির্বাচন অনেক প্রত্যাশিত ছিল। আমাদের প্রত্যাশা ছিল সুষ্ঠু একটি নির্বাচন হবে, নির্বাচনে প্রতিযোগিতা থাকবে। ফ্যাসিবাদে আমলে যে ভয়, ত্রাস তৈরি করা হতো, সেটা থাকবে না নির্বাচনে। আমরা খবর পেয়েছি, এবার ভোট পড়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। এটা ভলো দিক। তবে কিছু অনিয়মের কথা আসছে। এগুলোর স্বচ্ছ তদন্ত প্রয়োজন। কারণ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে তা গণতন্ত্রের জন্য কোনোভাবেই সহায়ক কিছু হয় না।’
তিনি আরো বলেন, ফলাফল মেনে নেওয়াও গণতন্ত্র চর্চারই অংশ। এটা ভেবে সবার ফলাফল সবারই মেনে নেওয়া উচিত।
ডাকসু নির্বাচনের সময় ছাত্রদলের প্রচারণায় ছাত্রশিবিরকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, রাজাকার হিসেবে দেখানোর একটা চেষ্টা ছিলো। যাকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের রাজনৈতিক বয়ান টেনে আনার সামিল বলতে চান অনেকেই। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘রাজনীতির ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগই আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ। গত ১৭ বিএনপি ও ছাত্রদল সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের বয়ান দিয়ে রাজনীতি করার প্রশ্নই উঠে না। আমরা সবসময় বাংলাদেশের পক্ষে, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের পক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেই রাজনীতি করেছি। কারণ দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক।’
মুক্তিযুদ্ধের বয়ান সামনে রেখে রাজনীতি করা দোষের কিছু নয় বলে মনে করেন এই সময়ের জনপ্রিয় রাজনৈতিক ভাষ্যকার জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ইতিহাসই মানুষকে ভবিষ্যতের দিশা দেখায়। তবে আওয়ামী লীগ যেভাবে মুক্তিযুদ্ধকে তাদের সমার্থক করার চেষ্টা করেছে, একাত্তরকে ব্যবহার করে যেভাবে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল- এগুলো ভালো বিষয় ছিল না। মুক্তিযুদ্ধ কোনো নির্দিষ্ট দলের নয়, মুক্তিযুদ্ধ একটা জনযুদ্ধ- একাত্তরের ইতিহাস সেভাবে চর্চা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
ঠিকানা/এএস