Thikana News
২৩ জুন ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
এলিস স্টেফানিকের তীব্র সমালোচনা

হোকুল ‘আমেরিকার সবচেয়ে ব্যর্থ গভর্নর’

হোকুল ‘আমেরিকার সবচেয়ে ব্যর্থ গভর্নর’ এলিস স্টেফানিক  ও ক্যাথি হোকুল



 
নিউইয়র্কের প্রভাবশালী রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য এলিস স্টেফানিক রাজ্যের বর্তমান গভর্নর ক্যাথি হোকুলের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। আসন্ন ২০২৬ সালের গভর্নর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্কবাসী এখন একটি নতুন নেতৃত্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে- এমন নেতৃত্ব, যারা সাধারণ বোধ, দক্ষতা এবং দায়িত্বশীলতা নিয়ে রাজ্যকে এগিয়ে নিতে পারবেন।’
গত ৪ মে ফক্স নিউজ চ্যানেলের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘সানডে মার্নিং ফিউচারস’-এ উপস্থাপক মারিয়া বার্টিরোমোর সঙ্গে আলোচনাকালে স্টেফানিক বলেন, ‘ক্যাথি হোকুল হচ্ছেন আমেরিকার সবচেয়ে জঘন্য গভর্নর। এমনকি আমি যাকে খারাপতম মনে করতাম, সেই অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়েও তিনি খারাপ পারফরম করেছেন। আমি কখনো ভাবিনি, কেউ এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু হোকুল সেটি করে দেখিয়েছেন।’
স্টেফানিকের মতে, গভর্নর হোকুলের নেতৃত্বে নিউইয়র্ক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্ক এখন দেশের সবচেয়ে বেশি করের বোঝা চাপানো রাজ্য। জ্বালানির দাম আকাশছোঁয়া। ঘরভাড়া, খাদ্য ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদার পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ বাধ্য হয়ে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘পেনসিলভানিয়া বা টেক্সাসের মতো রাজ্যগুলোতে খরচ কম এবং জ্বালানি-বান্ধব নীতিমালা বিদ্যমান। তাই মানুষ বিকল্প খুঁজছে। অথচ নিউইয়র্কে একটি ‘একদলীয় শাসনব্যবস্থা’ চালু হয়েছে, যেখানে জনগণের কণ্ঠকে গুরুত্ব দেয়া হয় না।’
স্টেফানিক গভর্নর হোকুলের ‘অবৈধ অভিবাসনপন্থী’ নীতিরও তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্কে এখন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বৈধ নাগরিকদের চেয়ে অবৈধ অভিবাসীরা বেশি সুবিধা পাচ্ছে। এটা কোনো ন্যায়বিচার নয়।’
তিনি বলেন, ‘হোকুলের ব্যর্থ জামিন সংস্কারের কারণে রাজ্যে অপরাধ বৃদ্ধির হার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। চুরি, হামলা ও সহিংস অপরাধের ঘটনা প্রতিদিনই বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোও এদের কাছে অসহায়।’
স্টেফানিক বলেন, ‘শুধু রিপাবলিকানই নয়, অনেক স্বাধীন ও ডেমোক্র্যাটিক ভোটারও এখন পরিবর্তনের দাবি তুলছে। নিউইয়র্কবাসী তাই বাস্তববাদী, স্বচ্ছ এবং কার্যকর নেতৃত্ব চায়। আমি সেই পরিবর্তনের অংশ হতে প্রস্তুত।’
তবে তিনি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেননি। ফক্স নিউজ ও Nwe York Post-এ দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘আমি গভীরভাবে বিষয়টি বিবেচনা করছি। আমাকে ঘিরে জনগণের সমর্থন, উৎসাহ ও আগ্রহ সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।’
২০২১ সালে অ্যান্ড্রু ক্যুমোর পদত্যাগের পর লেফটেন্যান্ট গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেন ক্যাথি হোকুল। পরবর্তীতে ২০২২ সালের নির্বাচনে তিনি রাজ্যের প্রথম নারী গভর্নর হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, তাঁর জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। জনমত জরিপে দেখা গেছে, অর্থনৈতিক অবস্থা, অপরাধ বৃদ্ধি ও অভিবাসন নীতিতে মানুষের অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে।
স্টেফানিকের মতে, এই পরিস্থিতিতে তিনিই হোকুলকে পরাজিত করার জন্য ‘সবচেয়ে উপযুক্ত’ প্রার্থী। তবে তিনি স্পিকার মাইক জনসনের সঙ্গে গভর্নর পদে প্রার্থিতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন- এমন গুঞ্জন অস্বীকার করেন। প্রসঙ্গত, স্টেফানিক এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূর হওয়ার জন্য মনোনীত হয়েছিলেন, কিন্তু হাউজে রিপাবলিকানদের স্বল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তিনি সেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। পরে সেই পদে মনোনীত হন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ।
২০২৬ সালের গভর্নর নির্বাচনকে ঘিরে নিউইয়র্কের রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ছে। স্টেফানিকের সম্ভাব্য প্রার্থিতায় রিপাবলিকান ঘাঁটি জোরদার হলেও সামনে চ্যালেঞ্জও কম নয়। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত- নিউইয়র্কে নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবি দিন দিন আরো জোরালো হচ্ছে।

কমেন্ট বক্স