ভয়ংকর ঝুঁকিতে মানবসভ্যতা? এ রকম একটি ভয়ংকর বুক-কাঁপানো সংবাদ কী করে প্রচারিত হয়, তার কারণ খুঁজে পাওয়া কঠিন। অন্য ধর্মে কী বলে জানি না, তবে মুসলমানদের ধর্ম ইসলামে কোনো কিছু তা সে ধর্ম হোক, সভ্যতা হোক, সবকিছু যখন চূড়ান্ত ধ্বংস হওয়ার সময় আসবে, তখন প্রাকৃতিকভাবে এমন কিছু আলামত দেখা যাবে, মানুষ ঠিক বুঝতে পারবে-এসব আর কিছু নয়, সভ্যতা বা বিশ্বের একটি পর্ব ধ্বংস হয়ে দুনিয়ার নতুন আরেকটি পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে। মানুষের আচরণে তখন একটা নতুন কিছু দেখা যাবে, যা আগে কেউ কখনো দেখেনি। যা ভাবতেও পারেনি মানুষে মানুষে এমনটা কখনো হবে। প্রকৃতির মধ্যেও লক্ষণীয় কিছু ঘটতে দেখা যাবে, যা থেকে মানুষ বুঝতে পারবে, সামনে একটা কিছু ঘটতে যাচ্ছে, যা পৃথিবীটাকে পাল্টে দেবে।
আজকের পৃথিবীটাতে এমন কিছু দেখা যাচ্ছে, যা দেখে মানুষ ভেবে নিতে পারে, বর্তমান সভ্যতার আয়ু বুঝি আর বেশি নেই। এই দেশে দেশে যুদ্ধ, প্রাণহানি, ধ্বংস, রক্তপাত, ক্ষয়ক্ষতি, শিশুমৃত্যু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মৃত্যু। বাড়ি-ঘর, শহর-বন্দর, নগর সব ধ্বংস হয়ে গেল। আমার বড়ত্ব যেনতেন প্রকারে বজায় রাখতে হবে। সবাইকে ছাড়িয়ে আমাকে বড় হতে হবে। এতে যদি দু-একটি দেশ গুঁড়িয়ে দিতে হয়, হবে। তবু আমাকে বড় হতেই হবে। অন্যকে দুর্বল করে দিতে যত বড় ভয়ংকর ধ্বংসাত্মক অস্ত্র হোক, আমার অস্ত্রভান্ডারে থাকতেই হবে। আমার হুংকারে আরেকজন যদি মায়ের পেটে ঢুকে না যায়, তবে আর আমার বড়ত্ব কিসে।
যদিও কথাগুলো মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমান যে অবস্থা চলছে, সে প্রসঙ্গেই অধিক প্রাসঙ্গিক। তবে বিশ্বজুড়েই উত্তাপ-উত্তেজনা ভাব। ইরান-ইসরায়েল, সিরিয়া-আরব, ওদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন। এ ছাড়া খণ্ড খণ্ড উত্তেজনা, কখন কোন বিস্ফোরণ ঘটায়। সে রকম পরিস্থিতি উত্তেজনার দিকে গড়ালে কী হবে, তা এ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সামান্য কল্পনাও করা যাচ্ছে না। আর সে শঙ্কায় আমাদের সবচেয়ে প্রিয় ৩০ লাখ মানুষের জীবন এবং লাখ লাখ মা-বোনের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশেরও বিশ্বের চলমান অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে পড়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। ১৭ এপ্রিল সংখ্যা ঠিকানার লিড নিউজের খবরটির সারমর্ম সেটাই।
ঠিকানা ডেস্কের প্রতিবেদনের শিরোনামে বলা হয়েছে, “ঝড়ের আগে ‘শান্ত অবস্থায়’ ইরান-ইসরায়েল?” মূল শিরোনামে রয়েছে ‘ভয়ংকর ঝুঁকিতে মানবসভ্যতা/ নিচে ‘সংকটের শঙ্কা বাংলাদেশেও’। প্রতিবেদনটি শুরুই হয়েছে এভাবে : ‘যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে যেন বের হয়ে আসতে পারছে না বিশ্ব। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমগ্র বিশ্বকেই মারাত্মক এক অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছে। এরই মধ্যে ইসরায়েল-হামাস সংঘাত তথা ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এ পরিস্থিতেই যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিল ইরান। ইরান প্রথমে ইসরায়েলে সরাসরি হামলা করে।’
এদিকে ইসরায়েলি পাল্টা হামলার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয় বিশ্ববাসীর মনে। এ যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বিশ্বজুড়েই দেখা দিতে পারে ডিজেলে আগুন লাগলে যা হয়, যুদ্ধ ও মানবসৃষ্টির এবং শান্তি ও সভ্যতার ধ্বংস ডেকে আনতে পারে। সেই আশঙ্কাতেই বিশ্ববাসী আতঙ্কিত। এখনই যুদ্ধ থামানোর কোনো উদ্যোগ না নিলে, যুদ্ধ তার সকল, সহিংসতা নিয়ে ছড়িয়ে পড়লে তখন মানবসভ্যতার ধ্বংসই কেবল দেখতে হবে।