Thikana News
০৪ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

সাবধান! বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্ক্যামাররা

সাবধান! বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্ক্যামাররা
বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল জীবনযাত্রা যতই জনপ্রিয় হচ্ছে, অনলাইন প্রতারণার সংখ্যা ততই বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই মানুষকে বোকা বানিয়ে নিজেদের কার্যসিদ্ধি করে চলেছে অনলাইন জালিয়াতরা। মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাবে খুব সহজেই জালিয়াতির কাজটি করতে পারছে স্ক্যামাররা। লটারি, অনলাইনে আয় করার উপায়, ভুয়া চাকরি, ডেটিং পার্টনার কিংবা ই-কমার্স ডিসকাউন্ট ইত্যাদি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্ক্যামাররা অনলাইন স্ক্যাম করছে। প্রতিবছর লাখ লাখ অনলাইন অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হয় কেবল স্ক্যামিংয়ের শিকার হয়ে। স্ক্যামাররা মোটর ভেহিকেল অফিস, মোবাইল ফোন অপারেটর, গাড়ির ইন্স্যুরেন্স, ফুয়েল পাম্প, শপিং মল, সুপার মার্কেট, অনলাইন শপিংসহ নানা মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য চুরি করছে। পরে এসব গ্রাহকের ব্যাংক ও ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

স্ক্যামাররা অত্যন্ত বিচক্ষণ ও মেধাবী। বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। প্রযুক্তির কল্যাণে স্ক্যামাররা জাল ফেলেছে উন্নত-অনুন্নত প্রায় সব দেশে। আর সেই জালে আটকা পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে নিরীহ মানুষ। তারা এতটাই দুর্ধর্ষ ও ভয়ংকর যে, তাদের খোঁজ পেলেও টিকিটি স্পর্শ করা যাচ্ছে না।

গত ৬ মার্চ প্রকাশিত ঠিকানার প্রধান সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘হাজারো প্রবাসীর মাথায় হাত’। মূল শিরোনামের ডেকে অর্থাৎ ওপরের অংশে ছিল ‘স্ক্যামারদের টার্গেট এবার ট্যাক্স রিটার্ন, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থে হানা’ এবং ব্যাংকে অর্থাৎ নিচের অংশে ছিল ‘অপরিচিত ফোনকল রিসিভে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ’। প্রকাশিত সংবাদটি স্ক্যাম-সংক্রান্ত চারটি ঘটনা দিয়ে শুরু হয়েছে। সংবাদটিতে বলা হয়েছে, আমেরিকার মতো উন্নত বিশ্বের সব নিরাপত্তাব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্ক্যামাররা বহু প্রবাসীকে সর্বস্বান্ত করেছে। তাদের ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তছনছ করছে। অভিযোগ করে মাসের পর মাস পার হলেও প্রতিকার মিলছে না। উদ্ধার হচ্ছে না অর্থ। বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সংবাদে আরও বলা হয়েছে, স্ক্যামাররা খুবই বিচক্ষণ ও মেধাসম্পন্ন। তারা বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য কেনাবেচা করে। ফোনের দোকান, মেডিকেল অফিস এবং বিভিন্ন থার্ড পার্টির কাছ থেকে নাগরিকদের তথ্য পাচার হচ্ছে। অনেক সময় তথ্য বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। টি-মোবাইলের মতো জায়ান্ট কোম্পানি গ্রাহকের তথ্যের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এ পর্যন্ত ছয়বার তাদের তথ্যভান্ডারে হানা দিয়ে তছনছ করেছে হ্যাকাররা। এসব তথ্য জানান সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করা একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

সংবাদটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর ট্যাক্স রিটার্ন মৌসুম শুরু হলে স্ক্যামারদের তৎপরতা বেড়ে যায়। তারা নাগরিকদের ট্যাক্স রিটার্নের অর্থ হাতিয়ে নিতে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে। এমনকি আইআরএসের অ্যাকাউন্ট হ্যাকড করে রিটার্নের জন্য যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেওয়া হয়, তার পরিবর্তন করে দেয় স্ক্যামাররা। এভাবে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে স্ক্যামাররা। ট্যাক্স রিটার্ন মৌসুমে স্ক্যামাররা ট্যাক্স ফাইলিংয়ের পর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চুরি করার জন্য নানাভাবে ওত পেতে থাকে। ফলে ট্যাক্স ফাইলিংয়ের পর ফোনে এ-সংক্রান্ত যোগাযোগ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন ট্যাক্স ফাইল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা বলছেন, আইআরএসের কথা বলে স্ক্যামাররা লোকজনকে ভয়ভীতি দেখায়। কিন্তু আইআরএস কখনো ফোনে যোগাযোগ করে না।

সংবাদটিতে ভয়ংকর যে দিকটি উঠে এসেছে, তা হলো এত দিন স্ক্যামিংয়ে বিভিন্ন দেশের দুষ্টচক্র জড়িত থাকলেও ইদানীং বাংলাদেশিদের নাম আসতে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল তদন্তে বেশ কিছু বাংলাদেশির নাম এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ট্যাক্স রিটার্ন মৌসুম চলছে। তাই ট্যাক্স রিটার্ন করতে গিয়ে কেউ যাতে প্রতারকদের খপ্পরে না পড়েন, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অনেক কষ্টে অর্জিত প্রবাসীদের অর্থ যাতে কোনো স্ক্যামার হাতিয়ে নিতে না পারে, সে জন্য থাকতে হবে সজাগ।

সবচেয়ে হতাশা ও লজ্জার বিষয় হলো স্ক্যামের সঙ্গে বাংলাদেশিদের নাম জড়িয়ে পড়া। নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে আজ বাংলাদেশি কমিউনিটি অত্যন্ত সুপরিচিত ও শক্তিশালী। স্ক্যামে নাম আসা দু-চারজন কুলাঙ্গারের কারণে বাংলাদেশিদের সুনাম বিনষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। তাই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশিকে যার যার পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে সর্বদা সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
 

কমেন্ট বক্স