Thikana News
২২ অক্টোবর ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪


 
জর্জিয়ায় ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদের মৃত্যু নিয়ে রহস্য

‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’

কথিত সুইসাইডাল নোট
‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’


যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার গ্রেটার আটলান্টায় বাংলাদেশি আমেরিকান প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনের (৪২) মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ তার বাড়ি  থেকে অন্তত ২৫ মাইল দূরে জনসক্রিক এলাকায় একটি গাড়ির মধ্যে থেকে তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। স্ত্রী কোনো অভিযোগ না করায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে- তিনি আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ লাশের কাছ থেকে কথিত সুইসাইডাল নোট উদ্ধার করেছে, যেখানে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য স্ত্রী বা অন্য কেউ দায়ী নয়।’ 
এদিকে প্রকৌশলী সাজ্জাদ গুলি চালিয়ে কেন আত্মহননের পথ বেছে নিলেন সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পায়নি পুলিশ। এমনকী স্ত্রী কোনো অভিযোগ না করায় পুলিশও বিষয়টিকে আপাতত আত্মহত্যা বলছে। কিন্তু প্রতিবেশী এবং সেখানকার কমিউনিটির লোকেরা এই মৃত্যু নিয়ে নানান সন্দেহ করছেন। প্রতিষ্ঠিত একজন প্রকৌশলী কী কারণে আত্মহত্যা করবেন তা নিয়ে নানান প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে কথিত সুইসাইডাল নোট নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে রহস্যের। 
জর্জিয়ার গুনেইট কাউন্টি পুলিশ গত ১৭ জানুয়ারি ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনের লাশ উদ্ধার করে। পিঠের নিচে কোমরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পুলিশ লাশের পাশে একটি চিরকুট পায়, যেখানে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার স্ত্রী বা অন্য কেউ দায়ী নয়।’ 
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন কেন আত্মহত্যা করবেন? কেউ নিজের পেছনে কোমরে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে কী না? এই দুটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই সৃষ্টি হয়েছে রহস্যের। প্রশ্ন হচ্ছে- প্রকৌশলী সাজ্জাদ হাসান জর্জিয়া পাওয়ার কোম্পানির ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। মোটা বেতনের চাকরি। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি স্বচ্ছল ও সফল। স্ত্রী, এক ও ছেলে এক মেয়ে নিয়ে জর্জিয়ার টাকার শহরে বসবাস করতেন। কিছু দিন আগে বাংলাদেশ থেকে বাবা-মা বেড়াতে এসেছেন। সব মিলিয়ে সুখী জীবন ছিল তার। এমন কী হলো যে গুলি চালিয়ে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিলেন? 
সাজ্জাদ হোসেনের প্রতিবেশী এবং একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, স্ত্রীর সাম্প্রতিক আচরণে প্রকৌশলী সাজ্জাদের দাম্পত্য কলহ চলছিল। বিশেষ করে গত সেপ্টেম্বরে ফোবানার একজন কর্মকর্তার সঙ্গে তার স্ত্রীর ঘনিষ্ঠতা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না সাজ্জাদ। তাদের দাম্পত্য কলহ তীব্র আকার ধারণ করেছিল। কিন্তু এই কলহ মৃত্যুর দিকে ধাবিত করার মত বড় ঘটনা ছিল না। তবে মানসিক যন্ত্রণার কথা বাবা-মায়ের সঙ্গে শেয়ার করেছেন সাজ্জাদ। 
অন্যদিকে পিঠের নিচে কোমরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হওয়ায় অনেকে এটিকে আত্মহত্যা বলতে চাচ্ছেন না। কারণ নিজের শরীরের পেছনে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা নজিরবিহীন। নিজের স্ত্রীর সঙ্গে কলহ, অথচ তাকেই তিনি চিরকুট লিখে দায়মুক্ত করে গেছেন। চিরকুটে হাতের লেখা যে সাজ্জাদের তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জোর করে কেউ চিরকুট লিখতে বাধ্য করেছে কীনা এসব বিষয় তদন্তের দাবি রাখে। আরো একটি প্রশ্ন জোরেশোরে সামনে এসেছে, প্রকৌশলী সাজ্জাদ যদি আত্মহত্যাই করবেন তাহলে বাড়ি থেকে ২৫ মাইল দূরে কেন গেলেন? 
জানা গেছে, ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে বাসা থেকে গাড়ি চালিয়ে বেরিয়ে যান প্রকৌশলী সাজ্জাদ। তিনি কোথায় যাচ্ছেন তা কী কাউকে বলে গেছেন? স্ত্রীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকলে অবশ্যই তাকে বলে যাওয়ার কথা। কিন্তু স্ত্রী এখন দাবি করছেন, সাজ্জাদ আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশকে সেই বর্ণনাই দিয়েছেন সাজ্জাদের স্ত্রী। বরং অন্য কোনো সন্দেহ না করায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে এই মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে জানিয়েছে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সাজ্জাদের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছে। 
 

কমেন্ট বক্স