Thikana News
০৬ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে বাংলাদেশ

শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে বাংলাদেশ
বাংলাদেশে নির্বাচনের বাদ্য বেজে গেছে সর্বত্র। নির্বাচনে অবশ্যম্ভাবী অনুষঙ্গ সহিংসতা, সেও শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই ঢাক-ঢোল পেটাচ্ছেÑএ দলের সে ক্ষমতা নেই, সে দলের ওই ক্ষমতা নেই। যারা এসব আওয়াজ দিচ্ছে, তাদের কী ক্ষমতা আছে, সে কথা কেউ বলছে না। এবং তাদের থলি থেকে কী রঙের বিড়াল বের হয় শেষ পর্যন্ত, সে কথাই-বা কে বলবে! দেখা যাচ্ছে, নির্বাচনের দিন (৭ জানুয়ারি) যত এগিয়ে আসছে, নির্বাচনী সহিংসতা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আহতের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রাণহানির সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে নির্বাচনী প্রচারণা। 
বাংলাদেশে একটা সময় গেছে, যখন নির্বাচন মানে ছিল আনন্দ-উৎসব। মানুষ আনন্দের সঙ্গে মিটিং-মিছিলে যোগ দিত। পিতার নির্বাচনী মিছিলেও ছেলে স্লোগান দিত : ‘তোমার ভাই আমার ভাইÑঅমুক ভাই, তমুক ভাই’, ‘অমুক ভাইয়ের মার্কায়, ভোট চাই, ভোট চাই’। এখন নির্বাচনী মিটিং-মিছিল আর আনন্দ-উৎসব নয়। বরং ভয়ংকর আতঙ্ক, এই বুঝি কখন চোরাগোপ্তা হামলায় কার কখন প্রাণ যায়! সেই প্রাণহরণ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকা এবং তার বাইরে চট্টগ্রাম-বরিশালে বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভা, রাজপথের মিটিং-মিছিলে হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। এবং সে হামলায় কেউ প্রাণ হারাচ্ছে, কেউ আহত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায়ও একই দলের নেতাকর্মীদের হামলা-পাল্টা হামলায় প্রাণ যাচ্ছে। সবাই মনে করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় কোনো রকম সহিংসতার ঘটনা ঘটবে না। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে দেখা হবে। কিন্তু সে ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী জনসভায় ইতিমধ্যে একজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতা কম হবে বলে অভিজ্ঞজনেরা ধারণা করেছিলেন। কারণ এবার নির্বাচনে প্রার্থীরা প্রায় সব একই দলের, না হয় দলের শরিকজনেরা। স্বতন্ত্র প্রার্থী বা ডামি প্রার্থীও প্রায় সবাই একই দলের।
কিন্তু সে ধারণা ইতিমধ্যেই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এসব সহিংসতার পেছনে অভিজ্ঞজনেরা যেসব কারণ চিহ্নিত করছেন, সে কারণ খুব দেখার মতো নয়। সে কারণ হচ্ছে, আমাকে এমপি হতে হবে। আমাকে সরকারের কেউ একজন হতে হবে। অন্যে আমার যত আপনজনই হোক, আমার কোনো লাভ নেই। লাভের বিষয়টাই আসল। মন্ত্রী হলে তো কথাই নেই, এমপি হলেও লাভের অঙ্ক কম নয়। আঙুল ফুলে এখন আর কেউ কলাগাছ হয় না, এখন সবাই আঙুল ফুলে বটগাছ হয়ে যায়। যে কারণে এমপি পদে দাঁড়ালেও বিনিয়োগ কয়েক শ কোটি টাকা। এমপি হয়ে সুদে-আসলে তুলে আনতে হবে। বিনিয়োগ যাতে বৃথা না যায়, সে কারণেই সবাই বেপরোয়া। সবাই জানেÑরাজনীতি এখন খুবই লাভজনক বাণিজ্য। সরকারি দলের এমপি হতে পারলে তো কথাই নেই!
তাই কেউ কোনো জায়গা ছাড়তে রাজি নন। সবাই মরিয়া, কেউ বাকির খাতায় নাম লেখাতে চায় না। রাজনীতিতে যারা বিনিয়োগ করেন, তারা নগদ নারায়ণে বিশ্বাস করেন। তারা জানেন, দূরের বাদ্য কানে মধুর লাগলেও মাঝখানে তার বেজায় ফাঁক। তাইতো কারও মাথা ফাটিয়ে, কারও প্রাণ বধ করে হলেও আমাকে জিততে হবে। কারও আশ্বাসবাণীতে কাজ হচ্ছে না। এখন নির্বাচন আসতে আসতে দেখার বিষয়, শেষ পর্যন্ত কজনের মাথা ফাটে, আর কজনের প্রাণ যায়।
তাই উৎসব মনে করে মিটিং-মিছিলে না গিয়ে সব সময় সতর্কতা অবলম্বন করে চলাই শ্রেয়। বেঘোরে প্রাণটা দিয়ে দিলে কিন্তু ষোলো আনাই মাটি। বাংলাদেশে আগুন নিয়ে খেলা শুরু হয়ে গেছে। আপনার পেছনেই হয়তো রয়েছে ঘাতক। তাই সাবধান!

 

কমেন্ট বক্স