চ্যাটজিপিটি উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর আবার নাটকীয়ভাবে প্রতিষ্ঠানটিতে স্বপদে ফিরেছেন স্যাম অল্টম্যান। ফেরার পরদিন বুধবার একজন ছাড়া পুরো পরিচালনা পর্ষদকে বরখাস্ত করেছেন তিনি। পরিচালনা পর্ষদের একজন শুধু টিকে গেছেন। তিনি হলেন কুয়োরার সিইও অ্যাডাম ডি অ্যাঞ্জেলো।
তিনি চ্যাটজিপিটি নির্মাতা সাবেক সেলসফোর্স সহ-সিইও ব্রেট টেলরকে চেয়ারম্যান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক অর্থমন্ত্রী ল্যারি সামার্স ও অ্যাডাম ডি অ্যাঞ্জেলোকে পরিচালক হিসেবে নিয়ে একটি নতুন প্রাথমিক বোর্ড গঠন করেছেন।
স্যাম অল্টম্যানকে চাকরিচ্যুত করার পর মাইক্রোসফটে তাকে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রতিষ্টিানটির সিইও সত্য নাদেলা। আর ওপেনএআইয়ের ৭ শতাধিক কর্মী পরিচালনা পর্ষদকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, অল্টম্যানকে চাকরিতে পুনর্বহাল না করলে তারাও চাকরি ছেড়ে দেবেন। এ ঘটনার পর তাকে সিইও পদে আবারও ফিরিয়ে আনে ওপেনএআই।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সক্ষমতা নিয়ে আস্থার ঘাটতির কারণ দেখিয়ে ৩৮ বছর বয়সী অল্টম্যানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল শুক্রবার। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা বোর্ড জানিয়েছিল, অল্টম্যানের অবদানের জন্য তারা কৃতজ্ঞ। তবে তারা বিশ্বাস করেন যে, নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। ওপেনএআই বিবৃতিতে বলেছিল, ওপেনএআইকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে স্যামের সক্ষমতা নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের আস্থার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তিনি পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে খোলাখুলি যোগাযোগ করছিলেন না, একটা দূরত্ব রেখেছিলেন। যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে তাকে চাকরিচ্যুতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওপেনএআইয়ের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) মিরা মুরাতিকে।
চাকরি হারানোর পর শুক্রবার এক বিবৃতিতে স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছিলেন, তিনি কোম্পানিতে যে সময়টুকু কাজ করেছেন তা উপভোগ করেছেন।
বছরখানেক আগে চ্যাটজিপিটি বাজারে এনে প্রযুক্তিজগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে বড় ধরনের প্রতিযোগিতার সূচনা করেছিলেন স্যাম অল্টম্যান। এরপর মেটা, মাইক্রোসফট, গুগল ও অ্যামাজনের মতো অতিকায় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করাশোনা করা স্যামের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরিতে। এই প্রযুক্তি চালুর পর ধীরে ধীরে মানুষের জায়গা নিচ্ছে চ্যাটজিপিটি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল মাইক্রোসফটের চ্যাটজিপিটি ধীরে ধীরে মানুষের জায়গা নেবে, কাজ হারাবে বহু মানুষ। ইতিমধ্যেই বহু কোম্পানি কর্মীর পরিবর্তে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করতে শুরু করেছে। হাজার হাজার ডলার অর্থ সাশ্রয় করছে। ফরচুনের প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, যেসব কোম্পানি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছে, তারা প্রায় ৪৮ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় করছে।
কম্পিউটার অ্যালগরিদম আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের জীবনে ক্রমবর্ধমানভাবে সংযুক্ত হচ্ছে। অনলাইনে প্রদর্শিত বিষয়বস্তু বেছে নেওয়া, আমরা যে সঙ্গীত শুনি তা দেখিয়ে দেয় ও মানুষের প্রশ্নের সদুত্তর দেয়। মূলত চ্যাটজিপিটি একটি শক্তিশালী মেশিন লার্নিং মডেল। কোনো ভাষা ইনপুট হিসেবে দিলে চ্যাটজিপিটি তা বুঝতে পারে এবং সেই কথার প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারে।
ঠিকানা/এসআর