মার্কিন বিচার বিভাগের তথ্য অনুসারে, নিজস্ব ওয়েবসাইটে নিয়মিতই অন্যান্য পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলেও ‘পার্ম (পার্মানেন্ট লেবার সার্টিফিকেশন)’ নামে পরিচিত ওই ফেডারেল প্রকল্পে চাকরির কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি অ্যাপল। কয়েকটি নির্দিষ্ট পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মার্কিন নাগরিক ও গ্রিন কার্ডধারীদের চেয়ে অভিবাসীদের বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে অ্যাপল, এমন এক মামলা আড়াই কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়ে নিষ্পত্তি করছে মার্কিন টেক জায়ান্টটি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে এ পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছে অ্যাপল বলে ওই বিভাগের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, একটি ফেডারেল প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগ দেয়নি অ্যাপল। এর বদলে কোম্পানির কর্মকর্তারা অভিবাসী কর্মীদেরকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন যাতে তারা গ্রিন কার্ড পাওয়ার আবেদন করতে পারেন। নাগরিকতার বিষয়টি বিবেচনায় নিলে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইনের লঙ্ঘন।
বিচার বিভাগ আরও বলেছে, নাগরিকত্বের ভিত্তিতে এটি তাদের মামলা নিষ্পত্তির সবচেয়ে বড় ঘটনা, যেখানে নাগরিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে অ্যাপলকে পরিশোধ করতে হবে সাড়ে ৬৭ লাখ ডলার। আর ভুক্তভোগী কর্মীদের ক্ষতিপূরণ বাবদ দিতে হবে আরও এক কোটি সাড়ে ৮২ লাখ ডলার।
অ্যাপল এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘নিজেদের অজান্তেই’ বিচার বিভাগের মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছে।
“মার্কিন কর্মী নিয়োগ ও যুক্তরাষ্ট্রে নিজস্ব বিস্তৃতি বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রয়োজনীয় শর্তগুলো মেনে চলার উদ্দেশ্যে আমরা একটি শক্তিশালী প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি,” বলেছে কোম্পানিটি।
মার্কিন বিচার বিভাগের তথ্য অনুসারে, নিজস্ব ওয়েবসাইটে নিয়মিতই অন্যান্য পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিলেও ‘পার্ম (পার্মানেন্ট লেবার সার্টিফিকেশন)’ নামে পরিচিত ওই ফেডারেল প্রকল্পে চাকরির কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি অ্যাপল।
সংস্থাটি আরও বলেছে, কোম্পানিটি সাধারণত ডিজিটাল উপায়ে আবেদনের সুযোগ দিলেও এ প্রকল্পের বিভিন্ন চাকরির জন্য আবেদনকারীদের কাগজে আবেদন করার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। “এমন পদ্ধতি অবলম্বন করায় ‘পার্ম’ প্রকল্পের বিভিন্ন পদে একেবারে কম বা শূন্য চাকরির আবেদন দেখা গেছে।”
অ্যাপলের কোন চাকরিগুলো এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেছে বা এতে কোম্পানির লাভ হয়েছে কি না, তা পরিষ্কার করেনি বিচার বিভাগ।
রয়টার্স বলছে, মার্কিন কর্মীর তুলনায় বিদেশি কর্মী নিয়োগ দেওয়া সাশ্রয়ী হতে পারে। যেসব অভিবাসী গ্রিন কার্ড স্পনসরশিপের জন্য বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভর করেন, তাদের এ ধরনের চাকরি ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।
এ রায়ের পর অর্থ পরিশোধের পাশাপাশি পার্ম প্রকল্পের বিভিন্ন চাকরিও কোম্পানির স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসতে রাজি হয়েছে টেক জায়ান্টটি। মামলাটির নিষ্পত্তির রায় অনুসারে, কোম্পানিটি এখন থেকে আরও বিস্তৃত পরিসরে নিয়োগ দেবে এবং কর্মীদেরকে বৈষম্যবিরোধী আইনগুলো সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেবে।
ঠিকানা/এসআর