Thikana News
০৬ জুলাই ২০২৪
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন : পর্দার আড়ালে কূটনীতি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন : পর্দার আড়ালে কূটনীতি
নির্বাচন এলেই বাঙালিদের রক্তে যেন দোলা লাগে। সে তৃণমূল পর্যায়ে হোক, আর জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ নির্বাচন হোক। বাংলাদেশিদের কাছে কোনো নির্বাচনই সাধারণ নয়। সব নির্বাচনই অসাধারণ। তবে তৃণমূল বা স্থানীয় নির্বাচনে কেবল তৃণমূল এবং স্থানীয় লোকজনের মধ্যেই উৎসাহ, উদ্দীপনা, উত্তাপ সীমাবদ্ধ থাকে। জাতীয় নির্বাচন জাতীয় পর্যায়ে শুধু নয়, জাতীয় পর্যায় ছেড়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নড়াচড়া শুরু হয়ে যায় নির্বাচন এলেই। বিশ্ব মোড়লদের দারুণ আগ্রহ লক্ষ করা যায় বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে। ছোটাছুটিও করে এ-দল ও-দলের অফিসে।

বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে। খুব সম্ভবত ২০২৪-এর জানুয়ারিতে। আমেরিকা, চীন এবং আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী ভারতের কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদেরও বাংলাদেশে ছোটাছুটি শুরু করতে দেখা যাচ্ছে। রাশিয়ার ছোটাছুটি খুব একটা চোখে না পড়লেও তারাও নজর রাখছে বলে জানা যাচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্বের কারণে বাংলাদেশকে নিয়ে সবার এত মাতামাতি।

এবারও তার ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে না। উল্লিখিত তিন দেশেরই গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সফর করে ফেলেছেন। আগামীতে নির্বাচন যত কাছে আসবে, তাদের ছোটাছুটি বৃদ্ধি পাবে বলে রাজনীতি-অভিজ্ঞরা মনে করছেন। বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় চোখ রাখলেও সেটা নজরে পড়ে। ঠিকানার গত ২২ ফেব্রুয়ারি, ৩৩তম বর্ষপূর্তি সংখ্যার, একটি গুরুত্বপূর্ণ খবরে সে রকম আভাসই মেলে। ‘পর্দার আড়ালে কূটনীতির স্নায়ুযুদ্ধ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে সেই গন্ধই পাওয়া যায়। খবরটিতে বলা হয়েছে, ‘দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলো নানা বার্তা দিচ্ছে বাংলাদেশকে। সরকার ও বিশেষ ব্যক্তিদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করছে প্রভাবশালী দেশগুলো। দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে পর্দার আড়ালে কূটনীতিতে চলছে স্নায়ুযুদ্ধ। সরকারি দল আওয়ামী লীগের প্রত্যাশা কূটনীতিতে ভুল-বোঝাবুঝির অবসান হবে। বিএনপি মনে করছে, নির্বাচন সামনে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য প্রভাবশালী দেশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের অবনতি ঘটছে।

বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং উচ্চ পর্যায়ের রাজনীতিকদের ঢাকা সফরের বহর দেখে বাংলাদেশের নির্বাচনে বিদেশিদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত, জাপানসহ আরো অনেক দেশই আছে সফরের তালিকায়। আওয়ামী লীগ এ রকম ইঙ্গিত দিয়েছে, চলতি বছরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচন হয়ে যেতে পারে। তাই কূটনৈতিক অঙ্গনেও চলছে নির্বাচনী হাওয়া।’

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন দূরে থাক, অনেক ব্যাপারেই বিদেশিদের হস্তক্ষেপ করার অভ্যাস অনেক পুরোনো ব্যাপার। বড় বড় দেশের এসব বড় বড় বিষয় সাধারণ মানুষের পক্ষে বোধগম্য নয়। সাধারণ মানুষ শুধু বোঝে দেশ। দেশের ভালো, দেশের মানুষের কল্যাণ হোক-এটাই তাদের কামনা। তারা বুকের রক্ত দিয়ে মা-বাবা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী হারিয়ে স্বাধীন একটা দেশ পেয়েছে। সেই দেশটা ভালো থাক, দেশের মানুষ ভালো থাক। নির্বাচন নিয়ে তাদের অত মাথাব্যথা নেই। কে রাজা-উজির হলো-সে নিয়েও তাদের কোনো ভাবনা নেই। তারা চায় শান্তি। কাজের নিশ্চয়তা। শান্তিতে ঘুম। তারা চায় দেশটা যেন নির্বাচন নিয়ে অশান্ত হয়ে না ওঠে। দেশটা যেন আবার পাকিস্তান হয়ে না যায়। সবার কামনা, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হোক। স্বাধীন দেশের মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে থাক। যে স্বপ্ন নিয়ে এত মানুষ জীবন দিল, এত মা-বোন সম্ভ্রম হারাল, সেই স্বপ্ন পূরণ হোক।

 

কমেন্ট বক্স