বস্টন প্রতিনিধি
বাংলাদেশি প্রবাসীদের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনে আয়োজিত ভ্রাম্যমাণ পাসপোর্ট সেবাকে ঘিরে দেখা দিয়েছে তীব্র বিতর্ক ও ক্ষোভ। দীর্ঘদিনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান NEBAF Inc. (New England Bangladeshi American Foundation Inc.)-এর নির্ধারিত আয়োজন বাতিল করে কনস্যুলেট কর্তৃপক্ষ একই স্থানে BANE (Bangladesh Association of New England)-এর ব্যানারে টানা দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি আয়োজন করায় প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে NEBAF Inc. বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসের সহযোগিতায় বস্টনে ভ্রাম্যমাণ পাসপোর্ট সেবা আয়োজন করে আসছে। প্রবাসীদের এই উদ্যোগ সর্বদা ছিল অরাজনৈতিক ও ঐক্যের প্রতীক। কিন্তু এবার সরকারি কর্তৃপক্ষের একতরফা সিদ্ধান্তে NEBAF-এর নির্ধারিত সময়সূচি বাতিল করে একই স্থানে BANE-এর নামে দুই দিনব্যাপী নতুন আয়োজন ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনাকে প্রবাসীরা দেখছেন সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার ও অরাজনৈতিক সংগঠনের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে।
NEBAF Inc.-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান নাহিদ সিতারা (নাহিদ নজরুল) বলেন, বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে প্রবাসীরা মাতৃভূমিকে সমৃদ্ধ করছেন। তাদের অবদান কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের নয়, এটি নিখাদ দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধের প্রকাশ। অথচ কিছু রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠাচার প্রবাসীদের সম্মান ও অধিকারে আঘাত হেনেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিস ১১ অক্টোবর BANE-এর কার্যক্রম চালু করে এবং ১২ অক্টোবরের NEBAF-এর পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান হঠাৎ বাতিল করে দেয়। এরপর একই স্থানে টানা দুই দিন BANE-এর আয়োজন করা হয়েছে—যা স্পষ্টভাবে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার।
নাহিদ সিতারা অভিযোগ করেন, আমি নিজে BANE-এর স্থায়ী আজীবন সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষী। তবু যদি কেউ বা কারা NEBAF Inc.-এর আয়োজন বাতিলের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকে, প্রবাসীদের পক্ষ থেকে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব, ইনশা-আল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো গণতান্ত্রিক দেশে এমন নোংরা রাজনীতি প্রবাসী সমাজে বিভাজন তৈরি করছে—যা লজ্জাজনক এবং দেশপ্রেমের পরিপন্থী।
নাহিদ সিতারা আহ্বান জানান, NEBAF Inc. একটি স্বাধীনতা-মনস্ক, দেশপ্রেমিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন। সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হচ্ছে প্রবাসীদের সেবা দেওয়া—কোনো নির্দিষ্ট সংগঠনের নির্দেশে নয়। লজ্জিত দেশ ও জাতি—সাময়িক রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য নয়, বরং চিরস্থায়ী দেশপ্রেমের জন্য কাজ করতে হবে।
এই ঘটনাটি কেবল একটি প্রবাসী সেবা কর্মসূচির বিষয় নয়; এটি সরকারি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ববোধ, প্রবাসীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ন্যায্যতার প্রশ্নও উত্থাপন করেছে। বস্টনের এই ঘটনায় যে ক্ষোভ ও বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে, তা দ্রুত নিরসন না হলে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বাংলাদেশি প্রবাসী সমাজে।
ঠিকানা/এনআই