Thikana News
০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কার নেতৃত্বে কাদের নিয়ে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার

কার নেতৃত্বে কাদের নিয়ে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ছাড়াও নাগরিক ঐক্য, এবি পার্টি, বিজেপি, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ ছোট-বড় সব দলই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছে। কেউ কেউ জাতীয় সরকার গঠন এবং সেই সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করেছেন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা রোজার ঈদের পর, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ কিংবা যখনই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হোক, সে নির্বাচন হবে প্রস্তাবিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। কীভাবে, কার নেতৃত্বে এবং কাদের সমন্বয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে, তা-ও স্থির করা হচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীই প্রথম বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব করেছিল। প্রস্তাবটি এসেছিল জামায়াতের সাবেক আমির মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযমের কাছ থেকে। সে সময়ে প্রবর্তিত গঠনপদ্ধতিতে পরিবর্তন আসছে। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার বিধান ছিল তাতে। ওই প্রধান বিচারপতি সম্মত না হলে তার পূর্ববর্তী সর্বশেষ প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করার বিধান করা হয়। বিচার বিভাগকে সম্পৃক্ত করে তত্ত্বাবধায়ক পূর্বে প্রবর্তিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থায় কিছু সংযোজন, বিয়োজনের প্রস্তাব রয়েছে। সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ছাড়াও আপিল বিভাগের বাইরের কাউকে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বরেণ্য একজনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগ করা যাবে। একইভাবে বিচার বিভাগ, আইনজ্ঞ, দেশি-বিদেশি এনজিও ব্যক্তিত্ব, পেশাজীবী বেসাময়িক, সামরিক অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের সমন্বয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হবে। অপরিহার্য শর্ত হচ্ছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চাওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্ধারিত নিয়মের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান ও সদস্যদের নামের প্রস্তাব গোপনে লিখিতভাবে দিতে হবে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধানদের নামও প্রস্তাব করা যাবে। যাদের নাম অধিকাংশ বা সংখ্যাগরিষ্ঠদের প্রস্তাবে থাকবে, তারাই নিয়োগের জন্য বিবেচিত হবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর নামের তালিকা সংগ্রহ, যাচাইসহ প্রাসঙ্গিক কাজগুলো করার জন্য কমিটি থাকবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারপদ্ধতি প্রবর্তনের বিষয়টি সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে অনুমোদন ও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যেসব সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে, তার অন্যতম এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা। শেখ হাসিনা সরকার দেশবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য ও প্রশংসনীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করেছিল। ক্ষমতা দীর্ঘ মেয়াদে নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করেছিলেন। আওয়ামী লীগ বাদে অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো কিছু শর্ত, পরিবর্তন, সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন সাপেক্ষে পুরোনো ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পক্ষে। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতা নুরুল হক নুর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থলে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব করেছেন। তিনি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বেই জাতীয় সরকার গঠন এবং এই সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। নাগরিক ঐক্য, এবি পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান পদে রেখেই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তনের পক্ষে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা নিঃসন্দেহে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তবে কমিশন রাজনৈতিক সমস্যার গ্রহণযোগ্য বাস্তবভিত্তিক সমাধান দিতে পারেনি। বরং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনেক বিষয়ে বিরোধ বাড়িয়েছে। অর্থ ও সময় ব্যয়ে কমিশন যেসব সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে, আগামীতে সেগুলো আইনগত সাংবিধানিক বৈধতা পাবে, তার নিশ্চয়তা নেই।

কমেন্ট বক্স