Thikana News
০৮ অগাস্ট ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫
ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে আলোচনা

একাত্তরের বিপরীতে চব্বিশকে চায় জামায়াত-শিবির: মেঘমল্লার বসু

একাত্তরের বিপরীতে চব্বিশকে চায় জামায়াত-শিবির: মেঘমল্লার বসু
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে দাঁড় করাতে চাইছে জামায়াত-শিবির। এটা কাকতালীয় নয়, পরিকল্পিতভাবেই চায় তারা। তাই সম্প্রতি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে, সেই আয়োজনকে একাত্তরের সাতই মার্চের সমাবেশের চেয়েও বড় দাবি করেছেন একজন জামায়াত নেতা। এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু।

৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন টকশোতে এসে মেঘমল্লার আরো বললেন, ‘জুলাই আন্দোলনের পর আমরা পুরনো বিবাদ ধরে রাখতে চাই না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না- এটা আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান। কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধকে আক্রমণ করে, তাহলে আমরা তা সমর্থন করতে পারি না।’

এই আলোচনা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো ছিলেন জবান-এর সম্পাদক ও চিন্তক রেজাউল করিম রনি। নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) টকশোটি সরাসরি দেখা গেছে ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন ইউটিউব চ্যানেলে। দেশের বাম, ডান, মধ্যপন্থার রাজনীতি; গণতন্ত্র চর্চা, ইতিহাসের বয়ান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান- এসব নিয়ে ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন দুই অতিথি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান ভুল ছিল- এ বিষয়ে একমত হন জবান-এর সম্পাদক ও চিন্তক রেজাউল করিম রনি। তবে তিনি যুক্ত করেন, ‘জামায়াত-শিবির ইতিহাসের ভুল জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি রাজনীতি করতে চায়, এটা সে করতেই পারে। অন্য কেউ বাধা দিতে পারে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে, সে জামায়াতের রাজনীতি গ্রহণ করবে কি না। একটা সমাজে আগে এই সহনশীলতা তৈরি হতে হবে, তারপর আসবে গণতন্ত্রের প্রশ্ন।’

“জামায়াতের জন্য একাত্তর বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। এটা নিয়ে সঠিক অবস্থান না নিলে তাদের পতন হবেই। আবার এটাও ঠিক রাজাকার একাত্তরে ছিল ঘৃণিত শব্দ। কিন্তু চব্বিশে সেটাই আবার মুক্তির স্লোগান”, বলেন রেজাউল করিম রনি।

জুলাই আন্দোলনে শেখ হাসিনা ‘রাজাকার’ শব্দটি বলায় শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিবাদ করে, এটি ঘৃণিত একটি শব্দ বলেই, এভাবেও বিষয়টি বিশ্লেষণ করার সুযোগ আছে- মন্তব্য করেন টকশোর সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন।

তবে চিন্তক রেজাউল করিম রনি মনে করেন, রাজাকার শব্দটি ঘৃণিত, এটা যেমন ঠিক। আবার কোনো শব্দের ব্যবহার পরিবর্তনও হতে পারে। এটা সত্য যে, যারা একাত্তরে ভুল অবস্থানে ছিল, তাদের স্থান ইতিহাসে নির্ধারিত।

বামপন্থা ও জামায়াতের রাজনীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, দুই ধারাই আসলে আদর্শিক শক্তি। যা দ্রুত ফ্যাসিবাদের দিকে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। বামপন্থীরা রাষ্ট্রব্যবস্থাই বিশ্বাস করে না। অন্যদিকে জামায়াত রাজনীতি করে ইসলামী আন্দোলনের কথা বলে। তার মানে তারা ক্ষমতায় গেলে খেলাফত কায়েম করবে।

জনপ্রিয় রাজনৈতিক ভাষ্যকার রেজাউল করিম রনি দাবি করেন, ভারতীয় বা আওয়ামী বয়ানের বিপরীতে বামপন্থীরা মুক্তিযুদ্ধের জনবয়ান কায়েমের চেষ্টা কখনো করেনি। তারা গণমানুষের কথা বললেও সবসময় গণবিরোধী ছিল। আবার পুঁজিবাদবিরোধী কথা বলে অবস্থান নিয়েছে পুঁজিবাদীদের পক্ষে- এভাবে দেশে বাম রাজনীতির ব্যর্থতার দিক তুলে ধরলেন তিনি।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর বাংলাদেশে বামরাজীনিতে স্থবিরতা নেমে আসে। সেই পুরনো পন্থার রাজনীতি এখনো চলছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মেঘমল্লার বসু। তিনি বলেন, চব্বিশের আন্দোলনের পর অনেক তরুণ উঠে এসেছে। সেখান থেকে তরুণদের একটি অংশ বাম রাজনীতিতে আসতে পারে। তাই বামপন্থার জন্য নতুন সম্ভাবনাও রয়েছে, বলছেন তিনি।

ঠিকানা/এসআর

কমেন্ট বক্স