Thikana News
১০ মে ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা শনিবার, ১০ মে ২০২৫

 আতঙ্কে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না ভিসা বাতিল হওয়া স্টুডেন্টরা

 আতঙ্কে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না ভিসা বাতিল হওয়া স্টুডেন্টরা সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে আসা কিছু স্টুডেন্টের ভিসা সম্প্রতি বাতিল হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এর মধ্যে অনেক বাংলাদেশি স্টুডেন্টও রয়েছেন। একাধিক সূত্র বলছে, যেসব স্টুডেন্টের সেভিল বাতিল হয়েছে, ভিসা বাতিল করা হয়েছে, তারা এখন আর ক্যাম্পাসে যেতে পারবেন না। যাদের ভিসা বাতিল হয়েছে, তাদেরকে নিজ নিজ কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানানো হচ্ছে যে তার ভিসা বাতিল হয়েছে। তারা কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইলেও আর যেতে পারছেন না। যেসব স্টুডেন্টের ভিসা বাতিল হয়েছে, তারা আতঙ্কে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তাদেরকে আইনি কোনো সহায়তার প্রয়োজন হলে আইনজীবীর নাম ও নাম্বার দেওয়া হচ্ছে কথা বলার জন্য। কারণ যেসব স্টুডেন্টের ভিসা বাতিল হয়েছে, তাদের বিষয়ে তার কলেজ কিংবা বিশ্ববিদালয়ের করার তেমন কিছু নেই।
ভিসা বাতিল হওয়ার কারণে অন্যান্য স্টুডেন্টের মধ্যেও ভীতি তৈরি হয়েছে। যারা এখানে আসার পর কোনো দিন আইন ভঙ্গ করেননি, নিয়মের বাইরে যাননি, তারা নিশ্চিত থাকছেন। তবে যারা কোনো না কোনো সময়ে নিয়ম ভঙ্গ করেছেন, তারা ভয়ে আছেন। ট্রাম্প প্রশাসন কড়াকড়ি করার পর অনেক স্টুডেন্ট ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ও সেভিস বাতিল করা হয়েছে, তারা ইমিগ্রেশনে কোনো ধরনের স্ট্যাটাস না থাকলে এখানে থাকতে পারবেন না। এ দেশে তাকে ডিপোর্ট করার সিদ্ধান্ত হলে তাকে ডিপোর্ট করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সূত্র জানায়, ভিসা বাতিল হওয়া স্টুডেন্টরা পড়েছেন উভয় সংকটে। একদিকে তারা লেখাপড়া শেষ করতে না পারায় কোনো সার্টিফিকেট বা ডিগ্রি পাবেন না, অন্যদিকে যে অর্থ খরচ করেছেন তাও ফেরত পাবেন না। ফলে দুই কূলই হারাতে যাচ্ছেন তারা। এই অবস্থায় তারা শেষ চেষ্টা হিসেবে এখানে আইনি লড়াই করে থাকার চেষ্টা করছেন, যাতে লেখাপড়া শেষ করে অন্তত সার্টিফিকেট বা ডিগ্রিটা নিতে পারেন। আইনি লড়াইয়ে হেরে গেলে আর কোনো উপায় থাকবে না, দেশে ফিরতে হবে। এখন এখানে থেকে জীবন চালিয়ে নেওয়াই মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র জানায়, নিয়ম হচ্ছে একজন স্টুডেন্ট এ দেশে পড়ালেখার পাশাপাশি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় অনুমতি দিলে তার সোশ্যাল সিকিউরিটির আবেদন করা হবে এবং কাজের অনুমতি মিললে তখন তিনি কাজ করতে পারবেন। তিনি কোথায় কোথায় কাজ করতে পারবেন, সেটিও কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেবে। সে হিসেবে নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে অথবা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কাজ করতে পারবেন। তা কোনোভাবেই ২০ ঘণ্টার বেশি হবে না। অনেক ক্ষেত্রেই স্টুডেন্টরা এই নিয়ম মানেন না। উল্টো তারা বিনা অনুমতিতে ও কাজ করা যাবে না জানার পরও ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। কেউ কেউ একাধিক কাজ করেন। ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হওয়ার পরও অনেকে লুকিয়ে লুকিয়ে ফুল টাইম জব করেন। এমনও আছে, অনেক ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট এখান থেকে দেশে তার পরিবার-পরিজনের জন্য অর্থ পাঠান। স্টুডেন্টরা লুকিয়ে কাজ করতে গিয়ে কর্মস্থলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আইনি জটিলতায় পড়তে পারেন বা মামলায় পড়তে পারেন। সেসব ক্ষেত্রে স্টুডেন্টটির বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, অনেক সময় স্টুডেন্টরা শর্ট লিফটিং করেন, মারামারিতে জড়ান, অন্য মানুষের ফোন হ্যাক করে ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালান। অনেক সময় ক্যাম্পাসেও নানা কর্মকাণ্ড করার কারণে স্টুডেন্টরা সমস্যায় পড়েন। নানা কারণেই একজন স্টুডেন্টের ভিসা বাতিল হতে পারে। নিয়ম হচ্ছে একজন ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট এখানে আসার পর আমেরিকার নিয়মকানুন মানবেন। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারের কাজের বিরোধিতা করতে পারবেন না বা সরকারবিরোধী আন্দোলনও করতে পারবেন না। ফিলিস্তিনের পক্ষে যারা আমেরিকান সরকারের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন, তাদের অনেকের নামই তালিকায় রয়েছে। এগুলো কেস বাই কেস দেখেই স্টুডেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আবার কেউ কেউ এ দেশে বিয়ের মাধ্যমে গ্রিনকার্ড ও সিটিজেনশিপ পাওয়ার চেষ্টা করেন। এসব ক্ষেত্রে কেউ কেউ বিপদে পড়েন।

কমেন্ট বক্স