দক্ষিণে আরো দখিনায় চোখ মেলে দেখ
মেঘনার চর ছাড়িয়ে
যেখানে পলি এসে জমা হয়
বঙ্গোপসাগরের মুখে,
বেড়ে উঠছে নতুন ভূখণ্ড
জলসিক্ত-উর্বর, উদাম,
বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া ছেলেটির মতোই
উদ্ধত কিন্তু সম্ভাবনাময়।
উত্তাল তরঙ্গে
সূর্যের আলোয় চিকচিক করে ঢেউ,
স্রোতের বেগ সামলে
ইলিশের নৌকাগুলো দুলছে,
হয়তো কোনো নৌকার গলুইয়ের ভেতর
কলাপাতা রং আঁচলে ঘোমটা তুলে
বসে আছে জেলে-বউ-চুপচাপ
বুনো হাঁসের মতো সতর্ক।
দূরে চরের জমিনে
সবুজ থেকে সোনালি হয়ে ওঠা ধানের শীষ
বাতাসে গন্ধ ছড়ায়;
আর এদিকে-ঢলে পড়া দুপুর রোদে
শ্রম আর ঘামের মিলন শেষে
তামাটে বর্ণের দেহগুলো শুয়ে আছে,
গায়ের গামছা বিছিয়ে
মেঠো পথের ধারে নিশ্চিন্তে,
পেশিবহুল ক্লান্ত শরীরে
শান্তির উপকরণ হয়ে নেমে আসে ঘুম।
কাশবন পেরিয়ে-পায়ে কাদা মেখে
আরো সামনে এগোলেই দেখবে
পরিচিত মানুষ-নারী, শিশু, মুরব্বি
কৃষকের আটচালা ঘর, লাউয়ের মাচা
কুমড়ার ফুল, উঠানের ডালিম গাছ,
উড়ে যাওয়া সাদা বকের ঝাঁক;
দক্ষিণ এশিয়ার বুক ছুঁয়ে দেখ
জেগে উঠছে আরেক বাংলাদেশ,
নতুন কিন্তু চিরন্তন।