Thikana News
২৪ এপ্রিল ২০২৫
  1. ই-পেপার
  2. চলতি সংখ্যা
  3. বিশেষ সংখ্যা
  4. প্রধান সংবাদ
  5. আমেরিকার অন্দরে
  6. বিশ্বচরাচর
আমেরিকা বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

তুলসী গ্যাবার্ডের ভারত সফর, তুলকালাম বাংলাদেশজুড়ে

তুলসী গ্যাবার্ডের ভারত সফর, তুলকালাম বাংলাদেশজুড়ে
তুলসী গ্যাবার্ড যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন নারী। তবে নারী হিসেবে বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। তিনি নারী না পুরুষ, সেটা বিবেচ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাপ্রধান বললেই তার মাপ বুঝতে পারা যায়। ভারতের সঙ্গে তার একটা রক্তের বন্ধন আছে। নিকটবর্তী না দূরবর্তী, সেটাও বড় কথা নয়। এই তুলসী গ্যাবার্ড সম্প্রতি ভারত সফরে গিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন, যাকে কেন্দ্র করে বিরাট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ তুলসী গ্যাবার্ডের সেসব মন্তব্য সহজভাবে নেয়নি। নেওয়ার কথাও নয়। কারণ তুলসী গ্যাবার্ডের সেসব মন্তব্যে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি দেশে ও বিদেশে ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে বাংলাদেশ তার তীব্র প্রতিবাদও জানিয়েছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, হত্যা এবং ইসলামি সন্ত্রাসীদের হুমকি রয়েছে বলে তুলসী গ্যাবার্ড মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, এসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করে। তিনি একাধিক টিভি চ্যানেলে সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞাসিত একটি প্রশ্নের জবাবে উল্লেখ করেছেন, বিশেষভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদীরা বিভিন্ন দেশে ইসলামি খেলাফতের আদর্শে শাসনক্ষমতা হাতে নিতে চায়। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসন এই আদর্শকে পরাস্ত করতে চায়।’ তিনি বলেন, ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদের বিপদ বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করছে।

খুব সংগত কারণেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তুলসী গ্যাবার্ডের এসব কথার কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। অত্যন্ত কঠোর ভাষায় তুলসী গ্যাবার্ডের এসব কথার প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ থেকে বলা হয়, ‘কারও এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক নয়, যা ক্ষতিকর ধারণাকে শক্তিশালী করে, ভয় উসকে দেয় এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়।’ বাংলাদেশ তার প্রতিবাদে আরও বলে, তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য অবশ্যই সঠিক নয়। তার বক্তব্য অন্য কোনো পক্ষের ব্রিফ করা। তাই এ বক্তব্য বস্তুনিষ্ঠ নয়। অনেকটাই মনগড়া, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

এখানে একটি কথা বলা বোধ করি খুব বেশি অপ্রাসঙ্গিক হবে না, ভারত আমাদের একটি বৃহৎ এবং সর্বনিকটবর্তী প্রতিবেশী। আবার এ কথাও অস্বীকার করা যাবে না, বাংলাদেশও ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। এ দুটি দেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অবস্থান করতে পারলে দুই দেশই ভালো থাকবে এবং বহিঃশত্রু থেকে তত নিরাপদ থাকবে বলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক-বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের অভিমত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সুসম্পর্ক লক্ষ করা যায় না। এ জন্য অনেকেই বলেছেন, দুই দেশের সরকার ও জনগণের দৃষ্টিভঙ্গিগত কারণে দু’দেশ কখনো দু’দেশের আস্থাভাজন হতে পারেনি। কখনো কখনো কোনো কোনো সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের সুসম্পর্ক লক্ষ করা গেলেও দুই দেশের জনগণ খুব বেশি ঘনিষ্ঠ এবং একে অপরের আস্থাভাজন হয়ে উঠতে পারেনি।

৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ফাটল আরও প্রশস্ত হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে প্রায়ই বলতে শোনা যায়, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে। কিন্তু মানুষের ধারণা, এটা কেবলই কূটনৈতিক বক্তব্য। প্রকৃত বাস্তবে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকার কারণ দেখা যায় না। বিশেষ করে, ৫ আগস্ট ২০২৪-এ গণ-অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে এ অবস্থার অবনতি লক্ষ করা যায়।

কমেন্ট বক্স