বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী ও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের দাবি তুলেছে। সংস্কারসমূহ সম্পন্ন হওয়ার পরই তারা সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। তাদের এই কর্মপরিকল্পনার কথা বিশেষ বিবেচনায় রেখে সরকারের উচ্চতর পর্যায় থেকে ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুলাইয়ের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।
এনসিপি ও জামায়াত নির্বাচন যতটা সম্ভব প্রলম্বিত করতে চায়। এই সময়ের মধ্যে তারা সংগঠন গড়ে তোলা ও রাজনৈতিকভাবে অপেক্ষাকৃত সংহত শক্তিশালী অবস্থান করে নিতে সচেষ্ট। এ ব্যাপারে এনসিপি, জামায়াতে ইসলামী ও বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন পারস্পরিক সমঝোতায় এসেছে। তাদের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ সৃষ্টি করা। তার আগে তারা সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিগত সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, এমপিদের বিচার ও দণ্ড নিশ্চিত করা। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তরের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে ভারত সরকারের প্রতি লিখিত অনুরোধ জানিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, বিগত দুই মেয়াদের এমপি, প্রভাবশালী নেতাসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী, এমপিসহ আট শতাধিক নেতা, নেতৃস্থানীয়দের নাম উল্লেখ করে বাংলাদেশের ভারতীয় কমিশন ও নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারত সরকারের কাছে ফেরত চাওয়া হয়েছে। এদেরকে বিভিন্ন মামলার আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। তবে ভারত সরকারের কাছে তাদের দাবি উপেক্ষিত হয়েছে। জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের এসব নেতা নিরাপত্তার স্বার্থে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন। কিছুদিন নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও তারা যথাযথ প্রক্রিয়ায় বর্ডার ত্যাগ করেন। অধিকাংশই আছেন কলকাতায়। অনেকে আসাম-ত্রিপুরা সীমান্ত হয়ে ভারতে যান। আওয়ামী লীগের অন্তত ৮০০ সাবেক মন্ত্রী, এমপি, নেতা ভারত সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। অনেকে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। মানবিক কারণে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের সেখানে সাময়িক অবস্থানের সুযোগ দিয়েছে। সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া নেতারা ছাড়াও দেশের মধ্যেই কয়েকশ নেতা, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি নিরাপদ আশ্রয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।